ETV Bharat / state

শুধু হিল্লি-দিল্লিই করেছেন, স্থানীয়দের চোখে বারলা 'অনুপস্থিত' - lok sabha elections

Alipurduar MP John Barla: শুধু হিল্লি-দিল্লিই করেছেন, আলিপুরদুয়ারে দেখাই মেলেনি সাংসদ জন বারলার ৷ এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের ৷ সাংসদ কোটার টাকাও তিনি খরচ করতে পারেননি ৷ অবশ্য এ জন্য শাসকদলের অসহযোগিতাকে দায়ী করেছেন বিজেপি সাংসদ ৷ দেখে নেব তাঁর কাজের খতিয়ান ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 21, 2024, 7:45 PM IST

ETV BHARAT
ETV BHARAT
আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলার কাজের খতিয়ান

আলিপুরদুয়ার, 19 মার্চ: পাঁচ বছরে প্রতিশ্রুতিমতো কিছুই কাজ করতে পারেননি আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা । এমনই অভিযোগ আলিপুরদুয়ারের আমজনতার । এ দিকে সাংসদ বলছেন রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণে তিনি কাজ করতে পারেননি । আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জন বারলা বিগত পাঁচ বছরে তার সংসদীয় এলাকায় কী কী কাজ করেছেন, আর কী কী কাজ বাকি রয়ে গিয়েছে, সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছে ইটিভি ভারত ৷ কী অভিযোগ আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের ভোটারদের, কী সাফাই সাংসদের আর কী যুক্তি শাসকদলের, সবই তুলে ধরব আপনাদের সামনে ৷

2019 সালে লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী জন বারলা পেয়েছিলেন 7,50,804 ভোট । তৃণমুল কংগ্রেস প্রার্থী দশরথ তিরকে পেয়েছিলেন 506815 ভোট । তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে 243989 ভোটে হারিয়ে জয়ী হন জন বারলা । বিরাট ভোটের ব্যাবধানে জয়ের পর 2021 সালে বিজেপি জন বারলাকে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে বসান ।

আবারও সামনে ভোট ৷ কোন সাংসদ কতটা কাজ করেছেন, চলছে তার হিসেব নিকেশ ৷ আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা জানিয়েছেন, তিনি সাংসদ তহবিল থেকে 9 কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছেন । বাকি টাকা তিনি পাননি । রাজ্য সরকার তাঁর কাজের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট না দেওয়ার ফলে তিনি সাংসদ তহবিলের টাকা পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি । শুধু তাই নয় । তাঁর প্রজেক্ট গুলিকে মান্যতাই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা ।

সাংসদের দাবি, "আলিপুরদুয়ারের জন্য অনেক কিছু করেছি । পাঁচ শতাধিক মানুষকে প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফান্ড থেকে আমরা চিকিৎসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পেরেছি । জলের ব্যবস্থা করেছি । রাস্তাঘাট করেছি । 9 কোটি টাকা খরচ করেছি । বাকি টাকা রাজ্য সরকার খরচ করতে দেয়নি ।বছরে পাঁচ কোটি টাকা পাই, তাতে কিছুই হয় না ৷ আমাকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি । দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের একটা হাসপাতাল হোক আলিপুরদুয়ারে । রাজ্য সরকারের থেকে জমি পাইনি । তাই রেলের জমিতে হাসপাতাল করছি । আলিপুরদুয়ার জেলায় মাদারিহাট, হাসিমারা, আলিপুরদুয়ার, নাগরাকাটায় দূরপাল্লায় ট্রেনের স্টপেজ করা হয়েছে । আলিপুরদুয়ারে বন্দেভারত এক্সপ্রেসের স্টপেজ দেওয়া হয়েছে । চা বাগানের মানুষের অবসরের পর পিএফ পেতে অনেক অসুবিধা হত আধার কার্ডের সমস্যার জন্য । পিএফ অফিসের সঙ্গে কথা বলে প্রত্যেক চা বাগানে ক্যাম্প করে আধার কার্ডের সমস্যার সমাধান করা হয়েছে । চা বাগান এলাকায় পানীয় জলের অনেক সমস্যা ছিল, তার কিছুটা সমাধান করা হয়েছে । সোলার লাইট লাগানো-সহ রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হয়েছে । তুফানগঞ্জ বিধানসভার সোলার লাইট ও রাস্তার ব্যবস্থা হয়েছে । নাগরাকাটা বিধানসভা বিভিন্ন চা বাগানে রাস্তা, ফালাকাটা বিধানসভা, মাদারিহাট এলাকায় পথবাতির ব্যবস্থা, রাস্তা নির্মাণ ।"

