ETV Bharat / state

লিস্টে নাম উঠেছে, ভোট দেবেন 54 "মানসিক রোগী"

author img

By

Published : May 8, 2019, 3:12 PM IST

Updated : May 10, 2019, 3:17 PM IST

কাজে ব্যস্ত পাভলভের মানসিক রোগীরা

সুস্থ কিন্তু পরিবার ফিরিয়ে নেয়নি। তাই হাসপাতালের নথিতে এখনও তাঁরা মানসিক রোগী । এবার তাঁরাই পেলেন ভোটাধিকার ।

কলকাতা, 8 মে : সুস্থ কিন্তু থাকার উপযুক্ত জায়গা নেই । তাই সরকারি নথিতে তাঁরা এখনও মানসিক হাসপাতালের রোগী । এই রোগীদেরই ভোটার লিস্টে নাম ওঠানোর জন্য হিমশিম খেতে হল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে । তাঁদের ভোটাধিকার দিয়ে কী হবে? তাঁদের মতামতের কি সত্যিই কোনও গুরুত্ব রয়েছে? এমনই সব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে সংগঠন ও কর্তৃপক্ষকে । যদিও সফল হয়েছে প্রচেষ্টা । আর তাই উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে এবার ভোটদানের জন্য প্রস্তুত ক্যালকাটা পাভলভ হসপিটালের ৫৪ জন রোগী । ভোটাধিকার পেয়েছেন বহরমপুরের সরকারি মানসিক হাসপাতালেরও ৬৫ জন ।

পাভলভে চিকিৎসার জন্য ভরতি হয়েছিলেন রতন রায়নন্দী । বাড়ি বেলঘড়িয়ায় । ব্যবসা করতেন । বাড়িতে মা ও ভাই রয়েছেন । রতনবাবুর স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকেন । ১২ বছর ধরে হাসপাতালে রয়েছেন তিনি । বাড়ির লোক আগে দেখা করতে আসত । এখন আর আসে না । রতনবাবুর নিজেরও এখন বাড়ি যেতে ইচ্ছা করে না । তাঁর নাম এবার ভোটার লিস্টে উঠেছে । তিনি বলেন, "ভোট নিজের অধিকার । ১২ বছর পরে আবার ভোট দিচ্ছি । সুস্থ হয়েছি । আমাদের ভোট দেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে । খুব আনন্দ হচ্ছে । কাকে ভোট দেব সেটাও ঠিক করে নিয়েছি ।"

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

ভোটার লিস্টে নাম উঠেছে মৌসুমী মুখোপাধ্যায়ের । বাড়িতে তাঁর স্বামী ও মেয়ে রয়েছে । বাপের বাড়ি বসিরহাটে । বিয়ের পর থাকতেন মুম্বইতে । আট বছর ধরে এই হাসপাতালে রয়েছেন তিনি । ভোট দিতে পারবেন জেনে খুশি । কিন্তু পরিবারের কেউ না আসায় আক্ষেপও রয়েছে । মৌসুমি বলেন, "বাড়ির লোক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে না । হয়তো আমি এখানে আছি সেটা জানে না । তবে, দিদি-জামাইবাবু আমাকে দেখতে এসেছিলেন বছরখানেক আগে । বাড়ি ফিরতে খুব ইচ্ছা করে । কিন্তু উপায় নেই।" ভোট দেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, "ভোট দেওয়ার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার পেতে চাই । আমাদের জন্য সরকার যাতে আরও সুযোগ-সুবিধা দেয় তার জন্য ভোট দেব।"

