ETV Bharat / international

Islamic State : আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেট কতটা ভয়ঙ্কর ?

author img

By

Published : Aug 27, 2021, 3:26 PM IST

কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে যখন মার্কিন সেনার সদস্যরা ভিড় নিয়ন্ত্রণ করছিলেন, তখনই ভিড়ের মধ্যে একজন আত্মঘাতী জঙ্গি ঢুকে পড়ে বিস্ফোরণ ঘটায় ৷ এই ঘটনায় আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেট অভিযুক্ত বলে দাবি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৷

explainer-how-dangerous-is-afghanistans-islamic-state
Islamic State : আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেট কতটা ভয়ঙ্কর ?

কাবুল, 27 অগস্ট : মার্কিন সেনা (US Army) ও ন্যাটোর (NATO) বাহিনী প্রত্যাহার শুরু হতেই তালিবানের (Taliban) দখলে চলে গিয়েছে আফগানিস্তান (Afghanistan) ৷ এর মধ্যে নতুন মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেট (Islamic State) ৷ যার আরও একটা পরিচয় ইসলামিক স্টেট খোরাসান (Islamic State Khorasan) ৷ গতকাল, বৃহস্পতিবার কাবুল (Kabul) বিমানবন্দরের বাইরে যে আত্মঘাতী হামলা হয়েছিল, তাতে ওই গোষ্ঠীই জড়িত বলে আমেরিকানরা অভিযোগ করেছে ৷

গতকাল কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে যখন মার্কিন সেনার সদস্যরা ভিড় নিয়ন্ত্রণ করছিলেন, তখনই ভিড়ের মধ্যে একজন আত্মঘাতী জঙ্গি ঢুকে পড়ে ৷ তার পর বিস্ফোরণ হয় ৷ এই ঘটনায় আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেটের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (US President Joe Biden) ৷ এই ঘটনা যথেষ্ট ভয়ের বলেও মনে করেন তিনি ৷ তবে ঘোষিত ডেডলাইন মেনে আগামী মঙ্গলবারই আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণভাবে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এর পরও বলবৎ থাকছে বলে তিনি জানিয়েছেন ৷

আরও পড়ুন : Kabul Airport Blast : তালিবানদের সঙ্গে আইএস আর হাক্কানিদের যোগ রয়েছে, টুইট আমরুল্লার

ইসলামিক স্টেট খোরাসান কী ?

2014 সাল থেকে মধ্য এশিয়ায় ইসলামিক রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইসলামিক স্টেট বা আইএস (IS) কার্যকলাপ শুরু করে ৷ সিরিয়া (Siriya) ও ইরাকে (Iraq) স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাহিনী তাদের এই কার্যকলাপ বন্ধ করে ৷ আর তা করতে প্রায় পাঁচ বছর লেগে যায় ৷ এই আইএসের আফিগানিস্তানের শাখার নাম খোরাসান ৷ খোরাসান প্রদেশের নামেই তারা এই সংগঠনের নাম রাখে ৷ তবে এই প্রদেশের মধ্যে আফগানিস্তানের একটি অংশ ছাড়াও রয়েছে ইরান ও মধ্য এশিয়ার অংশ ৷ এই গোষ্ঠী আইএসকে বা আইএসআইএস (ISIS) কে নামেও পরিচিত ৷

এই ইসলামিক স্টেট খোরাসানের হয়ে কারা লড়াই করে ?

এই গোষ্ঠীটি প্রথমে তৈরি হয়েছিল পাকিস্তানি (Pakistan) তালিবানদের নিয়ে ৷ আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা ও ন্যাটোর অভিযানের জেরে এই জঙ্গিরা সব দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছিল ৷ তখনই তারা দেশের বাইরে এই গোষ্ঠীটি তৈরি করে ৷ তার পর তালিবানের তরফে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (USA) সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করা হয়, তখন আরও তালিবানি জঙ্গি ইসলামিক স্টেটের অংশীদার হয় ৷ এই গোষ্ঠীতে উজবেকিস্তান, ইরান ও তার্কিস্তানের জঙ্গিরাও রয়েছে ৷

আরও পড়ুন : Kabul Airport Blast : সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার বার্তা, কাবুল বিস্ফোরণের নিন্দায় সরব ভারত

তারা কেন ক্রমশ ভয়ের কারণ হয়ে উঠছে?

তালিবান তাদের লড়াই আফগানিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চায় বলে জানিয়েছে ৷ কিন্তু ইসলামিক স্টেটের যে গোষ্ঠীগুলি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে রয়েছে, তারা সারা বিশ্বে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে ৷ সেই কারণে 2017 সাল থেকে আফগানিস্তানে বারবার মার্কিন সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা ৷

তাছাড়া আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে একাধিক হামলার সঙ্গেও তারা জড়িত ৷ তবে এখনও পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে তারা কোনও হামলা করতে সক্ষম হয়নি ৷ কিন্তু মার্কিন প্রশাসন মনে করে তাদের পক্ষে এই গোষ্ঠী যথেষ্ট ভয়ঙ্কর ৷ এমনকী, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের মিত্র দেশ নিয়েও তারা আশঙ্কায় রয়েছে ৷

আরও পড়ুন : Kabul Airport Blast : সংকটাপন্ন দেশে এমন বিস্ফোরণ ঘটানো জঘন্য অপরাধ, নিন্দা রাষ্ট্রসংঘের

তালিবানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কী ?

তালিবানের সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের এই গোষ্ঠীর শত্রুতা রয়েছে ৷ গোয়েন্দারা মনে করেন, আল কায়দা জঙ্গিদের অনেকে এখন তালিবানের সঙ্গে মিশে গিয়েছে ৷ উল্টোদিকে তালিবান বরাবর এই গোষ্ঠীর প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাব রেখে চলেছে এতদিন ৷ এমনকী, আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্ব প্রান্ত থেকে এই গোষ্ঠীকে সরাতে মার্কিন সেনা ও আফগান সরকারের সঙ্গে হাতও মিলিয়েছিল তালিবান ৷

এখন ঝুঁকি কোথায় ?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ইসমালিক স্টেট হামলা চালাতে পারে বলে মনে করে সেখানকার প্রশাসন ৷ এতদিন আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা ছিল ৷ সেখান থেকে তারা তাদের সমরাস্ত্র দিয়ে হামলা চালাত ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের উপর ৷ কিন্তু এখন তারা সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নিল ৷ তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেল বলেই মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৷

তাছাড়া আফগানিস্তানও তালিবানের দখলে চলে গিয়েছে ৷ সেখানেও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ক্রমশ মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে ৷ তাই আশঙ্কা আরও বেড়েছে ৷ কিন্তু পুরো পরিস্থিতির উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুভিলিয়ন ৷

আরও পড়ুন : Kabul Airport Blast : অ্যাবে গেটে দেশ ছাড়ার অপেক্ষায় ভিড়, সেই ভিড়ই ছিন্নভিন্ন বিস্ফোরণে

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.