ETV Bharat / state

"শয়তান পুলিশ অফিসারদের শেষ দেখে ছাড়ব", হুঁশিয়ারি দিলীপের

author img

By

Published : Oct 4, 2020, 7:15 PM IST

Dilip Ghosh
Dilip Ghosh

তৃণমূলের লাগামছাড়া সন্ত্রাসের প্রতিরোধ করতে কর্মীদের ডান্ডা তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, "এখন আর শুধু ঝান্ডা নিয়ে যাবেন না । ডান্ডাটা সঙ্গে নিয়ে যাবেন । একটা দিলে সঙ্গে দুটো ফেরত দিয়ে বাড়ি আসবেন ।"

ময়না, 4 অক্টোবর : পুলিশকে শয়তান বললে আক্রমণ করলেন BJP-এর রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ । রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়নাতে কৃষি আইনের সমর্থনে তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন । আর সেখানেই রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে পুলিশকে শয়তান বলে দেখে নেওয়ার হুমকি দিলেন দিলীপ ঘোষ । প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ময়নার খুন হওয়া BJP কর্মী দীপক মণ্ডলের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, "আমাদের বাড়ির জলজ্যান্ত যুবক ছেলে খুন হয়ে যাচ্ছে । কিন্তু খুনিদের ধরা হচ্ছে না । উলটে যাঁরা প্রতিবাদ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে মার্ডার কেস দেওয়া হচ্ছে । আমাদের মায়েরা খুনি ? কোন শয়তান পুলিশ অফিসার তাঁদের নামে FIR করে দিয়েছে । তাদের শেষ দেখে ছাড়ব । আজ হোক, কাল হোক পুরো হিসাব নেব।"

রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়নায় নয়া কৃষি আইনের সমর্থনে প্রায় 5 কিলোমিটার পদযাত্রা করেন দিলীপ ঘোষ । যেখানে কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক পা মেলান । পদযাত্রা শেষে বক্তব্য রাখেন তিনি । আর সেখানেই চাঁচাছোলা ভাষায় তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন দিলীপ । বলেন, "আজ একটা জলজ্যান্ত যুবক ছেলেকে মেরে ফেলা হল । তার অপরাধ ছিল সে BJP করত । 120 জন এরকম কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে যাদের দোষ ছিল তারা BJP করত ।" তিনি আরও বলেন, "আজকে দিদিমণির সঙ্গে সাধারণ কোনও মানুষ নেই । ভগবানও নেই, নেই কর্মীরাও । একজন আছেন প্রশান্ত কিশোর তিনি বিহার থেকে আসছেন । উনি নাকি একমাত্র আছেন আর কেউ নেই ।"

তৃণমূলের লাগামছাড়া সন্ত্রাসের প্রতিরোধ করতে কর্মীদের ডান্ডা তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, "এখন আর শুধু ঝান্ডা নিয়ে যাবেন না । ডান্ডাটা সঙ্গে নিয়ে যাবেন । একটা দিলে সঙ্গে দুটো ফেরত দিয়ে বাড়ি আসবেন । এতদিন ওরা আমাদের মারত আমরা হাসপাতালে যেতাম। থানায় যেতাম । কেসও নিত না । এখন থানা-হাসপাতালে আমরা আর যাব না । ওদের পাঠিয়ে দিচ্ছি । যদি কেউ এখনও সেই অভ্যাসটা না পালটায় BJP-কে মেরে আটকে দেবে ভাবে কপালে কষ্ট আছে । আমিও কিছু করতে পারব না । এতদিন মেরেছে লোকে তো সুদ সমেত ফেরত দিয়ে দেবে তখন কী হবে ? হাসপাতালে গেলে ডাক্তার নেই নার্স নেই ভগবান ছাড়া কেউ বাঁচাতে পারবে না তখন কী হবে । আমরা কোনও গন্ডগোলে নেই, মারপিটে নেই । এতদিন সহ্য করেছি একশো কুড়ি জন কর্মীকে হারিয়েছি । কয়েক হাজার ছেলে আমাদের জেলে রয়েছে মিথ্যা কেস দিয়েছে ।"

এছাড়াও রেশনের চাল দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "মোদিজি সমস্ত মানুষকে ফ্রিতে রেশন দিয়েছেন । অনেকে পাননি । বলছে ছোটো কার্ড দেব না, বড় কার্ডে দেব না, স্লিপে দেব না । একটা লোক পেয়েছে পাঁচটা লোক পায়নি । মোদিজি ফ্রিতে পাঠাচ্ছেন সেই চাল মাঝখান থেকে ঝেড়ে দিল । পোকায় খাওয়া চাল বস্তায় ঢুকিয়ে ভালো চাল ওড়িশায় চলে গেল । বাংলাদেশে চলে গেল । আমাদের পেট কেটে এরা টাকা খেয়েছে । আমফান হল । মোদিজি এলেন দিদিমণি হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরিয়ে দেখালেন কত ক্ষতি হয়েছে । টাকা চাইতে এক হাজার কোটি টাকা তিনি দিয়ে গেলেন সেই টাকা কোথায় গেল ? যার বাড়ি ভেঙে গিয়েছে সে পায়নি যার দোতলা তিনতলা বাড়ি আছে সে পেয়েছে কারণ সে তৃণমূলের নেতা । তৃণমূলের অফিসে বসে লিস্ট তৈরি হয়েছে । কার ভাই, কার ভাইপো, কার বউ, সবার নাম চলে এসেছে তালিকায় । সঙ্গে সঙ্গে টাকা চলে গেল । গরিব মানুষ যার বাড়ি ভেঙে গেছে যেমন কে তেমন। আর তৃণমূলের নেতারা বাড়ি পেয়ে গেল । প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রত্যেকটি গরিব মানুষের মাথার উপরে পাকা ছাদ করে দেবেন 2022-এর আগে । লিস্ট বেরিয়েছে কেবলমাত্র তৃণমূলের যারা লোক তারাই বাড়ি পেয়েছে । তাও যারা বাড়ি পেয়েছে তাদের কাছ থেকে কুড়ি হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে । ওরা বলছে ঠিক আছে তৃণমূল করেছি তাও ছাড়লি না । এবার ভোটটা আসুক দেব বুঝিয়ে ভালো করে । আর দুই ফুল নয়, কেবল এক ফুলে ভোট দেব । সব হিসাব বরাবর হয়ে যাবে । এরকম লুট আমরা আগে কখনও দেখিনি । তাই সারা বাংলার মানুষ ক্ষেপে গিয়েছেন । আমরা যখন রাস্তায় নামছি হাজার হাজার লোক আমাদের সাথে আসছে । তাই আমাদের মিটিং মিছিল করতে দিচ্ছে না । আটকাচ্ছে।"

এছাড়াও তিনি বলেন, "কেউ যদি মনে করে এই ময়নার বাকচা অঞ্চলে কেউ যখন তখন বোম বন্দুক এনে আপনাদের আক্রমণ করবে এবং পুলিশ গাড়ি নিয়ে এসে মায়েদের তুলে নিয়ে যাবে । তাহলে খুব ভুল ভাবছে । আজ আর ভয় দেখানোর কেউ নেই । যারা ভয় দেখাত তারা আজ বাড়ি ছাড়া । তাদের বাড়িতে আজ পুলিশ বসে আছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.