পাভলভে এই ৫৪ জনের ভোটার লিস্টে নাম উঠেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় । ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সিনিয়র প্রোজেক্ট ম্যানেজার শুক্লা দাস বড়ুয়া বলেন, "এই হাসপাতালের ৫৪ জনের জন্য ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছে । বহরমপুর মেন্টাল হাসপাতালে ভোটার কার্ড পেয়েছেন ৬৫ জন । ভোটাধিকার মানে একজন মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার দেওয়া । এখানে বহু মানুষ রয়েছেন যারা সুস্থ । এই মুহূর্তে বাড়ি যাওয়ার মতো অবস্থা নেই বা পরিস্থিতি নেই । তার মানে কি তাঁরা গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন? ভোটাধিকার একটি মানুষের প্রাথমিক অধিকারের মধ্যে পড়ে । সেজন্য আমাদের মনে হয়েছিল, ভোটাধিকার নেই বলে সরকার এদের দিকে নজর দিচ্ছে না । তাই তাঁদের ভোটাধিকারের দাবিতে আমরা লড়াইটা শুরু করেছিলাম । ওদের ভোটাধিকার পেতে দফায় দফায় নির্বাচন কমিশনে মিটিং করতে হয়েছে । স্বাস্থ্য ভবনে মিটিং করতে হয়েছে । দীর্ঘ দিনের চেষ্টার ফলে আমরা সফল হয়েছি। "

শুক্লা আরও বলেন, "পাভলভ হাসপাতালে এখন ৬৫০ জন রোগী আছে । এর মধ্যে ৪০ শতাংশ রোগীর এখন হাসপাতালে থাকার কোনও দরকার নেই । নতুন মানসিক স্বাস্থ্য আইন এসেছে । এই আইনে আগামী বছর হয়তো অনেকই বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন । বাড়িতে ফেরার পর তাঁরা নিয়মিত হাসপাতালের বহির্বিভাগে এসে চিকিৎসা করাতে পারবেন । যাদের অ্যাকিউট মেন্টাল ইলনেস রয়েছে, তাঁদেরই একমাত্র হাসপাতালে থাকার কথা ।

যাঁরা ভোটাধিকার পেয়েছেন তাঁরা সকলেই সুস্থ । আমাদের সংগঠনের বিভিন্ন ধরনের প্রোজেক্টের সঙ্গে তাঁরা এখন যুক্ত। তাঁদের কেউ কাপড় কাচেন, কেউ ক্যান্টিনে কাজ করেন । কেউ প্রিন্টিং ইউনিটে কাজ করেন । ভোটার লিস্টে নাম ওঠানোর জন্য এই ৫৪ জনের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এই হাসপাতালেরই ঠিকানা । তবে ঠিকানায় হাসপাতালের নাম লেখা হয়নি । কারণ এই হাসপাতালের নাম অনেক ক্ষেত্রে স্টিগমা হিসেবে কাজ করে ।"

পাভলভের সুপার গণেশ প্রসাদ বলেন, "আমাদের এখানে এখন ২০০ জন সুস্থ । তাঁদের মধ্যে যাঁরা দীর্ঘদিন ওষুধ ছাড়াই সুস্থ আছেন, তাঁদের নাম ভোটার লিস্টে ওঠানোর জন্য চেষ্টা করা হয়েছে ।"

Intro:কলকাতা, ৭ মে: কাগজে-কলমে তাঁরা এখনও মানসিক হাসপাতালের রোগী। তবে, সরকারি নথিতে এমন থাকলেও, তাঁরা অবশ্য এখন সুস্থ। অথচ, তাঁদের ভোটাধিকার দিয়ে কী হবে? তাঁদের মতামতের কি সত্যিই কোনও গুরুত্ব রয়েছে? এমনই বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁদের নাম ভোটার লিস্টে ওঠানোর জন্য। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সফল হয়েছে প্রচেষ্টা। আর, তারই জেরে উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে ভোটদানের জন্য এখন প্রস্তুত কলকাতা পাভলভ মেন্টাল হাসপাতালের ৫৪ জন রোগী।
Body:শুধুমাত্র কলকাতার সরকারি এই মানসিক হাসপাতালের এই ৫৪ জন নন। তাঁদেরই মতো বহরমপুরের সরকারি মেন্টাল হাসপাতালের ৬৫ জন রোগীও এ বার ভোটাধিকার পেয়েছেন। এই ঘটনা এ রাজ্যে এই প্রথম বলে জানানো হয়েছে। আগামী দিনে কলকাতার লুম্বিনী পার্ক মেন্টাল হাসপাতাল এবং পুরুলিয়ার মেন্টাল হাসপাতালের এমন রোগীদের জন্য ভোটাধিকার এনে দেওয়ার প্রচেষ্টা সফল হবে বলেও আশা করা হচ্ছে। এ রাজ্যের সরকারি মানসিক হাসপাতালের এই সব রোগী এখন সুস্থ। অথচ, বিভিন্ন কারণে তাঁরা বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। যে সব কারণের মধ্যে রয়েছে, এই সব মানুষের প্রতি তাঁদের পরিজনদের অনীহার বিষয়টিও। বছরের পর বছর ধরে সুস্থ থাকা সত্ত্বেও, এমন বহু মানুষ এই সব হাসপাতালে কাগজে-কলমে রোগী হিসাবে রয়েছেন। কারণ, এই ধরনের মানুষের জন্য কোনও ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত নেই। যার জেরে, সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও,‌ সরকারি নথিতে এই সব মানুষ রোগী হিসাবে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

