ETV Bharat / state

ফি মকুবের দাবিতে বিক্ষোভ-ভাঙচুর, নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি

author img

By

Published : Sep 3, 2020, 11:08 PM IST

মধ্যমগ্রাম
মধ্যমগ্রাম

ফি মকুবের দাবিতে মধ্যমগ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলে বিক্ষোভ, ভাঙচুর অভিভাবকদের । নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, নিগ্রহের অভিযোগ । উত্তেজনা স্কুল চত্বরে ।

মধ্যমগ্রাম, 3 সেপ্টেম্বর : টিউশন ফি সহ অন্য খাতে ফি মকুবের দাবিতে মধ্যমগ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলে অভিভাবকদের বিক্ষোভ । স্কুল গেট লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে উত্তেজিত অভিভাবকেরা ৷ নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বাধে ধস্তাধস্তি ৷ ভাঙে দেওয়া হয় CCTV ও জানালার কাচ । ঘটনার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় স্কুল চত্বরে । পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থানে যায় মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ ৷ তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় । স্কুলে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ । স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকদের আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করে পুলিশ।

সরকারি হোক বা বেসরকারি । লকডাউনের সময় থেকে বন্ধ রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা । সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে 20 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে । অভিযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও কোরোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন খাতে পড়ুয়াদের থেকে বর্ধিত ফি নেওয়া হচ্ছে । এই অভিযোগেই রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগেও অভিভাবকেরা বিক্ষোভ আন্দোলনে সংগঠিত হয়েছে । এবার টিউশন ফি সহ বিভিন্ন খাতে ফি নেওয়ার অভিযোগে মধ্যমগ্রামের ওই বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বিরুদ্ধে সরব হলেন অভিভাবকরা ।

মধ্যমগ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলে বিক্ষোভ, ভাঙচুর

সকাল থেকেই স্কুলের গেটের সামনে জড়ো হয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা । বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই বিক্ষোভ আরও জোরালো হয় । প্রিন্সিপ্যাল পলাশ সাহার কুশপুতুল রেখে বিরুদ্ধে দেখান অভিভাবকরা । নিরাপত্তা রক্তীদের গেট খোলার অনুরোধ করলেও তাতে কাজ না হওয়ায় অভিভাবকরা জোর করে গেট খোলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ । স্কুল লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় । এরপরই স্কুলের মেইন গেট খুলে দিতে বাধ্য হন নিরাপত্তারক্ষীরা । স্কুলের ভিতরে ঢোকার পরই নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন অভিভাবকদের একাংশ । এক মহিলা নিরাপত্তারক্ষীকে হেনস্থা ও নিগ্রহ করার অভিযোগও উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ।

পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয় মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ । তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসে । এবিষয়ে সোমা গুহ নামে এক অভিভাবক বলেন, "ফি মকুবের বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা পাঁচ দিন ধরে স্কুলের দরজায় ঘুরছি । প্রথমে প্রিন্সিপ্যাল প্রত্যেক অভিভাবকের সঙ্গে আলাদা ভাবে আলোচনা করতে রাজি হলেও পরে জানায় মাত্র দু'জন অভিভাবকের সঙ্গে আলোচনায় করতে প্রস্তুত স্কুল কর্তৃপক্ষ । দেড় হাজার পড়ুয়ার সমস্যা কিভাবে দু'জনের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা যাবে? সেই জন্য আমরা চাই প্রত্যেক অভিভাবকের সমস্যার কথা আলাদাভাবে শোনা হোক ৷" তিনি আরও বলেন, "স্কুল কর্তৃপক্ষ ফি মকুবের বিষয়ে উদাসীন । আমরা চাই না কোনও অশান্তি হোক । কিন্তু তারপরও অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে কর্তৃপক্ষ । তিন মাসের টিউশন ফি সহ বিভিন্ন খাতে ফি মকুব করার দাবি নিয়েই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি আমরা ৷" কোরোনা পরিস্থিতিতে টিউশন সহ বিভিন্ন খাতে বর্ধিত ফি কেন নেওয়া হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ ।

যদিও, স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল পলাশ সাহা বলেন,"এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত এবং দুর্ভাগ্যজনক ৷ স্কুল কর্তৃপক্ষে অভিভাবকদের সঙ্গে 8 জুন বৈঠক হয় ৷ সেই বৈঠকে আমরা সরকারে কথা অনুসারে ফি মকুব করি ৷ এবং গতবছরের ফি কাঠামো অনুসারে এই বছর ও ফি সংগ্রহ করেছি ৷ যে অভিভাবকের বাড়তি ফি দিয়েছিলেন তাঁদের টাকা আমরা পরবর্তী মাসের টিউশন ফি-র সঙ্গে সমন্বয় করে দিয় ৷ তখন এই সিদ্ধান্তে অভিভাবকেরা সহমত হন ৷ এরপরই তারা দাবি করেন তিন মাসের ফি মকুব করতে হবে এবং টিউশন ফি ছাড়া আর কোনও ফি দেব না ৷ এই সবের পরও আমরা হাইকোর্টের রায় মেনে কাজ করছিলাম ৷ ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইন ক্লাস দিচ্ছিলাম ৷ কিন্তু আমরা কখনও ভাবিনি যে অভিভাবকেরা এইভাবে আজ ভাঙচুর চালাবে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.