ETV Bharat / state

পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতি নির্মম সরকার, প্রতিবাদে অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে মিছিল

author img

By

Published : Dec 6, 2019, 5:26 AM IST

অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে মিছিল
অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে মিছিল

পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতি সরকারের একেবারেই নমনীয়, সংবেদনশীল নয় । অনশনের এতদিন পার হয়ে গেলেও কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি সরকারের পক্ষ থেকে । এই অভিযোগেই গতকাল পথে নামে বেঙ্গল ইন্টেলেকচুয়াল সোসাইটির সদস্য । মিছিলে যোগ দিয়েছিল অনশনরত পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতিনিধিরাও ।

কলকাতা, 6 ডিসেম্বর : আজ পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনশন 22 দিনে পড়ল । সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের মাঠের সামনে তাঁদের অবস্থানের আজ 26 দিন । অথচ, এখনও নির্বিকার রাজ‍্য সরকার । তাঁদের দাবি মানা তো দূর। উলটে স্কুলে অনুপস্থিত পার্শ্বশিক্ষিকদের করা হয়েছে শো-কজ় । পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি রাজ‍্য সরকারের নির্মম ব‍্যবহারের প্রতিবাদে গতকাল অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে কলকাতার রাজপথে মিছিল করলেন বেঙ্গল ইন্টেলেকচুয়াল সোসাইটি । এই কর্মসূচি থেকে অগ্নিমিত্রা পাল শিক্ষামন্ত্রীকে পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার আবেদন জানান ।

গতকাল পার্কস্ট্রিট চৌমাথার মোড় থেকে রবীন্দ্রসদন পর্যন্ত মিছিল করে বেঙ্গল ইন্টেলেকচুয়াল সোসাইটির সদস‍্যরা । অরাজনৈতিক এই সংগঠনের পক্ষ থেকে ফ্যাশন ডিজ়াইনার অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, "বেঙ্গল ইন্টেলেকচুয়াল সোসাইটি থেকে আমরা এখানে এসেছি । এটি আমাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন । আমরা মনে করি যে, আমরা এই রাজ‍্যের নাগরিক এবং এই ইশুটাতে আমাদের পার্শ্বশিক্ষকদের পাশে থাকা দরকার । কেন? আমরা সবাই শিক্ষিত মানুষরা মনে করি যে, আজকে আমরা যা হয়েছি সেটা আমাদের বাবা-মা, ভগবান এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য । কিন্তু, সেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ন্যূনতম বেতন দেওয়া হচ্ছে না । আজকে গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মচারীরাও পার্শ্বশিক্ষকদের থেকে বেশি বেতন পায় । তাঁরা হাতে পাচ্ছে 8 থেকে 12 হাজার টাকা সবকিছু কেটে-কুটে‌ । আজকের দিনে এই টাকায় 3 জন মানুষের সংসারও কী চালানো যায়? অন‍্যান‍্য রাজ‍্যে এই পার্শ্বশিক্ষকরাই পাচ্ছেন 20, 25, 30 হাজার টাকা । এতটা পার্থক্য কেন?"

অগ্নিমিত্রা পাল আরও বলেন, "আজকে রাজ‍্য সরকার বলছে তাঁদের কাছে টাকা নেই । টাকা নেই বুঝলাম । তাহলে ওই রেড রোডের কার্নিভাল করার টাকা কোথা থেকে আসছে ? এই যে বিভিন্ন বাড়িতে না কি শুনছি এক্সেলেটর বসছে । সেই টাকা কোথা থেকে আসছে ? বিকাশ ভবনের কাছে যেখানে এরা অনশন করছেন শুনছি তার 100 মিটার দূরে আহারে বাংলা বলে একটি খাবারের উৎসব হচ্ছে । সেই টাকাগুলো কোথা থেকে আসে ? যেখানে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দেওয়ার টাকা নেই বলা হচ্ছে । সেটা মেনে নিলেও কেন্দ্র 18 হাজার, 20 হাজার টাকার অনুমোদন দিচ্ছে, সেই টাকা আপনারা দিচ্ছেন না কেন? আমরা আজকে পথে নেমেছি প্রতিবাদ করতে এই কারণে যে, এই সমস্যার সমাধান হোক । ইতিমধ্যেই একজন পার্শ্বশিক্ষিকা মারা গেছেন । অনেকেই অসুস্থ । আজকে 22 দিন তাঁরা অনশন করছেন । আমরা রাজ‍্যের নাগরিক হয়ে চাই না এর ধরনের ঘটনা আর হোক । রাজ‍্য সরকার আর একটু সংবেদনশীল হোক এবং এই সমস্যার সমাধান হোক ।"

