ETV Bharat / state

Midnapore Medical College : আয়া দৌরাত্ম্যে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে বিক্ষোভ রোগীর আত্মীয়দের

author img

By

Published : Oct 30, 2021, 11:58 AM IST

মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে আয়াদের অহেতুক মোট অঙ্কের টাকা চাওয়ার অভিযোগে সরব রোগীর আত্মীয়রা
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে আয়াদের অহেতুক মোট অঙ্কের টাকা চাওয়ার অভিযোগে সরব রোগীর আত্মীয়রা

ভর্তি হওয়া থেকে ডিসচার্জ পর্যন্ত প্রসূতি মায়ের প্রতিটি কাজ করতে মোটা অঙ্কের টাকা নিচ্ছেন আয়ারা ৷ টাকা না দিলে বাচ্চা মরে যাবে বলেও হুমকি দিচ্ছেন তাঁরা ৷ এই ঘটনার বিরুদ্ধে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন রোগীর আত্মীয়রা ৷ কী অভিযোগ জানাচ্ছেন তাঁরা ? কত টাকা বা দাবি করছেন আয়ারা ?

মেদিনীপুর, 30 অক্টোবর : ছেলে হয়েছে না মেয়ে, তা জানতে গেলে লাগছে 500 টাকা ৷ রোগীকে স্ট্রেচারে তুলে ওটিতে নিয়ে যেতে দিতে হচ্ছে 300 টাকা ৷ এরপর স্যালাইন চালানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ তো রয়েছেই ৷ প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রেই দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা ৷ না কোনও বেসরকারি নার্সিং হোম নয়, এই চিত্র মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগের ৷ এভাবেই দফায় দফায় রোগীর পরিবারের থেকে টাকা চাইছেন রোগীদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়ারা ৷ টাকা না দিলে কখনও বাচ্চা মরে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তো কখনও ডাক্তার ছুটি দেওয়ার পরেও রোগীর পরিচয়পত্র অর্থাৎ আধার কার্ড ও শিশুর টিকাকরণের কার্ড আটকে রাখছেন তাঁরা ৷

রোগীর যাতে কোনওরকম অযত্ন না হয় তাই বাধ্য হয়েই আয়াদের মোটা অঙ্কের দাবি মেটাতে বাধ্য হচ্ছেন পরিবারের লোকজন ৷ কখনও কখনও প্রসূতি মায়ের ও বাচ্চার কথা ভেবে সঙ্গে থাকা গয়নাগাটিও বিক্রি করে টাকা তুলে দিচ্ছেন আয়াদের হাতে ৷ বেশ কয়েকদিন ধরে হাসপাতাল সুপারের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও লাভ না হওয়ায় শুক্রবার রাতে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান রোগীর আত্মীয়রা ৷

আরও পড়ুন : Fraud Case: মেদিনীপুর পোস্ট অফিসে দালাল চক্র চালানোর অভিযোগে ধৃত 1

গর্ভবতী স্ত্রীকে ভর্তি করিয়েছিলেন দিন তিনেক আগে ৷ ছেলে হওয়ার পর থেকে আয়াদের দাবি মেটাতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন বাচ্চার বাবা মনোজ চোংদার ৷ তাঁর কথায়, "রাত আড়াইটে নাগাদ সিজার হওয়ার পর সাড়ে তিনটের সময় আয়া এসে বলে বাচ্চা হয়েছে ৷ কিন্তু ছেলে না মেয়ে তা জানতে গেলে 500 টাকা লাগবে ৷ তাই দিয়েছি ৷ বাচ্চা হওয়ার পর ওটি থেকে স্ট্রেচারে করে বেডে দেবে, তাতেও টাকা চাইছে ৷ আমার বৃদ্ধা মা তিনতলা থেকে নেমে এসেছেন আমার কাছে টাকা চাইতে, নাহলে বাচ্চা ও তার মাকে বেডে দেবে না ৷ বাচ্চা তখন ঠকঠক করে কাঁপছে ঠান্ডায় ৷ তাতেও ওরা টাকা ছাড়া কাজ করবে না ৷ এইভাবে প্রতিটা কাজের জন্য টাকা চাইছে ৷ হাসপাতাল সুপারকে জানালে তাঁরা বলছেন লিখিত অভিযোগ জমা দিতে ৷ কিন্তু অসুস্থ স্ত্রী ও সন্তান এখনও ভর্তি হাসপাতালে, আয়ারা যদি তাদের কোনও ক্ষতি করে দেয় তাহলে তার দায় কে নেবে ?"

আরও পড়ুন : Physical Assault : বাড়িতে ঢুকে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে শারীরিক নিগ্রহ, অভিযুক্ত পলাতক

আরেক রোগীর আত্মীয় জানান, প্রসবের পর শারীরিক সমস্যা নিয়ে বাচ্চা-সহ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে স্ত্রী ৷ কিন্তু দফায় দফায় আয়াদের টাকা দিতে গিয়ে বাচ্চা ও তার মায়ের গা থেকে যাবতীয় গয়না খুলে বিক্রি করতে হচ্ছে ৷ টাকা পয়সা তেমন নেই বলেই সরকারি হাসপাতালে আসা ৷ কিন্তু এখানেও যদি দালালচক্র চলে তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায় ?

সকলের কাছ থেকেই এমন মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান একাধিক রোগীর আত্মীয়রা ৷ তাঁদের অভিযোগ, সবাই সবটা জানেন তবুও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না ৷ আর রোগীর ক্ষতি হওয়ার ভয়ে তাঁরা নিজেরাও লিখিত অভিযোগ দিতে পারছেন না ৷

আরও পড়ুন : Pandemic Crisis : লকডাউনে উঠেছে শাড়ি ব্যবসা, সংসার টানতে মেদিনীপুর শহরে টোটো চালান শ্বেতা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.