কলকাতা পাভলভ মেন্টাল হাসপাতালের এমন এক রোগী পঞ্চাশোর্ধ্ব রতন রায়নন্দী। তাঁর বাড়ি বেলঘড়িয়ায়। তিনি ব্যবসা করতেন। বাড়িতে তাঁর মা এবং ভাই রয়েছেন। স্ত্রী এবং সন্তান এখন থাকেন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে। ১২ বছর ধরে এই হাসপাতালে রয়েছেন তিনি। এই হাসপাতালে তাঁর বাড়ির লোক আগে এসেছিলেন। এখন আর আসেন না। তবে, এখন আর তাঁর বাড়িতে যেতে ইচ্ছাও হয় না। তাঁর নাম এ বার ভোটার লিস্টে উঠেছে। তিনি বলেন, "ভোট দেওয়ার জন্য উৎসাহ আরও বেড়ে গিয়েছে। ভোট নিজের অধিকার। ১২ বছর পরে এই প্রথম ভোট দিচ্ছি। এই জন্য খুব আনন্দ হচ্ছে।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা সুস্থ হয়েছি। আমাদের ভোট দেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে।" কাকে ভোট দেবেন, প্রচার দেখেছেন? তিনি জানিয়েছেন, খবরের কাগজ দেখে তিনি ঠিক করেছেন, উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে কাকে তিনি ভোট দেবেন।

এমনই আরও এক ভোটারের নাম মৌসুমী মুখোপাধ্যায়। কলকাতা পাভলভ মেন্টাল হাসপাতালের চল্লিশোর্ধ্ব এই রোগীর স্বামী এবং মেয়ে বাড়িতে আছেন। আট বছর ধরে এই হাসপাতালে রয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, "আমার খুব ভালো লাগছে এই বছর এখান থেকে ভোট দিতে পারছি।" একই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ,‌ "বাড়ির লোক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে না। আমি এখানে আছি যতটুকু সম্ভব এটা হয়তো জানে না।" যদিও তিনি বলেন, "দিদি-জামাইবাবু আমাকে দেখতে এসেছিলেন বছর খানেক আগে।" তাঁর বাপের বাড়ি বসিরহাটে। বিয়ে হয়েছিল আসানসোলে। সেখান থেকে স্বামীর কর্মসূত্রে তিনি থাকতেন মুম্বইতে। তিনি বলেন, "বাড়ি ফিরতে খুব ইচ্ছা করে। কিন্তু উপায় নেই।" বাড়ি ফিরতে পারলে তাঁর থেকে বেশি খুশি কেউ হবেন না বলেও তিনি জানিয়েছেন। কেন তিনি ভোট দিতে চান? তাঁর কথায়, "ভোট দেওয়ার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার পেতে চাই। আমাদের জন্য সরকার যাতে আরও সুযোগ-সুবিধা করে দেয়, ভালো ব্যবস্থা করে দেয়, তার জন্য ভোট দিতে আমরা আরও উৎসাহ পাচ্ছি।"

