Achinta Sheuli: জলমুড়ি খাওয়া থেকে কমনওয়েলথে সোনা জয়, অচিন্ত্যর কীর্তিতে গর্বিত মা পূর্ণিমাদেবী

author img

By

Published : Aug 1, 2022, 4:06 PM IST

behind-story-of-commonwealth-games-golden-boy-achinta-sheuli

দীনদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয় (Behind Story of Commonwealth Games Golden Boy Achinta Sheuli) ৷ ভারোত্তোলক অচিন্ত্য শিউলির সাফল্যের পিছনে রয়েছে এক কঠিন লড়াই ৷

দেওলপুর (হাওড়া), 1 অগস্ট: ব্রিটেনের মাটিতে কমনওয়েল গেমসে সোনা জিতেছেন বাংলার তথা হাওড়ার দেওলপুরের ছেলে অচিন্ত্য শিউলি ৷ শুধু সোনা জেতা নয়, ভারোত্তোলনে পুরুষদের 73 কেজি বিভাগে বিশ্বরেকর্ড করেছেন তিনি ৷ ছেলের এই অসামান্য সাফল্যে গর্বিত তাঁর মা ৷ শোনালেন, অচিন্ত্যর এই সাফল্যের পিছনের লড়াইয়ের কথা (Behind Story of Commonwealth Games Golden Boy Achinta Sheuli) ৷ সেই সঙ্গে তাঁর এই সাফল্য মা ও দাদার কতটা ত্যাগ, তাও জানা গেল ৷

রবিবার ভারতীয় সময় প্রায় মাঝরাত ৷ যখন পুরো ভারত ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন জেগে ছিল হাওড়ার দেওলপুর গ্রাম (Deolpur village) ৷ কারণ, ভারোত্তোলনে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন গ্রামের ছেলে অচিন্ত্য শিউলি ৷ 73 কেজি বিভাগের ফাইনালে প্রথম রাউন্ডে 137, দ্বিতীয় রাউন্ডে 140 এবং তৃতীয় তথা শেষ রাউন্ডে 143 কিলো ওজন তুলতেই ধারাভাষ্যকার ঘোষণা করেন, ভারতের পদক তালিকায় আরও একটি সোনা যুক্ত হয়েছে ৷ আর ঘোষণা মাত্রই উৎসব শুরু হয়ে যায়, হাওড়ার ধূলাগড়ের কাছে দেওলপুর গ্রামে ৷ যা এখন পরিচিত কমনওয়েলথে সোনাজয়ী ভারোত্তোলক অচিন্ত্য শিউলির গ্রাম হিসাবে ৷

তবে, এই সাফল্যের আলোর পিছনের গল্পটা অনেকটাই কঠিন ৷ যেখানে রয়েছে, জলে ভেজানো মুড়ি খেয়ে স্কুলে যাওয়া অচিন্ত্যর কাহিনী ৷ রয়েছে অচিন্ত্যর মা, পূর্ণিমা শিউলির কঠোর পরিশ্রম ৷ রয়েছে ভাইয়ের স্বপ্নকে সফল করার জন্য অচিন্ত্যর দাদার দিনরাত করা পরিশ্রম ৷ আর তাঁদের টালির চালের ভগ্নপ্রায় বাড়ি ৷ তবে, বাড়ির ছেলের সাফল্যে সেই সব কষ্ট আজ গর্বে পরিণত হয়েছে পূর্ণিমা শিউলির কাছে ৷

আরও পড়ুন: দেউলপুরের ভাঙা বাড়ি থেকে কমনওয়েলথের পোডিয়াম, স্বপ্নকে সঙ্গী করেই ইতিহাসে অচিন্ত্য

তিনি জানান, দেশ জুড়ে তাঁর ছেলের সাফল্য নিয়ে যে চর্চা হচ্ছে, তাতে তিনি আজ গর্বিত এবং আনন্দিত ৷ স্বামীর মৃত্যুর পর পূর্ণিমা শিউলি (Purnima Sheuli) জরির কাজ করে দুই ছেলেকে বড় করেছেন ৷ সেই সময় কেউ তাঁর পাশে ছিল না বলে জানিয়েছেন পূর্ণিমাদেবী ৷ 2019 সালে অচিন্ত কলকাতায় খেলতে আসার সময় একবার রাজ্য সরকারের থেকে সাহায্য পেয়েছিলেন ৷ তারপর যেই কে সেই ৷

অচিন্ত্যর সোনার কীর্তিতে গর্বিত মা পূর্ণিমাদেবী

আরও পড়ুন: 'ভারতকে গর্বিত করেছেন', অচিন্ত্যকে অভিনন্দন রাষ্ট্রপতির; টুইটে শুভেচ্ছা মোদি-মমতারও

অচিন্ত্যর দাদা অলোক শিউলি একটি কোম্পানিতে মাল লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজ করেন ৷ তাঁর আক্ষেপ, কেন্দ্র হোক বা রাজ্য সব জায়গায় সফল ক্রীড়াবিদদের নিয়ে মাতামাতি ৷ কিন্তু, অচিন্ত্যর মতো উদীয়মানদের নিয়ে কেউ ভাবে না ৷ তাঁর ভাই যে কমনওয়েলথে খেলতে গিয়েছেন, তা রাজ্য সরকার আগে জানত না, বলেও জানিয়েছেন অলোক ৷ ছাত্রের সাফল্যে খুশি অচিন্ত্যর প্রথম কোচ অষ্টম দাস ৷ জানালেন, পরিশ্রমী অচিন্ত্য যে সফল হবেন, তা নিয়ে কোনও সংশয় তাঁর মনে ছিল না ৷

খুব তাড়াতাড়ি গ্রামে ফিরবেন অচিন্ত্য শিউলি ৷ তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে আছে দেওলপুর গ্রাম ৷ পাশাপাশি, সোনার ছেলেকে বুকে টেনে নিতে অধীর আগ্রহে বসে তাঁর মা পূর্ণিমা শিউলি ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.