আন্দোলন শুরুর পর থেকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কোনও আলোচনায় বসতে পারেননি পার্শ্বশিক্ষকরা । গতকাল তাঁদের অনশনের 22 দিন ও অবস্থানের 26 দিন‌ । ইতিমধ্যেই যে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদের শো-কজ় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । দিন যত যাচ্ছে তাঁদের প্রতি নরম হওয়ার বদলে আরও কঠোর হচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী । পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতি সরকার কঠোর মনোভাব গ্রহণ করবে বলে গতকালও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । এ নিয়ে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, "শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আমার এটাই বলার, দাদা আপনার বোধহয় আর একটু সংবেদনশীল হওয়া দরকার । দাদা অবশ্য মাননীয়া দিদির কথাতেই চলেন । উনি শো-কজ় করেছেন । কিন্তু, তারপরে আবার খাতা দেখতে ডাকছেন । খাতা দেখা হয়ে গেলে কি আবার শো-কজ় করে দেবেন ? খুব অসংবেদনশীল একটা মনোভাব দেখতে পাচ্ছি রাজ‍্য সরকারের থেকে । আমি আশা করব, ওনারা সংবেদনশীল হবেন এবং এটা একটা ন‍্যায‍্য দাবি । সেটা ওনারা মেনে নিক ।"

গতকালের এই মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন আন্দোলনকারী পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতিনিধিরাও । পার্শ্বশিক্ষক ঐক‍্য মঞ্চের সদস‍্য শামিম আখতার বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর দিকে মোড় নিচ্ছে । অনশন 22 দিন এবং ধরনার 26 দিন । অনশনের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর খারাপ । এই পরিস্থিতিতে মানুষ জীবন ধারণ করতে পারে না । মাননীয়া দিদি বলছেন তাঁর মা মাটি মানুষের সরকার । অথচ, আমাদের দাবিটা ন‍্যায‍্য দাবি । সেটা মানছেন না । আমাদের একটাই দাবি, বেতন কাঠামো দিতে হবে ।
"

Intro:কলকাতা, 5 ডিসেম্বর: আজ পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনশন 21 দিনে পড়ল। সল্টলেকে সেন্ট্রাল পার্ক মেলা মাঠের সামনে তাঁদের অবস্থানের আজ 25 দিন। অথচ, তাঁদের নিয়ে নির্বিকার রাজ‍্য প্রশাসন। তাঁদের দাবি মানা তো দূরস্থান। উল্টে স্কুলে অনুপস্থিত পার্শ্বশিক্ষিকদের করা হয়েছে শো-কজ। পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি রাজ‍্য সরকারের নির্মম ব‍্যবহারের প্রতিবাদে আজ অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে কলকাতার রাজপথে মিছিল করলেন বেঙ্গল ইন্টেলেকচুয়াল সোসাইটি। আজকের কর্মসূচি থেকে অগ্নিমিত্রা পাল শিক্ষামন্ত্রীকে পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার আবেদন জানান।



Body:আজ পার্কস্ট্রিট চৌমাথার মোড় থেকে রবীন্দ্রসদন পর্যন্ত মিছিল করেন বেঙ্গল ইন্টেলেকচুয়াল সোসাইটির সদস‍্যরা। অরাজনৈতিক এই সংগঠনের পক্ষ থেকে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, "আজকে বেঙ্গল ইন্টেলেকচুয়াল সোসাইটি থেকে আমরা এখানে এসেছি। এটি আমাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। আমরা মনে করি যে, আমরা এই রাজ‍্যের নাগরিক এবং এই ইশুটাতে আমাদের পার্শ্বশিক্ষকদের পাশে থাকা দরকার। কেন? আমরা সবাই শিক্ষিত মানুষরা মনে করি যে, আজকে আমরা যা হয়েছি সেটা আমাদের বাবা-মা, ভগবান এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য। কিন্তু, সেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ন্যূনতম বেতন দেওয়া হচ্ছে না। আজকে গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মচারীরাও পার্শ্বশিক্ষকদের থেকে বেশি বেতন পায়। তাঁরা হাতে পাচ্ছে 8 থেকে 12 হাজার টাকা সবকিছু কেটে-কুটে‌। আজকের দিনে এই টাকায় 3 জন মানুষের সংসারও কি চালানো যায়? অন‍্যান‍্য রাজ‍্যে এই পার্শ্বশিক্ষকরাই পাচ্ছেন 20, 25, 30 হাজার টাকা। এতটা পার্থক্য?"

