জামুই, 11 মার্চ: দেখে কে বলবে এটা স্কুলের শ্রেণিকক্ষ ৷ খাট, আলমারি, রান্নার গ্যাস - কী নেই এখানে ! ক্লাসরুমকে পুরোদস্তুর বেডরুম বানিয়ে ফেলেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৷ ফলে স্কুলের বাকি মাত্র দুটো ঘরেই কোনওক্রমে পাঠদান করা হচ্ছে 134 জন পড়ুয়াকে ৷ বিহারের জামুইয়ের এই ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসায় শুরু হয়েছে তদন্ত ৷
জামুই জেলার খয়রা ব্লকের প্রত্যন্ত বরদাউন গ্রাম । এখানকারই একটি স্কুলে তিনটি কক্ষ, আর পড়ুয়া রয়েছে 134 জন । তিনটে ঘরে খুব কষ্ট করেই ক্লাস করতে হত পড়ুয়াদের ৷ আপগ্রেডেড মিডল স্কুল বরদাউনের প্রধান শিক্ষিকা তারই মধ্যে একটি ঘর দখল করে সেখানেই বসবাস করছেন ৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত শীলা হেমব্রমের ঘরে গৃহস্থের প্রায় সব জিনিসই রয়েছে ৷ খাট, বিছানা থেকে শুরু করে ফ্রিজ, টিভি, আলমারি, টেবিল, রান্নার গ্যাস, রান্নাঘরের যাবতীয় জিনিসপত্র ঠাসা রয়েছে সেই ঘরে । প্রধান শিক্ষিকা শীলা হেমব্রম তাঁর স্বামীর সঙ্গে সেই ঘরেই থাকেন ।
এই স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় । স্কুলে রয়েছে 134 জন শিশু । তার মধ্যে থেকে প্রতিদিন 50 থেকে 60 জন শিশু পড়তে আসে । বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষের মধ্যে প্রথম কক্ষে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত, দ্বিতীয় কক্ষে চতুর্থ শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এবং তৃতীয় কক্ষে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করানো হত । তবে একটি ঘর প্রধান শিক্ষিকা দখল করে নেওয়ায় এখন দুটি ঘরেই কোনওরকমে চলছে এতগুলো পড়ুয়ার পড়াশোনা ৷
শীলা হেমব্রমের যুক্তি, আগে তিনি জামুই থেকে স্কুলে আসা-যাওয়া করতেন । এখন স্কুলের পাশেই তাঁর বাড়ি তৈরি হচ্ছে । জায়গা না থাকায় তিনি স্কুলের ঘর ব্যবহার করেন । তিনি বলেন, "যাতে স্কুলে বাচ্চাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি - আমি আমার বাড়ির যত্ন নিতে পারি, যা কাছেই তৈরি হচ্ছে । আমার নিজের বাড়ি তৈরি হলেই আমি সেখানে চলে যাব ।"
এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো কয়েকজন গ্রামবাসীর থেকে পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শিক্ষা দফতর ৷ জামুইয়ের জেলাশাসক রাকেশ কুমার জানিয়েছেন, "আমরা নিজেরাও ডিইওর সঙ্গে তদন্ত করতে এখানে পৌঁছেছি ৷ কিন্তু সম্ভবত ওঁরা জানতে পেরে গিয়েছে যে তদন্ত করা হবে । তাই জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে । স্কুলে মাত্র তিনটি কক্ষ রয়েছে । আর শিশুর সংখ্যা 134 জন । শিক্ষিকা নিজেই একটি ঘরে থাকেন ৷ বাচ্চাদের অবশ্যই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় । আমরা এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেব ।"
আরও পড়ুন: