ETV Bharat / state

প্রতিবন্ধকতা কেড়েছে আধার তৈরির সুযোগ, পাশে "নেই" প্রশাসন

author img

By

Published : Mar 7, 2020, 11:49 PM IST

Updated : Mar 7, 2020, 11:57 PM IST

aa
প্রশান্ত পূজারী ও অর্জুন দাস

সম্পূর্ণভাবে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় আধার কার্ড তৈরি করা যাচ্ছে না ৷ প্রশাসন থেকে কোনওরকম সাহায্যও পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ৷ আধার কার্ড না তৈরি হওয়ায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চন্দ্রকোনার এক যুবক ও এক নাবালক ৷

চন্দ্রকোনা, 7 মার্চ : সম্পূর্ণভাবে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ৷ রেটিনা স্ক্যানও করা যাচ্ছে না ৷ নেওয়া যাচ্ছে না আঙুলের ছাপও ৷ তাই তৈরি হচ্ছে না আধার কার্ড ৷ আধার কার্ড না থাকার ফলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খোলা যায়নি ৷ মিলছে না প্রশাসনিক তরফে কোনওরকম সাহায্যও ৷ আর এর জেরেই বছরের পর বছর ধরে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চন্দ্রকোনার বছর 24-এর প্রশান্ত পূজারি ও বছর 13-র অর্জুন দাস ৷ আর্থিকভাবে দুর্বল তাদের পরিবার ৷ দু'জনেই চন্দ্রকোনার কুয়াপুর এলাকার বাসিন্দা ৷

প্রশান্ত ও অর্জুনের পরিবারের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভালো নয় ৷ এদিকে তারা দু'জনই 92 শতাংশ শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ৷ চেন দিয়ে বেঁধে রাখতে হয় প্রশান্তকে ৷ মানসিক ভারসাম্যহীন দুু'জনই ৷ সেই কারণে আধার তৈরির ক্ষেত্রে দু'জনের রেটিনা স্ক্যান করা সম্ভব হচ্ছে না ৷ প্রতিবন্ধী হওয়ায় নেওয়া যাচ্ছে না আঙুলের ছাপও ৷ এই অবস্থায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে সরকারি সাহায্যও পাচ্ছেন না তাদের পরিবার ৷ আধারকার্ড না থাকায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খোলা যাচ্ছে না ৷ কারণ নিয়ম অনুযায়ী কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলেই থাকতে হবে আধার কার্ড । প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকার থেকে আর্থিক সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক ৷

অর্জুন দাসের বাবা রাজু দাস জানিয়েছেন, "আধার কার্ডের সমস্যার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছি না ৷ সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ৷" অর্জুন দাসের ঠাকুমা সুমি দাসও জানিয়েছেন একই কথা ৷ "আধার কার্ড পায়নি অর্জুন ৷ কোনওরকম সরকারি সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছি না ৷ ভাতাও পায়নি ৷ সরকার থেকে সাহায্য মিলেছে না ৷ প্রশাসন থেকে কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ৷" প্রশান্ত পূজারির মা ছবি পূজারি জানিয়েছেন, "ভিক্ষা করে আমাদের দিন চলে ৷ আমার ছেলের আধার কার্ড তৈরি করতে পারিনি ৷ 10 বছর ধরে চেন দিয়ে বেঁধে রাখতে হয় ওকে৷ কারও থেকে কোনওরকম সাহায্য মিলছে না ৷ পার্টি অফিস থেকেও মেলেনি সাহায্য ৷ গ্রামে গ্রামে যারা আধারকার্ড তৈরি করতে আসে তাঁরাও আসেননি ৷ ওকে যেহেতু সবসময় চেন দিয়ে বেঁধে রাখতে হয় তাই আধার কার্ড পরিষেবা কেন্দ্রও যেতে পারছি না ৷ প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিষয়টি জানানো হলেও তাঁরা কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করছেন না ৷ "

শুনুন অর্জুন ও প্রশান্তের বাবা ও মায়ের বক্তব্য

সমস্যা মেনে নিয়েছেন চন্দ্রকোনার BDO শাশ্বত প্রকাশ লাহিড়ী ৷ তিনি জানান, "আর্থিকভাবে যতটা সম্ভব ততটা সাহায্য করা হচ্ছে ওই দুই পরিবারকে ৷ কিন্তু ওদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে রেটিনা ও আঙুলের ছাপ নেওয়া যাচ্ছে না ৷ তাই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খোলা যাচ্ছে না ৷ আর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সরকারি সুবিধাগুলো পাওয়া যায় না৷ ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে ৷ সমস্যা মেটাতে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷"

Last Updated :Mar 7, 2020, 11:57 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.