Northbengal health osd : উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য-ওএসডির ছেলের বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূতভাবে এমডি পড়াকালীন বেতন নেওয়ার অভিযোগ

author img

By

Published : Sep 27, 2021, 6:40 PM IST

Updated : Sep 27, 2021, 8:39 PM IST

allegation-against-north-bengal-health-osd-son-that-he-takes-salary-as-contractual-doctor-while-studying-in-md

ডাঃ সুশান্তকুমার রায় ৷ উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য বিভাগের ওএসডি-র পুত্র ডাঃ সৌত্রিক রায়ের বিরুদ্ধে এমডি পড়ার সময় বেতন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ এই নিয়ে তদন্তের দাবিতে সরব অনেকে ৷

জলপাইগুড়ি, 27 সেপ্টেম্বর : বাবার প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বেতন নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ৷ তাঁর নাম ডাঃ সৌত্রিক রায় ৷ অভিযোগ, তিনি এমডি পড়ার সময়ও বেতন পেয়েছেন ৷ যা নিয়ম বহির্ভূত ৷ তাঁর বাবা ডাঃ সুশান্তকুমার রায় ৷ বাবার প্রভাব খাটিয়েই সৌত্রিক রায় এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে ৷

এমনকী, এই ঘটনায় তদন্তও শুরু হয়েছিল ৷ কিন্তু মাঝপথে তদন্ত বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ ৷ তদন্ত করার জন্য এক আধিকারিককে বদলিও করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে ৷ এই পরিস্থিতি এই নিয়ে নতুন করে তদন্ত হোক, এমনটাই চাইছেন অনেকে ৷ নতুন করে তদন্ত শুরুর আশ্বাসও দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর ৷ তবে এই নিয়ে ডাঃ সৌত্রিক রায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি ৷

আরও পড়ুন : North Bengal OSD: উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের উপর জুলুমের অভিযোগ

জলপাইগুড়ির সমাজসেবী সংগঠন গ্রিন জলপাইগুড়ির সম্পাদক অঙ্কুর দাসের অভিযোগ, সৌত্রিক রায় এমডি পড়ার সুযোগ পান 2018 সালে । কিন্তু অবৈধভাবে তিনি পড়া চলাকালীন 11 মাসের বেতন নিয়েছেন, যা তিনি কোনও ভাবেই পেতে পারেন না । কারণ, তিনি একজন অস্থায়ী ডাক্তার । স্থায়ী ডাক্তার হলে সরকার যদি তাঁকে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠাত, তাহলে তিনি মাইনে পেতে পারতেন । কিন্তু তিনি নিজের ইচ্ছায় এমডি পড়তে যান । আর সেই সময় 11 মাসের মাইনেও তিনি তুলেছেন ।

যখন সৌত্রিক রায়ের বিরুদ্ধে প্রথমবার এই অভিযোগ সামনে এসেছিল, তখন জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলেন ডাঃ জগন্নাথ রায় ৷ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, তিনি এই নিয়ে শোকজ করেন হাসপাতাল সুপারকে ৷ তাছাড়া একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি এই অভিযোগ করেন ৷

আরও পড়ুন : OSD Controversy : কোন যোগ্যতায় উত্তরবঙ্গের জনস্বাস্থ্য বিভাগের ওএসডি সুশান্ত রায়, প্রশ্ন বিরোধীদের

সুপারকে শোকজ করার চিঠিতে (ডিএইচএফডাব্লুএস/2097/19 মেমো নং চিঠিতে ২৩/১২/২০১৯) তৎকালীন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক লেখেন, 2013 সালের 5 ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সমিতির অধীনে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের থ্যালাসেমিয়া কন্ট্রোল ইউনিটের চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন ডাঃ সৌত্রিক রায় । এরই মাঝে তিনি 2018 সালের 25 মে তিনি বায়োকেমিস্ট্রিতে এমডি পড়ার সুযোগ পান উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৷ অথচ তিনি 2019 সালের 12 এপ্রিল পর্যন্ত বেতন পেলেন কীভাবে ?

