বসিরহাট, 10 সেপ্টেম্বর : হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? না কেউ জিজ্ঞাসা করেননি । অসহায় হিন্দু যুবক শেষযাত্রায় গেল মুসলিম যুবকদের কাঁধে চড়েই । বিবিধের মাঝে মিলন মহানের চিত্র দেখা গেল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে । জাতপাত ধর্মীয় ভেদাভেদ ঊর্ধ্বে তুলে প্রায় দু' কিলোমিটার রাস্তা পথে হেঁটে মৃত অমিত বিশ্বাসের দেহ শ্মশানঘাটে নিয়ে গেলেন তৌফিক, কবিরুল, মিজানুর ও রুস্তমরা । সঙ্গে কয়েকশো মুসলিম ভাই । হিন্দু উপাচার মেনে কবিরুলরাই নিজেদের খরচে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করলেন ।
সোমবার সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বছর একুশের অমিত বিশ্বাসের ৷ তাঁর বাড়ি বসিরহাটের সংগ্রামপুর পশ্চিমপাড়ায়৷ সোমবার অমিত বন্ধুর মোটরসাইকেলে চড়ে কামারডাঙায় যাচ্ছিলেন । যাওয়ার পথে ম্যাজিক গাড়ির সঙ্গে বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় । গুরুতর জখম হন অমিত । স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় । বিকেলে মৃত্যু হয় অমিতের ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, 13 বছর আগে অমিতের বাবা নবরঞ্জন বিশ্বাসের মৃত্যু হয় । অমিতের মা রীতা বিশ্বাস দুই সন্তানকে কোনওরকমে বড় করেছেন । পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন অমিতই । তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে সকলেই কার্যত হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন । সংগ্রামপুর পুরোটাই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত । মাঝেমধ্যে দু' এক ঘর হিন্দু পরিবার থাকে । তাই দাহ করার মতো কোনও লোক মিলছিল না । অনেক রাত পর্যন্ত অমিতের দেহ পড়ে ছিল বাড়ির উঠোনে ।