ETV Bharat / politics

ইনসাফ যাত্রা থেকে সন্দেশখালি, লোকসভার বৈতরণী পেরোতে 'অকুতোভয়' মীনাক্ষী-ই মুখ বামেদের

Minakshi Mukherjee: নন্দীগ্রামের স্মৃতি উসকে সম্প্রতি সন্দেশখালির বাসিন্দাদের 'মসিহা' হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে বামেদের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে ৷ আগামীতে রাজ্য-রাজনীতিতে কতটা ছাপ রাখতে পারবেন তিনি তা অজানা, তবে জননেত্রী হওয়ার সমস্ত রসদ যে মীনাক্ষীর মধ্যে রয়েছে; সে ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 27, 2024, 11:15 PM IST

Etv Bharat
Etv Bharat
মীনাক্ষীই মুখ বামেদের

কলকাতা, 27 ফেব্রুয়ারি: গণঅভ্যুত্থান রাজনীতিতে নায়কের জন্ম দেয় ৷ নন্দীগ্রামে গণঅভ্যুত্থান বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেমন প্রতিষ্ঠা করেছিল, তেমনই ছকে দিয়েছিল শাসক হিসেবে মমতার রাস্তা ৷ জমি জবরদখলের অভিযোগ সামনে এনে একইভাবে সন্দেশখালিতে গণঅভ্যুত্থান দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা ৷ নন্দীগ্রামের স্মৃতি উসকে সম্প্রতি সন্দেশখালির বাসিন্দাদের 'মসিহা' হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে বামেদের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে ৷ আগামীতে রাজ্য-রাজনীতিতে কতটা ছাপ রাখতে পারবেন তিনি তা অজানা, তবে জননেত্রী হওয়ার সমস্ত রসদ যে মীনাক্ষীর মধ্যে রয়েছে; সে ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল ৷

আর ঠিক সেই কারণেই পক্ককেশী বামেদের দুঁদে নেতৃত্ব সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিগেডে ডিওয়াইএফআই'য়ের সমাবেশে মঞ্চের নীচ থেকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছে কুলটির মেয়ের ভাষণ ৷ সেই মঞ্চেই নজরুলের 'বিদ্রোহী' পাঠ করতে গিয়ে থমকেছিলেন মীনাক্ষী ৷ কিন্তু ধক নিয়ে ভরা সমাবেশে জানিয়েছিলেন, ভুলে গেছি ৷

সেই একই ধক নিয়েই সম্প্রতি মুখ ঢেকে, বেশভূষা বদলে মীনাক্ষী পৌঁছে গিয়েছিলেন সন্দেশখালির নির্যাতিত-প্রতারিতদের কাছে ৷ যেমনটা দেড় দশক আগে পুলিশের দুর্ভেদ্য নজর এড়িয়ে নন্দীগ্রামে পা রেখেছিলেন মমতা ৷ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে অন্যান্য দলীয় নেতারা যখন সন্দেশখালির বহু দূরে থমকেছেন সেখানে সব বাধা পেরিয়ে ঢুকে গেছেন মীনাক্ষী। পরবর্তী সময় এসপি অফিসে ও পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে শুরু করে পুলিশকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মীনাক্ষী। ব্রিগেড সমাবেশের আগে খোদ বিমান বসুকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ক্যাপ্টেনের ডাক ব্রিগেড যাবেন।

এ বিষয়ে বলতে গিয়ে বিশিষ্ট অধ্যাপক পার্থ প্রতিম বিশ্বাস জানান, মীনাক্ষীরা চাইছেন সন্দেশখালি মানুষের কথা সকলের কাছে তুলে ধরতে। আর শাসক চাইছে যাতে যন্ত্রণার আওয়াজ মিশে যায় কীর্তনে। এই পরিস্থিতিতে মীনাক্ষীরা যা করছে সেটা ইতিহাসের অংশ হিসেবে থাকবে। আমরা একটা বড় যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। যে কোনও রাজনৈতিক দলে মুখ বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু সেটা দক্ষিণপন্থী দলে যেভাবে তৈরি হয় বামপন্থী দলে তেমনটা হয় না। বাম দলে নেতৃত্ব পারিবারিক সূত্রে হাইজ্যাক করা যায় না। সংগঠিত রাজনৈতিক দলে সিঁড়ি ভেঙে এগোতে হয়। স্বভাবতই গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে যাঁরা উঠে আসেন মানুষের মধ্যে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা যুগকালের নিরিখে বেশি হয়ে থাকে।

তেমনই মীনাক্ষীর মধ্যে সম্ভাবনার বীজ দেখতে পেয়েছে বাম নেতৃত্ব ৷ তাই গত বিধানসভা নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরেও ইনসাফ যাত্রা থেকে শুরু করে নবান্ন অভিযান; বারবার ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদিকাকেই সামনে ঠেলে দিয়েছে তারা ৷ সুতরাং, মুখে না-বললেও লোকসভা নির্বাচনের আগে সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের মতোই বিধানসভায় 'শূন্য' বামেদের মুখও যে মীনাক্ষীই, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ৷

