কলকাতা, 15 নভেম্বর : স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুতে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ উঠল বেসরকারি এক হাসপাতালের বিরুদ্ধে । এই ঘটনায় স্বাস্থ্য ভবনের পাশাপাশি পুলিশেও চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ জানানো হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে এই ঘটনায় তদন্ত চাইছেন পরিজনরা ।
মৃত ওই ব্যক্তির নাম মহাদেব মণ্ডল (49) । বাড়ি মুর্শিদাবাদের ডাঙাপাড়ায় । এই রোগীর মৃত্যুর আগে স্বাস্থ্য ভবন এবং পুলিশের কাছে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ জানানো হয়েছিল । ওই অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে, বহরমপুর লীলা হাসপাতাল থেকে 4 নভেম্বর ভোর তিনটার সময় কলকাতার মুকুন্দপুরের বেসরকারি ওই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত মহাদেব মণ্ডলকে । এই হাসপাতালের CCU-তে তাঁকে ভরতি নেওয়া হয় । হাসপাতাল থেকে পরিজনদের জানানো হয়, চিকিৎসা ব্যয় সাপেক্ষ হলেও 11 নভেম্বর নাগাদ রোগী সুস্থ হয়ে যাবেন । ধার করে এবং জমি বন্ধক রেখে এই হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন পরিজনরা । 5 নভেম্বর রোগীকে CCU থেকে HDU-তে স্থানান্তরিত করা হয় । এর কারণ হিসাবে রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে হাসপাতাল থেকে পরিজনদের জানানো হয়েছিল বলে ওই অভিযোগপত্রে জানানো হয় ।
অভিযোগপত্রে আরও জানানো হয়েছে, এরপর যে চিকিৎসকের অধীনে মহাদেব মণ্ডলের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল, সেই চিকিৎসক ছুটিতে চলে যান । তারপর থেকে চিকিৎসায় গাফিলতি শুরু হয় । রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলেও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদাসীন থাকে । পরিজনদের বার বার অনুরোধের পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে নজর দেয়নি । রোগীকে এরপর ভেন্টিলেশনে পাঠানো হয় । ওই অভিযোগপত্রে জানানো হয়, হাসপাতালের অবহেলার কারণে মহাদেব মণ্ডলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে । এই বিষয়টির অনুসন্ধান এবং মহাদেব মণ্ডলের সঠিক চিকিৎসার জন্য ওই অভিযোগপত্রে আর্থিক সহায়তার আবেদনও জানানো হয় ।
এই অভিযোগ জানানোর পর 13 নভেম্বর (বুধবার) মহাদেব মণ্ডলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর এক আত্মীয় শরদ মণ্ডল । তিনি বলেন, পেশায় চাষি মহাদেব মণ্ডলের বাড়িতে রয়েছে 9 মাসের শিশুপুত্র, স্ত্রী এবং অসুস্থ মা-বাবা । তিনি বলেন, "এই ঘটনায় আমরা রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছি । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেন এই বিষয়ে তদন্তের ব্যবস্থা করেন, তা হলে সঠিক ঘটনা জানা যাবে । দোষীদের শাস্তি চাইছি আমরা ।"
এই অভিযোগের বিষয়ে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় । তবে, বক্তব্য মেলেনি ।