কুমারগ্রাম ব্লকে পথ বাতির ব্যবস্থা-সহ বেশকিছু ট্রেনের স্টপেজের ব্যবস্থাও জন বারলা করেছেন বলে জানান । যেমন, নাগরাকাটা ষ্টেশনে সিকিম মহানন্দা এক্সপ্রেস, বামনহাট শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের স্টপেজ, মাদারিহাট স্টেশনে শিয়ালদা থেকে আলিপুরদুয়ারগামী কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসের স্টপেজ ।

তাঁর দাবি, "সেবকে তিস্তা নদীর উপর দ্বিতীয় সেতুর ব্যবস্থা করেছি । তাতে পাহাড় ও ডুয়ার্সের যোগাযোগ ভালো হবে । ধুবরি শিলিগুড়ি ডিইএমইউ ট্রেনের স্টপেজ হ্যামিল্টনগঞ্জ স্টেশনে দেওয়া হয়েছে । আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে প্রচুর ট্রেনের স্টপেজ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি হাসিমারাতে এয়ারপোর্ট গড়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে জমি চাওয়া হয়েছে কিন্তু রাজ্যের সদিচ্ছা না থাকার কারণে কাজটা এগোনো যায়নি । রাজ্য সরকার সহযোগিতা না-করার জন্য আদর্শ গ্রামের জন্য ভালো কিছু করা যায়নি । আমি বান্দাপানী চা বাগান দত্তক নিয়েছিলাম বলে আমাকে কোনও কাজই করতে দেওয়া হয়নি । তাই সোলার লাইট-সহ জলের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছি । এখনও টাকা চাইলে টাকা দিচ্ছে না ।"

আলিপুরদুয়ারের সাংসদ শাসকদলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করলেও তা উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল ৷ আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা শিক্ষক নেতা ভাস্কর মজুমদার বলেন, "সাংসদ জন বারলা কী কাজ করতে পেরেছেন সেটা অবাস্তব প্রশ্ন । আমরা দেখতে পারিনি কী কাজ করেছেন । অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে কাজ খতিয়ে দেখতে হবে । কাজ করেননি বলেই তাঁর টিকিট কেটে গিয়েছে । তিনি যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার কিছুই করতে পারেননি ৷ বীরপাড়াতে রেলের উপর ফ্লাইওভার করবেন বলেছিলেন, করতে পারেননি । হাসিমারাতে এয়ারপোর্ট করতে পারেননি । কেন্দ্রীয় সরকারের হাসপাতাল করবেন বলেছিলেন সেটাও করতে পারেননি । যদি হাসপাতালটা করে দিতে পারে ভালো হয় । আমরাও সাধুবাদ জানাব । আমরাও উন্নয়ন চাই । সম্পত্তি করেছেন এটা ঠিক । সাংসদ বান্দাপানী চা বাগানকে দত্তক নিয়েছিলেন সেই বাগানেও যাননি । চা শ্রমিকদের বাড়ি ঘর নেই, জমির অধিকারের বিষয়ে ঠিক করা যায়নি । পাঁচ বছরে কোনও কাজই হয়নি আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে ৷"

