Opinion: মোদি-রাজ্যে নির্বাচনী ফ্যাক্টর কি ওয়াইসি ?

author img

By

Published : Nov 25, 2022, 10:59 PM IST

Etv Bharat

আসাদউদ্দীন ওয়াইসি (Asaduddin Owaisi) । এআইএমআইএম-এর গুজরাত ভোটে অংশগ্রহণ কি বিজেপি'কে অতিরিক্ত অক্সিজেন যোগাবে ? বিশ্লেষণে ইটিভি ভারত-এর নেটওয়ার্ক এডিটর বিলাল ভাট (Bilal Bhat) ।

আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠল গুজরাত নির্বাচন । মুসলিম জনসংখ্যাবহুল অঞ্চলে মুসলিম প্রার্থীসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জমে গেল মোদি-রাজ্যের ভোট । ভোটের ময়দানে নেমেছে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) । আসাদউদ্দীন ওয়াইসির দল স্পষ্টতই দাবি করে যে তারা মুসলিম অনুভূতির প্রতিনিধিত্ব করে (Can AIMIM play spoilsport in Gujarat election 2022) । 14 জন প্রার্থীকে ভোট ময়দানে নামিয়েছে দল, তার মধ্যে 12 জনই মুসলমান ধর্মাবলম্বী । যা রাজ্যের অ-বিজেপি দলগুলির চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে (AIMIM AAP Congress making Gujarat elections easy for BJP win) ।

ভারতীয় জনতা পার্টির একটি নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংক রয়েছে । রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও এক কথায় মেনে নেন, সেই ভোট ব্যাংক প্রভাবিত করা কঠিন । সেখানে 2002-এর ঘটনার (গোধরা দাঙ্গা) পর থেকে মুসলিম ভোট আরও কমেছে বিজেপির ঝুলিতে । বরং বিজেপি'র পরিবর্তে কংগ্রেসকেই নিরাপদ বিকল্প হিসেবে দেখেন মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্তরা । সেই ভোট ব্যাংকে এবার থাবা বসাতে চলেছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ (AAP) । এবার আরেক বিকল্প পেল তারা । একই সঙ্গে সেই বিকল্প কংগ্রেস, আপ-এর থেকে তাদের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য । অন্তত সাম্প্রতিক কিছু ট্রেন্ড তাই বলছে ।

বিহারের গোপালগঞ্জ আসনের সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচন এআইএমআইএম কীভাবে বিরোধীদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে তার একটি দুর্দান্ত উদাহরণ । বিজেপি এবং আরজেডির মধ্যে 1,794 ভোটের পার্থক্য ছিল । এআইএমআইএম 12,214 ভোটার পেয়েছে যা আরজেডির ভোট ব্যাংককেই মূলত কেটেছে । ওয়াইসি যদি আবদুস সালামকে প্রার্থী না-করতেন, তাহলে আরজেডি কমপক্ষে 10,000 ভোটের ব্যবধানে গোপালগঞ্জ আসনে জয়লাভ করত ।

জামালপুর-খাদিয়ার মুসলিম জনসংখ্যা ছিপা (ডাইং এবং প্রিন্টিং) এর সঙ্গে জড়িত । এই আসনে ইমরান খেদাওয়ালা এবং সাবির কাবলিওয়ালা একই সম্প্রদায়ের দুই প্রার্থী হিসেবে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছেন । ইমরান জামালপুর-খাদিয়ার বর্তমান বিধায়ক, যেখানে সাবির ওয়াইসির দলের রাজ্য সভাপতি । ছিপা সম্প্রদায়ের মধ্যে, একটি নির্দিষ্ট প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি ঐতিহ্য রয়েছে । এবার দুই প্রার্থীর যেকোনও একজনকে বেছে নেওয়া তাঁদের পক্ষে যথেষ্ঠ কঠিন সিদ্ধান্ত হতে চলেছে । যার ফলে লাভ হতে পারে বিজেপি'র ।

আরও পড়ুন: মিরাটে ওয়াইসির গাড়িতে গুলিচালনার ঘটনায় গ্রেফতার 2

অ-বিজেপি দলগুলির অভিযোগ, এআইএমআইএম-এর আচরণ বিজেপি'র বি টিমের মতো । বিজেপি এবং আরএসএস-এর এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে । তারপরেই আমেদাবাদের বাপুনগর আসনে প্রার্থী-শাহানওয়াজ পাঠানের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছে ওয়াইসির দল । এটি আদপে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা নাকি আসনটি কংগ্রেস প্রার্থী হিম্মত সিংকে ছেড়ে দেওয়ার সুচিন্তিত কৌশল, তা নিয়ে ধন্দে রাজনীতিবিদরাও । যদিও এআইএমআইএম প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিলেও, বাপুনগর আসনে এখনও 29 জন প্রার্থীর মধ্যে 10 জনই মুসলিম । সেখানে মুসলিম ভোটার রয়েছেন মোট 16 শতাংশ ।

গুজরাতে ভোটারদের প্রায় 11% মুসলিম । প্রায় 25টি রাজ্য বিধানসভা আসনে বিশাল মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। এআইএমআইএম এমন আসনগুলিতে প্রার্থী দিয়েছে যেখানে মুসলিম এবং দলিত সংখ্যা বেশি এবং বেশিরভাগই নির্ধারক । কংগ্রেস বিধায়ক জিগনেশ মেভানির বিরুদ্ধে বদগাম আসনে ওয়াইসির এসসি প্রার্থীকে মাঠে নামানো থেকে স্পষ্ট , যে আসনটি বিজেপির জন্য অজেয় ছিল সেই আসনটি এখন সহজেই দখল নেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গেল ।

আরও পড়ুন: নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেস প্রার্থীর টাকা বিতরণের ভিডিয়ো ভাইরাল

বিজেপি মোট 182টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে । কংগ্রেস শুধুমাত্র 179টি আসনে প্রার্থী দিচ্ছে । 2017 সালের নির্বাচনে, বিজেপি সমস্ত সৌরাষ্ট্র অঞ্চল থেকে মাত্র 18টি আসন জিতেছিল যার 11টি জেলা রয়েছে এবং এটি কংগ্রেস দলের একটি শক্ত ঘাঁটি । গত পাঁচ বছরে, সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের 9 জন কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন । গত নির্বাচনে, বিজেপি রাজ্য জুড়ে 49% ভোট পেয়েছিল । কংগ্রেস পেয়েছিল 41% ভোট, যার মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম ভোট । এবার সেই ভোট ব্যাংকেই থাকা বসাতে চলেছে আপ, এআইএমআইএম । ফলে লড়াইটা ক্রমশ একপেশে হচ্ছে মোদি রাজ্যে । অন্তত, ওয়াকিবহাল মহল তাই বলছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.