আরও পড়ুন:

  1. পুলিশি নজর এড়িয়ে সন্দেশখালির অশান্ত এলাকায় ঘুরলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়
  2. সভা শেষে ব্রিগেডে বুদ্ধবার্তা ও সংবিধানের পাঠ পড়ালেন 'ক্যাপ্টেন' মীনাক্ষী

মীনাক্ষীই মুখ বামেদের

কলকাতা, 27 ফেব্রুয়ারি: গণঅভ্যুত্থান রাজনীতিতে নায়কের জন্ম দেয় ৷ নন্দীগ্রামে গণঅভ্যুত্থান বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেমন প্রতিষ্ঠা করেছিল, তেমনই ছকে দিয়েছিল শাসক হিসেবে মমতার রাস্তা ৷ জমি জবরদখলের অভিযোগ সামনে এনে একইভাবে সন্দেশখালিতে গণঅভ্যুত্থান দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা ৷ নন্দীগ্রামের স্মৃতি উসকে সম্প্রতি সন্দেশখালির বাসিন্দাদের 'মসিহা' হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে বামেদের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে ৷ আগামীতে রাজ্য-রাজনীতিতে কতটা ছাপ রাখতে পারবেন তিনি তা অজানা, তবে জননেত্রী হওয়ার সমস্ত রসদ যে মীনাক্ষীর মধ্যে রয়েছে; সে ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল ৷

আর ঠিক সেই কারণেই পক্ককেশী বামেদের দুঁদে নেতৃত্ব সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিগেডে ডিওয়াইএফআই'য়ের সমাবেশে মঞ্চের নীচ থেকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছে কুলটির মেয়ের ভাষণ ৷ সেই মঞ্চেই নজরুলের 'বিদ্রোহী' পাঠ করতে গিয়ে থমকেছিলেন মীনাক্ষী ৷ কিন্তু ধক নিয়ে ভরা সমাবেশে জানিয়েছিলেন, ভুলে গেছি ৷

সেই একই ধক নিয়েই সম্প্রতি মুখ ঢেকে, বেশভূষা বদলে মীনাক্ষী পৌঁছে গিয়েছিলেন সন্দেশখালির নির্যাতিত-প্রতারিতদের কাছে ৷ যেমনটা দেড় দশক আগে পুলিশের দুর্ভেদ্য নজর এড়িয়ে নন্দীগ্রামে পা রেখেছিলেন মমতা ৷ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে অন্যান্য দলীয় নেতারা যখন সন্দেশখালির বহু দূরে থমকেছেন সেখানে সব বাধা পেরিয়ে ঢুকে গেছেন মীনাক্ষী। পরবর্তী সময় এসপি অফিসে ও পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে শুরু করে পুলিশকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মীনাক্ষী। ব্রিগেড সমাবেশের আগে খোদ বিমান বসুকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ক্যাপ্টেনের ডাক ব্রিগেড যাবেন।

এ বিষয়ে বলতে গিয়ে বিশিষ্ট অধ্যাপক পার্থ প্রতিম বিশ্বাস জানান, মীনাক্ষীরা চাইছেন সন্দেশখালি মানুষের কথা সকলের কাছে তুলে ধরতে। আর শাসক চাইছে যাতে যন্ত্রণার আওয়াজ মিশে যায় কীর্তনে। এই পরিস্থিতিতে মীনাক্ষীরা যা করছে সেটা ইতিহাসের অংশ হিসেবে থাকবে। আমরা একটা বড় যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। যে কোনও রাজনৈতিক দলে মুখ বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু সেটা দক্ষিণপন্থী দলে যেভাবে তৈরি হয় বামপন্থী দলে তেমনটা হয় না। বাম দলে নেতৃত্ব পারিবারিক সূত্রে হাইজ্যাক করা যায় না। সংগঠিত রাজনৈতিক দলে সিঁড়ি ভেঙে এগোতে হয়। স্বভাবতই গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে যাঁরা উঠে আসেন মানুষের মধ্যে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা যুগকালের নিরিখে বেশি হয়ে থাকে।

তেমনই মীনাক্ষীর মধ্যে সম্ভাবনার বীজ দেখতে পেয়েছে বাম নেতৃত্ব ৷ তাই গত বিধানসভা নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরেও ইনসাফ যাত্রা থেকে শুরু করে নবান্ন অভিযান; বারবার ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদিকাকেই সামনে ঠেলে দিয়েছে তারা ৷ সুতরাং, মুখে না-বললেও লোকসভা নির্বাচনের আগে সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের মতোই বিধানসভায় 'শূন্য' বামেদের মুখও যে মীনাক্ষীই, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ৷

আরও পড়ুন:

  1. পুলিশি নজর এড়িয়ে সন্দেশখালির অশান্ত এলাকায় ঘুরলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়
  2. সভা শেষে ব্রিগেডে বুদ্ধবার্তা ও সংবিধানের পাঠ পড়ালেন 'ক্যাপ্টেন' মীনাক্ষী
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.