কলকাতা পাভলভ মেন্টাল হাসপাতালের এই ৫৪ জনের ভোটাধিকারের ব্যবস্থা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টায়। এই সংগঠনের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার শুক্লা দাস বড়ুয়া বলেন, "এই হাসপাতালের ৫৪ জনের জন্য ভোটার কার্ড আমরা করাতে পেরেছি। বহরমপুর মেন্টাল হাসপাতালে ভোটার কার্ড পেয়েছেন ৬৫ জন।" এই দুই সরকারি হাসপাতালের মতো এ রাজ্যের অন্য দুই সরকারি হাসপাতাল লুম্বিনী পার্ক মেন্টাল হাসপাতাল আর পুরুলিয়া মেন্টাল হাসপাতালের সুস্থ রোগীদের ভোটাধিকার অর্জনের জন্য এ বার চেষ্টা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। আগামী দিনে এই দুই হাসপাতালেও তাঁরা সফল হবেন বলে তিনি মনে করেন।

কেন এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল? শুক্লা দাস বড়ুয়া বলেন, "ভোটাধিকার মানে একজন মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার দেওয়া। এখানে বহু মানুষ রয়েছেন যাঁরা সুস্থ। এই মুহূর্তে বাড়ি যাওয়ার মতো অবস্থা নেই বা পরিস্থিতি নেই। তার মানে কি সেই মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন?" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "ভোটাধিকার একটি মানুষের প্রাথমিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। যেখানে সরকার গঠনে তাঁর মতামত তিনি রাখবেন। সেই জন্য আমাদের মনে হয়েছিল, সরকার কি এদের দিকে চোখ দিচ্ছে না এই কারণে যে, যেহেতু এদের ভোটাধিকার নেই? তা হলে এদের দিকে সরকার চোখ তখনই দেবে যখন এদের ভোট পাবে? এই চিন্তা-ভাবনার পাশাপাশি এদের অধিকারের চিন্তা-ভাবনা এবং নাগরিক অধিকারের জায়গা থেকেও এদের ভোট দেওয়ার অধিকার আদায়ের জন্য লড়াইটা আমরা শুরু করেছিলাম।"

কলকাতা পাভলভ মেন্টাল হাসপাতালে আপাতত ৬৫০-র মতো রোগী রয়েছেন। এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, "৬৫০-এর মধ্যে ৪০ শতাংশ রোগী অর্থাৎ, এখানকার আবাসিক কিন্তু এখন বাড়িতে গিয়ে, বহির্বিভাগে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ থাকতে পারেন। হাসপাতালে থাকার কোনও দরকার নেই।" তিনি বলেন, "নতুন মানসিক স্বাস্থ্য আইন এসেছে গত জুলাই মাস থেকে। এই আইনের উপর রুল তৈরি হচ্ছে। এই রুলের মাধ্যমে আগামী বছর হয়তো অনেক মানুষ ফিরে যেতে পারবেন। কমিউনিটিতে গিয়ে তাঁরা চিকিৎসা নেবেন এবং বহির্বিভাগের চিকিৎসায় থাকবেন। যাঁদের অ্যাকিউট মেন্টাল ইলনেস রয়েছে, তাঁদেরই একমাত্র হাসপাতালে থাকার কথা। যাঁরা অনেকটা সুস্থ, যাঁরা ওষুধ খেয়ে বাড়িতে ভালো থাকবেন, তাঁদের জন্য হাসপাতাল নয়। তাঁদের জন্য ফ্যামিলি, তাঁদের জন্য কমিউনিটি।"

