ETV Bharat / politics

একশো দিনের টাকা নিয়ে আইনি পথে কেন হাঁটছে না রাজ্য, প্রশ্ন তুলল সিপিএম

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 28, 2024, 8:36 PM IST

CPIM on MGNREGA Dues
CPIM on MGNREGA Dues

CPIM on MGNREGA Dues: একশো দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এই নিয়ে রাজ্য কেন আইনি পথে হাঁটছে না, সেই প্রশ্ন তুলল সিপিএম ৷ বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম নেতা অমিয় পাত্র ৷

একশো দিনের টাকা নিয়ে আইনি পথে কেন হাঁটছে না রাজ্য, প্রশ্ন তুলল সিপিএম

কলকাতা, 28 ফেব্রুয়ারি: একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বরাদ্দ বকেয়া পড়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ৷ কেন্দ্রের দাবি, রাজ্যের গাফিলতিতেই টাকা দেওয়া হচ্ছে না ৷ উলটোদিকে রাজ্য সরকার ও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বলছে, বাংলাকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র ৷ এই নিয়ে আন্দোলন চলছে ৷ রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল বকেয়া অর্থ জবকার্ড হোল্ডারদের দিতেও শুরু করেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের থেকে টাকা আদায়ে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিপিএম ৷

বুধবার সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘কেন্দ্রের আইনি বাধ্যবাধকতা ১০০ দিনের কাজ দেওয়া, সেটা আইনি পথে রাজ্য মোকাবিলা করছে না কেন ?’’ পাশাপাশি তাঁর আরও প্রশ্ন, কেন্দ্রের প্রকল্পের ধাঁচে রাজ্য সরকার যে প্রতি বছর ন্যূনতম 50 দিন কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেটাই বা কোথায় পালন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

একশো দিনের কাজ প্রসঙ্গে অমিয় পাত্র আরও বলেন, ‘‘রাজ্যে মনরেগার কাজ দু’বছর বন্ধ রয়েছে । যে অভিযোগের ভিত্তিতে কাজ বন্ধ, তার নিষ্পত্তি হয়নি । তছরুপ হওয়া তহবিল উদ্ধার হয়নি এবং দুর্নীতির সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি ।’’ কেন্দ্রীয় বকেয়া নিয়ে একই কথা অবশ্য বিজেপিও বলছে ৷

তবে অমিয় পাত্র একশো দিনের বকেয়া মেটানো নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘মনরেগার কাজের বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ রাজ্য সরকার গ্রহণ করেছে । দেরিতে হলেও প্রাপ্য মজুরি শ্রমিকরা পাবেন এটা ভালো ।’’

অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘মনরেগার কাজের বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ রাজ্য সরকার গ্রহণ করেছে । দেরিতে হলেও প্রাপ্য মজুরি শ্রমিকরা পাবেন এটা ভালো । মনরেগার আইনে বলা আছে, কাজ করার 15 দিনের মধ্যে মজুরি মিটিয়ে দিতে হবে । অন্যথায় প্রাপ্য মজুরির উপর দু’বছরের সুদ-সহ মেটাতে হবে । আইনের সংস্থান থাকা সত্ত্বেও সুদের টাকা দেওয়া হচ্ছে না কেন ?’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রথমে বলা হয়েছিল 21 লক্ষ মজুরের বকেয়া দেওয়া হবে, সেটা বাড়তে বাড়তে 59 লক্ষে পৌঁছেছে । গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে নথিপত্র আছে । সেই নথির ভিত্তিতে তালিকা করা হলে এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে সংখ্যা বাড়তে পারে না । আমাদের দাবি, স্বচ্ছতার জন্য পঞ্চায়েত ভিত্তিক বকেয়া মজুরি প্রাপকের তালিকা প্রকাশ করা হোক । 2022-23 সালে 82.5 লক্ষ জবকার্ড শ্রমিকদের নিষ্ক্রিয় বলে চিহ্নিত করা হয়েছে । প্রায় 20 লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড বাতিল হয়েছে । তাহলে প্রাপক সংখ্যা কিভাবে বাড়তে পারে ?’’

এ দিন অমিয় পাত্রর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক তথা সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক নিরাপদ সরদার ও রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ । তাঁরা জানান, আগামিকাল থেকে রাজ্যে জুড়ে কেড়ে নেওয়া জমি আদায়ের আন্দোলন শুরু করছে সিপিএম তথা খেতমজুর সংগঠন । রাজ্যজুড়ে ব্লক অফিসে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে একাধিক দাবিতে । আর খেতমজুর সংগঠনের আন্দোলনে সন্দেশখালির নেতৃত্বে থাকবেন নিরাপদ সরদার ।

সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক বলেন, "জমি কেড়ে নেওয়ার ঘটনা শুধু সন্দেশখালিতে নয় রাজ্যজুড়ে ঘটছে । সরকারি মদতেই জমি হাঙরদের দাপট বেড়ে চলেছে । এদের স্বার্থে জমির মালিকানার ঊর্ধ্বসীমা পরিবর্তন বা ভূমি সংস্কার আইনে পরিবর্তন করা হয়েছে । ভূমিসংস্কার বিভাগের অফিসগুলো দুর্নীতির কারখানায় পরিণত হয়েছে । জমির মালিকানা সংক্রান্ত নথিপত্র রাতারাতি বদলে যাচ্ছে । বর্গাদার, পাট্টাদার, আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়ার ঘটনা আকছার ঘটে চলেছে । সমস্ত কেড়ে নেওয়া অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সন্দেশখালি থেকেই শুরু হোক । সন্দেশখালি-সহ সাধারণ মানুষের, প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে । অবিলম্বে সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান-সহ সমস্ত অত্যাচারী, লুটেরাদের গ্রেফতার করতে হবে ।"

আরও পড়ুন:

  1. ইনসাফ যাত্রা থেকে সন্দেশখালি, লোকসভার বৈতরণী পেরোতে 'অকুতোভয়' মীনাক্ষী-ই মুখ বামেদের
  2. যুব সমাজের মেরুদণ্ড ভাঙতে চাইছেন মমতা, জামিনে মুক্ত হয়ে বিস্ফোরক নিরাপদ
  3. ঘুরপথে সন্দেশখালিতে বাম-বুদ্ধিজীবীরা, ন্যাজাটে কংগ্রেসকে বাধা পুলিশের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.