ETV Bharat / state

Sankrail Communal Harmony : সম্প্রীতির নজির ! মুসলমানদের কাঁধে চেপেই অন্তিম যাত্রায় হিন্দু ব্যক্তি

author img

By

Published : Jun 16, 2022, 6:22 PM IST

Updated : Jun 16, 2022, 7:37 PM IST

Sankrail Communal Harmony news
সম্প্রীতির নজির গড়ল সাঁকরাইল সর্দার পাড়া

এক হিন্দু ব্যক্তির শেষ যাত্রায় কাঁধ দিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন ৷ এমনকী তাঁর মৃতদেহ সৎকারের দায়িত্ব নিলেন তাঁরা (Example of Communal Harmony in Sankrail) ৷ ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার সাঁকরাইল ব্লকের অগ্রগামী ক্লাবের সন্নিকটে সর্দার পাড়ায় ।

হাওড়া, 16 জুন : দেশের মধ্যে মন্দির-মসজিদ নিয়ে বিবাদ যখন তুঙ্গে । উভয়পক্ষের ধর্মগুরু ও মৌলবীদের বক্তব্যে দেশ তথা রাজ্যে সম্প্রীতির বাতাবরণ নষ্ট হচ্ছে । তারই মাঝে সম্প্রীতির অনন্য নজির প্রকাশ্যে এল সাঁকরাইল ব্লক এলাকায় (Example of Communal Harmony in Sankrail)। সম্প্রীতির এই অনন্য নজিররের ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার সাঁকরাইল ব্লকের অগ্রগামী ক্লাবের সন্নিকটে সর্দার পাড়ায় ।

জানা গিয়েছে, ওই পাড়াতে বৃহস্পতিবার সন্তোষ কর্মকার নামে এক ব্যক্তি মারা যান । মৃতের ছেলে মাধব কর্মকার তিনি পেশায় একজন শিক্ষক । তাঁর বাবার সৎকারের জন্য এগিয়ে আসেন ওই এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ । দীর্ঘদিন ধরেই এই পাড়ার কর্মকার পরিবার আর্থিকভাবে খুবই দুর্বল । নুন আনতে পান্তা ফুরোয় এই অবস্থার মধ্যে মৃত পিতার দাহকার্য কীভাবে হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল মৃত সন্তোষ কর্মকারের ছেলে মাধব কর্মকার । নিজের অক্ষমতার জন্য প্রায় আটকে যেতে বসেছিল বাবার সৎকারের কাজও । তবে সেই মুশকিল আসান করলেন ওই পাড়ারই মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা । তাঁরা এগিয়ে এসে দাঁড়ালেন কর্মকার পরিবারের পাশে ৷ মৃতদেহ সৎকারের দায়িত্ব নিলেন তাঁরা ৷ এমনকী সৎকারের পরও যেনও সব কাজকর্ম হিন্দু মতে ভালো করে সম্পন্ন হয় সে বিষয়েও সাহায্য করবেন তাঁরা ৷

আরও পড়ুন : হিন্দু বৃদ্ধের সৎকার করলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা

রীতিমত দাহ সৎকারের সমস্ত বিধি ব্যবস্থা মেনেই তাঁকে স্থানীয় শ্মশান ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় । অন্তিম যাত্রায় মৃতদেহের গায়ে নামাবলী থেকে শুরু করে ফুল-চন্দন দিয়ে সাজিয়ে কাঁধে করে শ্মশান ঘাটে নিয়ে যান তাঁরা । সেখানেই সন্তোষ কর্মকারের পারোলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করান মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন ।

স্থানীয় বাসিন্দা সীমা মিদ্দে জানান, তাঁরা এখানে হিন্দু-মুসলিম একই সঙ্গে বসবাস করেন । তাঁদের মধ্যে কোনও জাতপাত ও ধর্মের ভেদাভেদ নেই । তাঁরা একে অপরকে মানুষ হিসাবেই সন্মান করেন । তাই আজকে মুসলিম ভাইয়েরাও এগিয়ে এসেছেন ৷ কর্মকার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন । লকডাউনের সময়তেও এলাকার মুসলিম সম্প্রদায় কর্মকার পরিবারকে অনেকভাবে সাহায্য করেছিল ।

আরও পড়ুন : করোনার ভয়ে সিঁটিয়ে পরিজনেরা, হরেন্দ্রনাথের দেহ সৎকার আশিক-গোলামদের

অপর এক বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন সর্দার জানান, এখানে কোনও ধর্মীয় বিভেদ নেই । তাঁর ছেলেরা এগিয়ে এসেছেন । একজন হিন্দু ব্যক্তির সৎকারের জন্য যা যা করণীয় তার সবই এখানে নিষ্ঠা সহকারে করা হয় । তিনি নিজেও যান সন্তোষবাবুর শেষ যাত্রায় । আর্থিকভাবে দুর্বল সর্দার পাড়ার কর্মকার পরিবারের দুর্দিনে যেভাবে ধর্মীয় বিভেদকে দূরে ঠেলে সম্প্রীতির ছবি ফুঁটে উঠল তার নজির স্বভাবতই সমাজে খুবই দুর্লভ ।

Last Updated :Jun 16, 2022, 7:37 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.