ETV Bharat / state

Humane Initiative: কন্যাশ্রীর টাকায় যক্ষ্মা রোগীদের দেখভাল, দৃষ্টান্ত গড়লেন ঝাড়গ্রামের ছাত্রী

author img

By

Published : Jun 13, 2023, 10:31 PM IST

2025 সালের মধ্যে বাংলা ও দেশকে যক্ষ্মা মুক্ত করার অঙ্গীকার ঝড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ৷ বাবার সঙ্গে এগিয়ে এলে মেয়েও ৷ কন্যাশ্রীর টাকায় যক্ষ্মারোগীদের হাতে তুলে দিলেন পুষ্টিকর খাবার ৷

ETV Bharat
যক্ষ্মা রোগীদের দায়িত্ব নিলেন ঝাড়গ্রামের ছাত্রী

কন্যাশ্রীর টাকায় যক্ষ্মা রোগীদের দেখভাল করার সিদ্ধান্ত কলেজ পড়ুয়ার

ঝাড়গ্রাম, 13 জুন: প্রতিদিন যখন স্বার্থ নিয়ে হানা- হানির ঘটনা ঘটছে ৷ নিজের স্বার্থের জন্য পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলতেও মানুষ দ্বিধা বোধ করছে না ৷ আর্থিকভাবে সফল মানুষ সরকারি সুবিধা চেটে-পুটে উপভোগ করেছে ৷ এক কথায় প্রতিনিয়ত যখন সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্র উঠে আসছে ৷ সেই রকম সময়েই কন্যাশ্রীর টাকায় যক্ষ্মা রোগীদের দায়িত্ব নিয়ে নজির সৃষ্টি করলেন ঝাড়গ্রামের এক ছাত্রী । প্রতিমাসে যক্ষ্মা রোগীদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন বিপাশা হাঁসদা নামের সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ওই ছাত্রী ৷

মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অফিসে যক্ষ্মা রোগীদের হাতে ডিমের ট্রে, মসুর ডাল, তেল, আটা ও বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে । বিপাশা ছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মানুষজন এবং চিকিৎসক ও নার্সরাও যক্ষ্মা রোগীদের পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন ।

বিপাশা কলকাতার অশোক গেট গার্লস হায়ারসেকেন্ডারি স্কুল থেকে এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন । এই বছরেরই কন্যাশ্রী প্রকল্পে 25 হাজার টাকা পেয়েছেন । বিপাশা ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবন চন্দ্র হাঁসদা কন্যা । বাবার কাছ থেকে জেনেছিলেন, জেলায় যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে । তার মূল কারণ হল পুষ্টির অভাব । যক্ষ্মায় আক্রান্ত হলে তাদের পুষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই নূন্যতম পুষ্ঠি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা ৷ তাই সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বিপাশা ৷

কন্যাশ্রীর টাকা দিয়েই যক্ষ্মা রোগীদের দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । বিপাশার কথায়, "বাবার কাছ থেকে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি মানুষের পাশে থাকার জন্য । আমি কন্যাশ্রী প্রকল্পে 25 হাজার টাকা স্কলারশিপ পেয়েছি ৷ সেই টাকা আমার কাছে না থাকলেও আমি পড়াশোনা করতে পারব । আমার পরিবার আর্থিক দিক থেকে সচ্ছল । তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই টাকা দিয়ে যক্ষ্মা রোগীদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী তুলে দেবো । আমি ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে এই ভাবেই মানুষের পাশে থাকতে চাই ।"

আরও পড়ুন: যাদবপুরে গঠিত বিশেষ সেল, প্রাক্তনীরা সাহায্য করতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয়কে

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামে বর্তমানে 1 হাজার 733 জন যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন । তাদের হাতেই পুষ্টি সম্পূর্ণ খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়ার জন্য "নিক্ষয় মিত্র" প্রকল্প চালু করা হয়েছে । এই প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যেই 400 জন যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ৷ শীঘ্রই বাকিদের এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর । এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিপাশা 3 জন যক্ষ্মা রোগীর 6 মাসের খাদ্য সামগ্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন ।

ঝাড়গ্রামের মুখ্য শাস্ত্র আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা বলেন, "সচেতনতা মূলক প্রচারের মধ্য দিয়ে মানুষকে আমরা সচেতন করছি । যে সমস্ত ব্যক্তিরা যক্ষ্মা রোগীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইচ্ছুক তারা নিক্ষয় মিত্র প্রকল্পের মাধ্যমে তাদেরকে আর্থিক সাহায্য বা পুষ্টিযুক্ত খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়ে পারেন" । বিপাশার এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, "আমার মেয়ের এই উদ্যোগে আমি অত্যন্ত খুশি" ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.