আলিপুরদুয়ারের সমাজকর্মী রাতুল বিশ্বাসের মুখেও সাংসদের কাজে বেশ হতাশ ৷ তিনি বলেন, "উত্তরবঙ্গ বরাবরই বঞ্চিত । আর আলিপুরদুয়ার আরও বঞ্চিত । সাংসদ আমাদের মন্ত্রীও হলেন । কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হলেন, ফলে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল । আমরা যা আশা করেছিলাম তা কিন্তু হল না ।সাংসদের সেই অংশে কোনও কাজ করেননি । রেলের জায়গায় হাসপাতাল করা হবে বলেছিলেন কিন্তু আজও হল না । হাসিমারা এয়ারপোর্ট করার দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের, সেটা তিনি করতে পারেননি । সাংসদ হিসেবে তাঁর সাফল্য কতটা বা ব্যর্থতা কতটা জানি না । জেলা সদরে একটা অফিস প্রয়োজন ছিল সেটাও তিনি পুরোপুরি করেননি ।"

আলিপুরদুয়ারের প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বোস বলেন, "সাংসদের থেকে আশা করেছিলাম জনসংযোগটা ভালো হবে । কিন্তু সেটা করেননি । হাসপাতাল গড়ার ক্ষেত্রে কোনও কাজ করেননি ৷ এলাকায় বিশেষ দেখা যায়নি । জন বারলার উপর মানুষের ক্ষোভ আছে । হিল্লি দিল্লি করে বেড়ান । তবে কেন্দ্রীয় সরকারের একটা হাসপাতাল করছে, এটা একটা ভালো দিক । বাকি কাজে দেখা যায়নি । জনসংযোগ নেই বললেই চলে । রাজ্য সরকার অসহযোগিতা করছে, সেটা তো জনগণকে জানাতে হবে । সেটাও তো জানান না । করোনার সময় আদর্শ গ্রামে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন আটকে দেওয়া হয়েছিল, সেটা খারাপ লেগেছিল ।"

আরও পড়ুন:

  1. ঘাসফুলে ঘেরা বহরমপুরে 'রবিনহুড' অধীরের খতিয়ান
  2. হাইপ্রোফাইল দক্ষিণে উন্নয়ন বনাম বাস্তব, পাঁচ বছরে মালার 'রায়'
  3. শিল্প নেই, বেড়েছে বেকারত্ব-পরিযায়ী শ্রমিক; বালুরঘাটে কী বলছেন সুকান্ত?

আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলার কাজের খতিয়ান

আলিপুরদুয়ার, 19 মার্চ: পাঁচ বছরে প্রতিশ্রুতিমতো কিছুই কাজ করতে পারেননি আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা । এমনই অভিযোগ আলিপুরদুয়ারের আমজনতার । এ দিকে সাংসদ বলছেন রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণে তিনি কাজ করতে পারেননি । আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জন বারলা বিগত পাঁচ বছরে তার সংসদীয় এলাকায় কী কী কাজ করেছেন, আর কী কী কাজ বাকি রয়ে গিয়েছে, সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছে ইটিভি ভারত ৷ কী অভিযোগ আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের ভোটারদের, কী সাফাই সাংসদের আর কী যুক্তি শাসকদলের, সবই তুলে ধরব আপনাদের সামনে ৷

2019 সালে লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী জন বারলা পেয়েছিলেন 7,50,804 ভোট । তৃণমুল কংগ্রেস প্রার্থী দশরথ তিরকে পেয়েছিলেন 506815 ভোট । তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে 243989 ভোটে হারিয়ে জয়ী হন জন বারলা । বিরাট ভোটের ব্যাবধানে জয়ের পর 2021 সালে বিজেপি জন বারলাকে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে বসান ।

আবারও সামনে ভোট ৷ কোন সাংসদ কতটা কাজ করেছেন, চলছে তার হিসেব নিকেশ ৷ আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা জানিয়েছেন, তিনি সাংসদ তহবিল থেকে 9 কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছেন । বাকি টাকা তিনি পাননি । রাজ্য সরকার তাঁর কাজের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট না দেওয়ার ফলে তিনি সাংসদ তহবিলের টাকা পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি । শুধু তাই নয় । তাঁর প্রজেক্ট গুলিকে মান্যতাই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা ।