কলকাতা পাভলভ মেন্টাল হাসপাতালের যাঁরা ভোটাধিকার পেয়েছেন, তাঁরা সকলেই সুস্থ। এই সংগঠনের বিভিন্ন ধরনের লাইভলিহুড প্রজেক্টের সঙ্গে তাঁরা যুক্ত এখন। তাঁদের কেউ ধোবিঘরে কাপড় কাচেন, কেউ ক্যান্টিনে কাজ করেন। কেউ প্রিন্টিং ইউনিটে কাজ করেন। এ কথা জানিয়ে শুক্লা দাস বড়ুয়া বলেন, "ভোটার লিস্টে নাম ওঠানোর জন্য এই ৫৪ জনের ঠিকানা হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে এই হাসপাতালের ঠিকানা। তবে, এই ঠিকানা হিসাবে ১৮ নম্বর গোবরা রোড থাকলেও, সতর্কতার সঙ্গে এই হাসপাতালের নাম সেখানে লেখা হয়নি। কারণ, এই হাসপাতালের নামের সঙ্গে স্টিগমার বিষয়টি রয়েছে।" হাসপাতালের নথি অনুযায়ী, এই সব রোগীর ভোটাধিকার প্রাপ্তি খুব সহজে হয়নি বলে জানানো হয়েছে।

কেন? শুক্লা দাস বড়ুয়া বলেন,‌ "দফায় দফায় নির্বাচন কমিশনে মিটিং করতে হয়েছে। দফায় দফায় স্বাস্থ্য ভবনে মিটিং করতে হয়েছে। এই হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট অ্যড্রেস প্রুফ দিয়েছেন। এটা দীর্ঘ দিনের লম্বা প্রক্রিয়ার শেষে সফল হয়েছে।" কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল? তিনি বলেন, "সমস্যা একটাই, আমাদের ব্যাক অফ দ্য মাইন্ডে, এদের ভোটাধিকার দিয়ে কী হবে? এদের মতামতের কি সত্যিই কোনও গুরুত্ব রয়েছে?" এমন বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, "বিষয়টা নিয়ে দিনের পর দিন কোথাও আমাদের হ্যামার করতে হয়েছে। বোঝাতে হয়েছে, এরা সুস্থ রয়েছেন। কিন্তু কোনও না কোনও কারনেই এখানে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের মতামতের দাম সরকারকে অবশ্যই দিতে হবে।"
Conclusion:এই হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট গণেশ প্রসাদ বলেন, "আমাদের এখানে এখন ২০০ জন সুস্থ হয়ে আছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা খুব ভালো বুঝতে পারছেন,, বহুদিন ধরে ওষুধ ছাড়াই যাঁরা ভালো থাকতে পারছেন, তাদের নাম ভোটার লিস্টে ওঠানোর জন্য চেষ্টা চলেছে।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "রোগীদের কেন ভোটাধিকার দিতে হবে? এমন প্রশ্নের পাশাপাশি তাঁদের বয়স, ঠিকানার বিষয়েও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। দুই বছরের চেষ্টার পরে শেষ পর্যন্ত এই ভোটাধিকার মিলেছে।" কাকে ভোট দেবেন এই সব ভোটার, কীভাবে জানবেন প্রার্থীদের নাম? এই বিষয়টি হাসপাতালের টেলিভিশন, খবরের কাগজের মাধ্যমে এই ভোটাররা জেনে নিতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট। এই সব মানুষ বঞ্চিত। ভোটাধিকার পেলে রাজনৈতিক নজরে পড়বেন এই সব মানুষ‌। সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এই লক্ষ্যেও কলকাতা পাভলভ মেন্টাল হাসপাতালের এই সব সুস্থ রোগীর জন্য ভোটাধিকারের ব্যবস্থা করানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
_______

RAP-এ বাইট:
wb_kol_may 7 ec pavlov bt 1_7203421
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার শুক্লা দাস বড়ুয়া

wb_kol_may 7 ec pavlov bt 2_7203421
ভোটার মৌসুমী মুখোপাধ্যায়

wb_kol_may 7 ec pavlov bt 3_7203421
ভোটার রতন রায়নন্দী


WRAP-এ ছবি:
wb_kol_may 7 ec pavlov pic 1_7203421
ভোটাধিকারপ্রাপ্ত সুস্থ রোগীও ক্যান্টিনে কাজ করছেন।
_______
Last Updated :May 10, 2019, 3:17 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.