তদন্ত চলাকালীন বদলি হয়ে যান ডাঃ জগন্নাথ সরকার ৷ বিষয়টিকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে রুটিন হিসেবে দেখানো হয় ৷ কিন্তু অভিযোগ ওঠে যে, ডাঃ সুশান্ত রায়ের ছেলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতেই তাঁকে বদলি করা হয় ৷ কারণ, ডাঃ সুশান্তকুমার রায় অত্যন্ত প্রভাবশালী ৷ সেই প্রভাব খাটিয়েই তিনি ছেলের বিরুদ্ধে তদন্ত থামিয়ে দেন বলে অভিযোগ ৷

আরও পড়ুন : Child Fever : শিশুদের জ্বর সংক্রান্ত তথ্য লুকোনোর অভিযোগ ওএসডি সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে

ইতিমধ্যে করোনা অতিমারি পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ তাতে সব বিতর্ক ধামাচাপা পড়ে যায় ৷ তার মধ্যে ডাঃ সুশান্তকুমার রায় যিনি জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে একজন সাধারণ চোখের ডাক্তার ছিলেন, তাঁকে স্বাস্থ্য দফতর পুর্ননিয়োগ করে ৷ এবার তাঁকে উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য বিভাগের ওএসডি করে দেওয়া হয় ৷

তাই নতুন করে সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে ৷ গ্রিন জলপাইগুড়ির সম্পাদক অঙ্কুর দাস বলেন, ‘‘আমরা সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে আন্দোলনে নেমেছি । আমরা যা জানি ডাঃ সৌত্রিক রায় তাঁর বাবা ডাঃ সুশান্ত রায়ের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে থ্যালাসেমিয়া বিভাগে বসেছিলেন ।’’

আরও পড়ুন : Jalpaiguri OSD Controversy : শিশুরা কেমন আছে ? জানতে চাইতেই রেগে গেলেন ওএসডি

এই যখন পরিস্থিতি, তখন আগুনে ঘি দিল এমডি পরীক্ষার ফল ৷ দেখা গেল বায়োকেমিস্ট্রিতে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছেন সৌত্রিক ৷ আর তাতেই ক্ষোভ বাড়ছে নতুন করে ৷ অঙ্কুর দাস বলেন, ‘‘ডাঃ সৌত্রিক রায় প্রথম হয়েছেন আমাদের গর্বের বিষয় ৷ কিন্তু তিনি তো ক্লাসই করতেন না । তিনি তো জলপাইগুড়ি হাসপাতালে পরিদর্শন করে বেড়াতেন ৷’’ তাই এই নিয়ে নতুন করে তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনি ৷

allegation-against-north-bengal-health-osd-son-that-he-takes-salary-as-contractual-doctor-while-studying-in-md
অভিযুক্ত চিকিৎসক সৌত্রিক রায়

তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করেন জলপাইগুড়ির সাংসদ তথা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যাপক ডাঃ জয়ন্তকুমার রায়ও ৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘কখনোই কোনও চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক এমডি পড়াকালীন বেতন পেতে পারেন না । বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ ।’’ এই বিষয়ে জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ড. জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘কীভাবে উনি বেতন পেয়েছেন আমার জানা নেই । আমি সেই সময় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলাম না ।’’ এদিকে সদর হাসপাতালের সুপার কোনও মন্তব্য করতে চাননি ।

আরও পড়ুন : Jalpaiguri Children in Fever : করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ, জলপাইগুড়িতে জ্বরে অসুস্থ বাচ্চাদের পর্যবেক্ষণে মনিটরিং দল গঠন

তবে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী ৷ তিনি জানান, এটা কীভাবে সম্ভব হল বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে । প্রয়োজনে তদন্ত করা হবে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে । এদিকে সৌত্রিক রায়ের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন তোলেননি । ফলে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি ।

Last Updated :Sep 27, 2021, 8:39 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.