সাংসদের দাবি, "আলিপুরদুয়ারের জন্য অনেক কিছু করেছি । পাঁচ শতাধিক মানুষকে প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফান্ড থেকে আমরা চিকিৎসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পেরেছি । জলের ব্যবস্থা করেছি । রাস্তাঘাট করেছি । 9 কোটি টাকা খরচ করেছি । বাকি টাকা রাজ্য সরকার খরচ করতে দেয়নি ।বছরে পাঁচ কোটি টাকা পাই, তাতে কিছুই হয় না ৷ আমাকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি । দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের একটা হাসপাতাল হোক আলিপুরদুয়ারে । রাজ্য সরকারের থেকে জমি পাইনি । তাই রেলের জমিতে হাসপাতাল করছি । আলিপুরদুয়ার জেলায় মাদারিহাট, হাসিমারা, আলিপুরদুয়ার, নাগরাকাটায় দূরপাল্লায় ট্রেনের স্টপেজ করা হয়েছে । আলিপুরদুয়ারে বন্দেভারত এক্সপ্রেসের স্টপেজ দেওয়া হয়েছে । চা বাগানের মানুষের অবসরের পর পিএফ পেতে অনেক অসুবিধা হত আধার কার্ডের সমস্যার জন্য । পিএফ অফিসের সঙ্গে কথা বলে প্রত্যেক চা বাগানে ক্যাম্প করে আধার কার্ডের সমস্যার সমাধান করা হয়েছে । চা বাগান এলাকায় পানীয় জলের অনেক সমস্যা ছিল, তার কিছুটা সমাধান করা হয়েছে । সোলার লাইট লাগানো-সহ রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হয়েছে । তুফানগঞ্জ বিধানসভার সোলার লাইট ও রাস্তার ব্যবস্থা হয়েছে । নাগরাকাটা বিধানসভা বিভিন্ন চা বাগানে রাস্তা, ফালাকাটা বিধানসভা, মাদারিহাট এলাকায় পথবাতির ব্যবস্থা, রাস্তা নির্মাণ ।"

কুমারগ্রাম ব্লকে পথ বাতির ব্যবস্থা-সহ বেশকিছু ট্রেনের স্টপেজের ব্যবস্থাও জন বারলা করেছেন বলে জানান । যেমন, নাগরাকাটা ষ্টেশনে সিকিম মহানন্দা এক্সপ্রেস, বামনহাট শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের স্টপেজ, মাদারিহাট স্টেশনে শিয়ালদা থেকে আলিপুরদুয়ারগামী কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসের স্টপেজ ।

তাঁর দাবি, "সেবকে তিস্তা নদীর উপর দ্বিতীয় সেতুর ব্যবস্থা করেছি । তাতে পাহাড় ও ডুয়ার্সের যোগাযোগ ভালো হবে । ধুবরি শিলিগুড়ি ডিইএমইউ ট্রেনের স্টপেজ হ্যামিল্টনগঞ্জ স্টেশনে দেওয়া হয়েছে । আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে প্রচুর ট্রেনের স্টপেজ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি হাসিমারাতে এয়ারপোর্ট গড়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে জমি চাওয়া হয়েছে কিন্তু রাজ্যের সদিচ্ছা না থাকার কারণে কাজটা এগোনো যায়নি । রাজ্য সরকার সহযোগিতা না-করার জন্য আদর্শ গ্রামের জন্য ভালো কিছু করা যায়নি । আমি বান্দাপানী চা বাগান দত্তক নিয়েছিলাম বলে আমাকে কোনও কাজই করতে দেওয়া হয়নি । তাই সোলার লাইট-সহ জলের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছি । এখনও টাকা চাইলে টাকা দিচ্ছে না ।"

