পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

আছে পাম্পঘর, কল ; নেই শুধু পানীয় জল

By

Published : Aug 17, 2020, 10:47 PM IST

শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লক। বাম আমলে তৈরি হয়েছিল দুখানা পাম্প হাউজ় ৷ জলের লাইনও পাতা হয়েছিল ৷ কিন্তু অধরা থেকেছে বিশুদ্ধ পানীয় জল ৷ আয়রণযুক্ত জলই ভরষা এই ব্লকের 40 হাজার মানুষের ৷

drinking water crisis
ফাঁসিদেওয়া ব্লকে পানীয় জল নেই

শিলিগুড়ি,17 অগাস্ট: আছে দু' দু'খানা পাম্প হাউজ় ৷ বিভিন্ন এলাকায় পাতা আছে জলের লাইন। রয়েছে জলের কল। নেই শুধু বিশুদ্ধ পানীয় জল। গত এক বছরে জলের দাবিতে বহুবার আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু টানাপোড়েন কাটিয়ে পানীয় জল মেলেনি ফাঁসিদেওয়াতে । অগত্যা আয়রন মিশ্রিত কুয়োর জলই ভরসা ব্লকের প্রায় হাজার চল্লিশ মানুষের।

শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লক। বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা এই ফাঁসিদেওয়াতে পানীয় জল পরিষেবা দিতে 1996 সালে বাম সরকারের আমলে তৈরি হয়েছিল দু'খানা পাম্প হাউজ়। পাতা হয়েছিল জলের লাইন। বিভিন্ন এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ শুরু হয়। খুশিই ছিলেন ব্লকের প্রায় 40 হাজার মানুষ। কিন্তু বারবারেই নানা কারণে খারাপ হয়েছে পাম্প হাউজ়। থমকে গিয়েছে পরিষেবা। এভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েই, তাও চলছিল পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থাটা। কিন্তু গত এক বছর আগে পাম্প মেশিন খারাপ হওয়ার পর তা মেরামত করে ফের জল সরবরাহ করার কাজ শুরু হয়নি। ফলে প্রকল্প থাকলেও পানীয় জল পায় না বাসিন্দারা। কুয়োর জল এখন ভরষা বাসিন্দাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, গত দু'দশক নানা কারণে পানীয় জল প্রকল্প থমকে ছিল। ফের তা মেরামত করে দেওয়া হত। এভাবে চলার পর বছর চারেক আগে প্রকল্পটি স্থানীয় ফাঁসিদেওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে হস্তান্তর করে দেয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। এরপর পাম্প খারাপ হয় এক বছর আগে। তারপর তা সারাই হয়নি। কিন্তু কেন? পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, আমাদের না আছে ইঞ্জিনিয়র, না আছে পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থায় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মী বা পাম্প হাউজ় সারাইয়ের অর্থ। ফলে মেশিন খারাপ হলে আমরা তা সারাই করব কীভাবে।

আছে পাম্পঘর, কল ; নেই শুধু পানীয় জল
ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বাসিন্দা সুদীপ রায়, ঝরণা রায়, ফুলমতি রায়েরা জানান, এই জলের উপর আমরা নির্ভরশীল ছিলাম। কিন্তু গত এক বছর ধরেই জল নেই। বহুবার আন্দোলন হয়েছে। রাস্তা অবরোধ হয়েছে, থানা, পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও হয়েছে। কিন্তু জল মেলেনি।বন্ধ পাম্প হাউজ় এখন ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। আগাছার জঙ্গলে মুখ ঢেকেছে দু'খানি পাম্প হাউজ়। ব্যবহার না হওয়ার কারণে মরচে ধরেছে যন্ত্রপাতিতেও। ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, আমরা আর কী করব। অগত্যা কুয়োর জল খাই। পানীয় জল যারা কিনে খেতে পারে, তারা কিনে খায় । আমাদের সামর্থ্য নেই। তাই আয়রণ মিশ্রিত জল খেতে হয়। স্থানীয় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নির্মল রায় স্বীকার করেছেন, জলের দাবিতে ক্ষোভ রয়েছে বাসিন্দাদের। চালু না থাকায় পাম্প হাউজ়ের যন্ত্রপাতি আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আমরা ওই প্রকল্প ফের জনসাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের হাতেই ফেরত দিতে চাই। কিন্তু ওরা ফেরত নিচ্ছে না। ফলে আমাদের কাছে পাম্প হাউস সারানোর জন্য অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার এবং আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় আমরা সবাই কিছুই করতে পারছি না। এই নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু লাল ফিতের ফাঁস কাটিয়ে পাম্প হাউসের দায়িত্ব জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের হাতে পৌঁছায়নি। ফলে মেরামত হয়নি পাম্প হাউস। জলও অমিল ফাঁসিদেওয়াতে। এনিয়ে অবশ্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের বক্তব্য মেলেনি। ক্ষোভে ফুসছে ফাঁসিদেওয়ার বাসিন্দারা।

ABOUT THE AUTHOR

...view details