পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

Solar Lights in Sundarbans: সাপের ছোঁবল থেকে বাঁচবে জীবন, সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকাল বসছে সৌরবাতি

By

Published : Jul 29, 2023, 9:29 PM IST

Solar Lights to Save Life of People from Snake Bite: সাপের ছোঁবল থেকে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষদের রক্ষা করতে এবার বসছে সৌরচালিত বাতি ৷ এর জেরে উপকৃত হবে প্রায় 4136টি পরিবারের মানুষজন ৷

Solar Lights
সাপের ছোঁবল থেকে বাঁচতে সৌরবাতি

সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকাল বসছে সৌরবাতি

কুলতলি, 29 জুলাই: এবার অন্ধকারে থেকে আলোর পথে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষেরা ৷ রাতের অন্ধকারে সাপের ছোঁবল থেকে তাদের রক্ষার্থে রাস্তায় বসছে সৌরচালিত আলো ৷ আর এই আলোর দিশা দেখাচ্ছে কলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিরেজ ও সুপার শক্তি ফাউন্ডেশন। তাদের উদ্যোগে ও দক্ষিণ 24 পরগনার বনদফতরের সহায়তায় সৌরবাতিতে আলোকিত হচ্ছে এলাকাগুলি ।

প্রসঙ্গত, সুন্দরী গাছ ও রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের জন্য খ্যাত সুন্দরবন । তবে এর রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে বিপদ ৷ এখানকার মানুষের জীবনশৈলী অন্যদের থেকে আলাদা । তবে তাদের প্রতিনিয়ত জীবন কাটে সংকটে । প্রধানত জঙ্গল ও নদী সংলগ্ন গ্রামগুলিতে বাসিন্দাদের জীবনে ঝুঁকির মাত্রা থাকে সবচেয়ে বেশি । অন্ধকার রাস্তা যেন গ্রামবাসীদের কাছে এক প্রকার মারণ ফাঁদ । আর তার প্রধান কারণ সাপের কামড় । আর তার থেকেই সুরাহা দিতে আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে রাস্তাজুড়ে ৷

শুক্রবার প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়

দক্ষিণ 24 পরগনা বন বিভাগের সহযোগিতায় কলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিটেজ এর সঙ্গে সুপার শক্তি ফাউন্ডেশন এই সব এলাকায় 30টি সৌরবাতি বসাতে চলেছে । ইতিমধ্যেই 5টি সৌর খুঁটি বসানো হয়ে গিয়েছে । শুক্রবার এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় । এরপর বাকিগুলি বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হবে খবর । রাস্তায় লাগানো সৌরবাতির সুবিধা পাবে সুন্দরবনের কুলতলির দেবীপুর গ্রামের প্রায় 4136টি পরিবার । এই গ্রামগুলি সুন্দরবনের মূল এলাকা সংলগ্ন হওয়ায় অন্ধকারে চলার পথে তাঁরা ঘন ঘন সাপের কামড়ের শিকার হয়ে থাকে ৷ যার ফলে নিয়মিত মৃত্যু বা গুরুতর আহত হয় গ্রামবাসীরা । এই এলাকাগুলি কুলতলি রেঞ্জ ডিরেক্টরেট ফরেস্টে ও দক্ষিণ 24 পরগনা বন বিভাগের অধীনে পড়ে । এই এলাকাগুলি থেকে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতাল প্রাস 36 কিমি দূরে ।

আরও পড়ুন:ওঝার কেরামতিতে মৃত্যু শিশুর, সাপের কামড়ে গুরুতর অসুস্থ 2

এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে দক্ষিণ 24 পরগনা বনবি ভাগের ডিএফও মিলন মণ্ডল বলেন, "আমরা সকলেই জানি সুন্দরবন এমন একটি জায়গা যেখানে প্রাণীজগৎ ও এখানে বসবাসকারী মানুষ সবসময় প্রকৃতির সংস্পর্শে আসে । মানব ও বন্য সংঘাত সুন্দরবন বন বিভাগের প্রধান উদ্বেগের কারণগুলির মধ্যে একটি । অধিকাংশ রাস্তা ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৷ কিন্তু এখানে 'বিদ্যুত' একটি বিরল ব্যাপার । সুন্দরবন এলাকায় সাপের কামড় একটি সাধারণ সমস্যা । বিষাক্ত সাপেদের মধ্যে দেখা যায় কেউটেকে ৷ এই জাতীয় সাপ এখানকার মানুষদের জন্য প্রধান ভয়ের এবং ক্ষতির কারণ ।

তিনি আরও বলেন, "সাপের কামড়ের ফলে মৃত্যুর হার 65 শতাংশ-এর বেশি । এমনকী বাঘ গত পাঁচ বছরে দু'বার গ্রামে ঢুকে পড়েছিল । তাই এখানে এই উদ্বেগের একমাত্র সমাধান হল সৌরচালিত বাতি । গ্রামের প্রধান অংশগুলি চিহ্নিত করে আমরা এই বাতিগুলি স্থাপন করেছি ইতিমধ্যেই । এই প্রকল্পটি করার মাধ্যমে আমরা রিনিউএবল সবুজ শক্তির প্রচারও করেছি এবং কার্বনের মাত্রা কমাতে সক্ষম হচ্ছি প্রতিনিয়ত । এই সোলার লাইটগুলি প্রতি বছর 182.5 কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে । আমি এই প্রকল্পের জন্য কেএসসিএইচ এবং সুপার শক্তি ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাই ।"

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাই গ্রুপের সিএসআর নোডাল অফিসার ইশান্ত জৈন জানান, এই প্রকল্পটি সুপার শক্তি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে ৷ যা সিএসআর প্রকল্পে নিবন্ধিত । প্রকল্পটির পরিবেশগত স্থায়িত্ব এবং গ্রামীণ উন্নয়ন উভয়ই ক্ষেত্রেই একটা অনন্য ভূমিকা পালন করবে । সুন্দরবনের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে 30টি সৌরবাতি বসানোর সিদ্ধান্ত তাঁরা খুশি । এর ফলে অন্তত চার হাজারের বেশি পরিবার সরাসরি উপকৃত হবে বলে তিনি জানান ৷ প্রকল্পটি শুরু করার জন্য ইতিমধ্যেই 5টি সৌর খুঁটি বসানো হয়েছে । বাকিগুলিও খুব শীঘ্র বসানো হবে বলে ইশান্ত জৈনের দাবি ।

আরও পড়ুন:শীত পড়তেই বাঘের আতঙ্ক দেউলবাড়ি গ্রামে, তৈরি প্রশাসন

কলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিটেজের প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক গুঞ্জন কর্মকার বলেন, "আমাদের সংস্থার মাধ্যমে আমরা গত 15 বছর ধরে সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানো, নারীর ক্ষমতায়ন, বৃত্তিমূলক দক্ষতা উন্নয়ন এবং বন বিভাগের সঙ্গে একত্রে জীবিকা উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করছি । এখানকার গ্রামবাসীদের প্রধান পেশা মাছ ধরা, বন থেকে মধু সংগ্রহ, রিকশা ও ভ্যান চালানো এবং তাদের মাসে গড়ে আয় ছয় থেকে আট হাজার টাকা । এই সৌর আলো তাদের অন্ধকারে সব সময়ের জন্য আলো সরবরাহ করবে এবং গ্রামবাসীরা উপকৃত হবে ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details