আলিপুরদুয়ারের সাংসদ শাসকদলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করলেও তা উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল ৷ আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা শিক্ষক নেতা ভাস্কর মজুমদার বলেন, "সাংসদ জন বারলা কী কাজ করতে পেরেছেন সেটা অবাস্তব প্রশ্ন । আমরা দেখতে পারিনি কী কাজ করেছেন । অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে কাজ খতিয়ে দেখতে হবে । কাজ করেননি বলেই তাঁর টিকিট কেটে গিয়েছে । তিনি যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার কিছুই করতে পারেননি ৷ বীরপাড়াতে রেলের উপর ফ্লাইওভার করবেন বলেছিলেন, করতে পারেননি । হাসিমারাতে এয়ারপোর্ট করতে পারেননি । কেন্দ্রীয় সরকারের হাসপাতাল করবেন বলেছিলেন সেটাও করতে পারেননি । যদি হাসপাতালটা করে দিতে পারে ভালো হয় । আমরাও সাধুবাদ জানাব । আমরাও উন্নয়ন চাই । সম্পত্তি করেছেন এটা ঠিক । সাংসদ বান্দাপানী চা বাগানকে দত্তক নিয়েছিলেন সেই বাগানেও যাননি । চা শ্রমিকদের বাড়ি ঘর নেই, জমির অধিকারের বিষয়ে ঠিক করা যায়নি । পাঁচ বছরে কোনও কাজই হয়নি আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে ৷"

আলিপুরদুয়ারের সমাজকর্মী রাতুল বিশ্বাসের মুখেও সাংসদের কাজে বেশ হতাশ ৷ তিনি বলেন, "উত্তরবঙ্গ বরাবরই বঞ্চিত । আর আলিপুরদুয়ার আরও বঞ্চিত । সাংসদ আমাদের মন্ত্রীও হলেন । কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হলেন, ফলে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল । আমরা যা আশা করেছিলাম তা কিন্তু হল না ।সাংসদের সেই অংশে কোনও কাজ করেননি । রেলের জায়গায় হাসপাতাল করা হবে বলেছিলেন কিন্তু আজও হল না । হাসিমারা এয়ারপোর্ট করার দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের, সেটা তিনি করতে পারেননি । সাংসদ হিসেবে তাঁর সাফল্য কতটা বা ব্যর্থতা কতটা জানি না । জেলা সদরে একটা অফিস প্রয়োজন ছিল সেটাও তিনি পুরোপুরি করেননি ।"

আলিপুরদুয়ারের প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বোস বলেন, "সাংসদের থেকে আশা করেছিলাম জনসংযোগটা ভালো হবে । কিন্তু সেটা করেননি । হাসপাতাল গড়ার ক্ষেত্রে কোনও কাজ করেননি ৷ এলাকায় বিশেষ দেখা যায়নি । জন বারলার উপর মানুষের ক্ষোভ আছে । হিল্লি দিল্লি করে বেড়ান । তবে কেন্দ্রীয় সরকারের একটা হাসপাতাল করছে, এটা একটা ভালো দিক । বাকি কাজে দেখা যায়নি । জনসংযোগ নেই বললেই চলে । রাজ্য সরকার অসহযোগিতা করছে, সেটা তো জনগণকে জানাতে হবে । সেটাও তো জানান না । করোনার সময় আদর্শ গ্রামে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন আটকে দেওয়া হয়েছিল, সেটা খারাপ লেগেছিল ।"

আরও পড়ুন:

  1. ঘাসফুলে ঘেরা বহরমপুরে 'রবিনহুড' অধীরের খতিয়ান
  2. হাইপ্রোফাইল দক্ষিণে উন্নয়ন বনাম বাস্তব, পাঁচ বছরে মালার 'রায়'
  3. শিল্প নেই, বেড়েছে বেকারত্ব-পরিযায়ী শ্রমিক; বালুরঘাটে কী বলছেন সুকান্ত?
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.