অগ্নিমিত্রা পাল আরও বলেন, "আজকে রাজ‍্য সরকার বলছে তাঁদের কাছে টাকা নেই। টাকা নেই বুঝলাম। তাহলে ওই রেড রোডের কার্নিভাল করার টাকা কোথা থেকে আসছে? এই যে বিভিন্ন বাড়িতে নাকি শুনছি এস্কেলেটর বসছে। সেই টাকা কোথা থেকে আসছে? বিকাশ ভবনের কাছে যেখানে এরা অনশন করছেন শুনছি তার 100 মিটার দূরে আহারে বাংলা বলে একটি খাবারের উৎসব হচ্ছে। সেই টাকাগুলো কোথা থেকে আসে? যেখানে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দেওয়ার টাকা নেই বলা হচ্ছে। সেটা মেনে নিলেও কেন্দ্র 18 হাজার, 20 হাজার টাকার অনুমোদন দিচ্ছে, সেই টাকা আপনারা দিচ্ছেন না কেন? আমরা আজকে পথে নেমেছি প্রতিবাদ করতে এই কারণে যে, এই সমস্যার সমাধান হোক। ইতিমধ্যেই একজন পার্শ্বশিক্ষিকা মারা গেছেন। অনেকেই অসুস্থ। আজকে 21 দিন তাঁরা অনশন করছেন। আমরা রাজ‍্যের নাগরিক হয়ে চাই না এর ধরনের ঘটনা আর হোক। রাজ‍্য সরকার আর একটু সংবেদনশীল হোক এবং এই সমস্যার সমাধান হোক।"

আন্দোলন শুরুর পর থেকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কোনও আলোচনায় বসতে পারেননি পার্শ্বশিক্ষকরা। আজ তাঁদের অনশনের 21 দিন ও অবস্থানের 25 দিন‌। ইতিমধ্যেই যে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদের শো-কজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিন যতো যাচ্ছে তাঁদের প্রতি নরম হওয়ার বদলে আরও কঠোর হচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী। পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতি সরকার কঠোর মনোভাব সরকার গ্রহণ করবে বলে আজও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ নিয়ে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, "শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আমার এটাই বলার, দাদা আপনার বোধহয় আর একটু সংবেদনশীল হওয়া দরকার। দাদা অবশ্য মাননীয়া দিদির কথাতেই চলেন। উনি শো-কজ করেছেন। কিন্তু, তারপরে আবার খাতা দেখতে ডাকছেন। খাতা দেখা হয়ে গেলে কি আবার শো-কজ করে দেবেন? খুব অসংবেদনশীল একটা অ্যাটিটিউড দেখতে পাচ্ছি রাজ‍্য সরকারের থেকে। আমি আশা করব, ওনারা সংবেদনশীল হবেন এবং এটা একটা ন‍্যায‍্য দাবি। সেটা ওনারা মেনে নিক।"

আজ এই মিছিলে অংশগ্রহণ করতে এসেছিলেন আন্দোলনকারী পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতিনিধিরাও। পার্শ্বশিক্ষক ঐক‍্য মঞ্চের সদস‍্য শামীম আখতার বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর দিকে মোড় নিচ্ছে। আজকে আমাদের অনশনের 21 দিন এবং ধরনার 25 দিন। অনশনের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর খারাপ। এই পরিস্থিতিতে মানুষ জীবন ধারণ করতে পারে না। মাননীয়া দিদি বলছেন তাঁর মা মাটি মানুষের সরকার। অথচ, আমাদের দাবিটা ন‍্যায‍্য দাবি। সেটা মানছেন না। আমাদের একটাই দাবি, বেতন কাঠামো দিতে হবে।"


Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.