ETV Bharat / city

CBI-ED: হেভিওয়েটদের গ্রেফতারিতে আচমকা কেন কৌশল বদল তদন্তকারীদের ?

author img

By

Published : Aug 11, 2022, 6:58 PM IST

Why CBI-ED Change Stance on Arresting Heavyweight Leaders in Various Scam
CBI-ED: হেভিওয়েটদের গ্রেফতারিতে আচমকা কেন কৌশল বদল তদন্তকারীদের ?

বীরভূমে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে (TMC Leader Anubrata Mondal) গ্রেফতার করল সিবিআই ৷ বারবার তলবের পরও হাজিরা না দেওয়াতেই কি এই কৌশল বদল উঠছে প্রশ্ন ৷ এর আগে একই ঘটনা ঘটেছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) গ্রেফতারির ক্ষেত্রেও ৷

কলকাতা, 11 অগস্ট : কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি কি দুর্নীতির তদন্তে কৌশল বদলে ফেলল ? বৃহস্পতিবার সকালে হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (TMC Leader Anubrata Mondal) গ্রেফতারির পর এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে ৷

উল্লেখ্য, গত 24 জুলাই থেকে আজ, 11 অগস্ট - এই ক‘দিনের ব্যবধানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দলের হেভিওয়েট দুই নেতা দুর্নীতিতে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হলেন ৷

পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) গ্রেফতার করা হয়েছে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Bengal Recruitment Scam) ৷ আর বৃহস্পতিবারে বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হল গরুপাচার কাণ্ডে (Cattle Smuggling Case) ৷ পার্থকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate) ৷ আর অনুব্রতকে গ্রেফতার করল সিবিআই (CBI) ৷

তাৎপর্যপূর্ণভাবে পার্থ ও অনুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের বাড়ি থেকে ৷ ঠিক যেভাবে গত বছরের মে মাসে বাড়ি থেকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে এসে ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), সুব্রত মুখোপাধ্যায় (এখন প্রয়াত), শোভন চট্টোপাধ্য়ায় ও মদন মিত্রকে (Madan Mitra) গ্রেফতার করেছিল সিবিআই ৷ যদিও এই ক্ষেত্রে ভোরেই অপারেশন চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো ৷ কাকপক্ষী টের পাওয়ার আগেই নিজাম প্যালেসে ওই নেতাদের নিয়ে এসেছিল সিবিআই ৷

কিন্তু পার্থ-অনুব্রতর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা তেমন নয় ৷ পার্থর বাড়িতে 24 ঘণ্টারও বেশি সময় ছিল ইডি ৷ তার পর তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয় ৷ আর অনুব্রতর বাড়িতে সাতসকালে পৌঁছে গিয়ে প্রথমে তল্লাশি ও তার পর তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গত এক দশকে বাংলায় দুর্নীতির অভিযোগ কমে ওঠেনি ৷ কখনও চিটফান্ড কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে ৷ আবার কখনও স্টিং অপারেশনে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) নেতা-মন্ত্রীদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে ৷ আবার গরু-কয়লা-বালি পাচার থেকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে (Bengal SSC Scam) নাম জড়িয়েছে শাসক দলের হেভিওয়েট নেতাদের ৷ অনেকে গ্রেফতারও হয়েছেন ৷

2021-এর বিধানসভা নির্বাচনের (Bengal Assembly Elections 2021) আগে পর্যন্ত সারদা-সহ অন্য দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের যে হেভিওয়েট নেতারা গ্রেফতার হয়েছেন, প্রতিবারই দেখা গিয়েছে যে তাঁদের জেরার জন্য ডাকা হয়েছে ৷ আর জিজ্ঞাসাবাদের পর জানানো হয়েছে যে তাঁদের গ্রেফতার করা হল ৷

আর এটাকেই কৌশল বদল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ৷ কিন্তু কেন এই কৌশল বদল, উঠছে সেই প্রশ্নও ৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এভাবে কোনও নেতার এলাকায় গিয়ে গ্রেফতার করার মধ্যে ঝুঁকির বিষয়টি থেকে যায় ৷ কারণ, সেই নেতাদের অনুগামীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায় ৷ তাই হেভিওয়েটদের গ্রেফতারির ক্ষেত্রে নিজস্ব দফতর ডাকার বিষয়ে জোর দিতে চায় সংস্থাগুলি ৷

স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে যে কেন এই কৌশল বদল ? সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে বীরভূমে গিয়ে গ্রেফতারির মধ্যে ঝুঁকি ছিল ৷ গোলমালের আশঙ্কা ছিল ৷ সেই কারণেই প্রচুর কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৷ এভাবে আসলে তারা বার্তা দিতে চাইছে যে দুর্নীতির তদন্তে সহযোগিতা না করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷

ওই সূত্র জানাচ্ছে যে অনুব্রত মণ্ডলকে দশবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল ৷ তিনি মাত্র একবার হাজির হয়েছিলেন ৷ অথচ তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রমাণ মিলেছিল ৷ সেগুলি যাচাইয়ের জন্যই তলব করা হচ্ছিল ৷ কিন্তু তিনি না আসায় বাড়ি গিয়ে গ্রেফতার করতে বাধ্য হল সিবিআই ৷

আরও পড়ুন : জেরায় একের পর এক প্রশ্ন এড়িয়ে অসহযোগিতা ! কীভাবে গ্রেফতার হলেন অনুব্রত ?

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.