পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

লাউদোহার "খোকন"-র স্মৃতি নিয়ে থাকতে চান তাপসের বাল্যবন্ধুরা

By

Published : Feb 19, 2020, 10:18 PM IST

Updated : Feb 19, 2020, 10:42 PM IST

দুর্গাপুরের জঙ্গল ঘেরা লাউদোহা-ফরিদপুর ব্লকের নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলে পড়াশোনা তাপস পালের । এখানকার দুর্গা মণ্ডপের কাছে এক চিলতে টিনের চাল । তাতে তাপস পালের বাবা বসবাস করতেন। এই টিনের চালেই বড় হয়ে উঠেছেন তাপস পাল । লাউদহের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে অভিনেতা তাপস পালের অসংখ্য স্মৃতি ।

tapas pal
অভিনেতা তাপস পাল

দুর্গাপুর,19 ফেব্রুয়ারি : লাউদোহা । এখানকার নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলে পড়াশোনা তাপস পালের । দুর্গাপুরের জঙ্গল ঘেরা লাউদোহা-ফরিদপুর ব্লকের এই স্কুলে কত স্মৃতি জড়িত ।এই বিদ্যালয়ের তাপস পালের প্রথম পাঠ শুরু হয় । ১৯৬৩ তে প্রথম শ্রেণিতে ভরতি হন । তাঁর বাবা ডাঃ গজেন্দ্রচন্দ্র পাল দুর্গাপুর এর লাউদোহা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক হিসাবে চাকরিতে যোগ দেন । তাপস পালকে সহপাঠীরা" খোকন" বলে ডাকতেন। আজ তাঁদের সেই "খোকন" এত তাড়াতাড়ি হারিয়ে যাবে ভাবতে পারেনি কেউ ।

এই লাউদোহার জঙ্গল,মাটির সাথে তাপস পাল ও তাঁর পরিবারের বহু স্মৃতি জড়িয়ে।তাপস পালের এই বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা। পরে লাউদোহা কালী তারা বিজয় ইন্সটিটিউটশনের অষ্টম শ্রেণিতে পর্যন্ত পড়াশোনা। তারপর চন্দননগরে বাবার বদলি হয়ে যাওয়া।সেখানেই চলে যাওয়া। দুর্গাপুরের লাউদোহা ফরিদপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এখন একেবারে ঝাঁ-চকচকে। কিন্তু তাপস পালের বাবা যখন এখানকার চিকিৎসক ছিলেন তখন এক চিলতে টিনের চাল । আর সেখানেই ছিল ডিসপেনসারি আর বসবাস । টিনের চালের ঘরে বাস আর ডাক্তারি চলত একসঙ্গে ।এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনের মাঠে প্রথম সর্বজনীন দুর্গাপুজোর প্রধান আয়োজক ছিলেন তাপস পালের বাবা । আজ থেকে প্রায় এক দশকের কিছু সময় আগে শেষবারের মতো দুর্গাপুজোয় এসেছিলেন তাপস পাল এবং তাঁর বাবা ।এই মন্দিরে এসেছিলেন অষ্টমী পুজোর অঞ্জলি দিতে। বহু স্মৃতি জড়িয়ে আছে লাউদোহার এই মাটিতে।

লাউদোহা-ফরিদপুর ব্লকের নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলে পড়াশোনা তাপস পালের

বাংলা চলচ্চিত্র জগতের "সাহেব"। এখানকার মানুষ যাঁরা তাপস পাল কে খুব কাছে থেকে দেখেছেন তাঁরা কেউ ভোলেননি ছোটোবেলার কথা । ছোটোবেলার বন্ধু মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় খুব সামনে থেকে দেখেছিলেন তাঁকে । মৃত্যুঞ্জয় বাবু চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না । তিনি বলেন," ছোটোবেলা থেকে খুব সাদামাটা ভাবে মিশত । সকলকে খুব ভালোবাসত ।" তাঁর ছোটোবেলার আর এক বন্ধু ভুবন মোহন চট্টোপাধ্যায় বলেন," ওর মধ্যে কোনও ভেদাভেদ ছিল না । লাউদোহকে খুব ভালোবাসত । দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন গ্রামে আসত ।" যে বিদ্যালয়ে তাপস পালের জীবনের প্রথম পাঠ শুরু সেই স্কুলের আজ অনেক উন্নতি হয়েছে । সেই স্কুলের বর্তমান এক শিক্ষিকা তনুশ্রী পাল । তিনি জানালেন, এই বিদ্যালয়ে তাপস পাল পড়াশোনা করেছেন এটা জেনে তাঁরা গর্বিত । আজ ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের তাপস পালের আত্মার শান্তি কামনায় নীরবতা পালন করে । তাপস পালের বাবার চালু করা দুর্গাপুজো এখন ক্লাবের ছেলেদের উদ্যোগে মন্দিরে পরিণত হয়েছে । 2007 সালে তাপস পাল শেষবার পরিবার নিয়ে আসেন এই মন্দিরে দুর্গাপুজার অষ্টমীর দিনে । ১০৮ টি পদ্মফুল নিয়ে এই মন্দিরে অষ্টমীর অঞ্জলি দেন ।

স্কুলের খাতায় তাপস পালের নাম

দাঁড়িয়ে আছে লাউদোহার মাটিতে কত স্মৃতি খোকনের। এই মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ছোটো ছোটো অনেক ঘটনা । খোকন এখানেই বড় হয়েছিলেন । এখানেই পড়াশোনা শুরু করেছিলেন । অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাঁদের চন্দননগরে চলে যাওয়া। তারপরও বহুবার অভিনয়ের সুবাদে তাপস পালকে আসতে হয়েছে লাউদোহার মাটিতে যাত্রা গানের আসরে । এমনকি কাছাকাছি কোথাও শুটিং থাকলেও তাপস পাল ছুটে এসেছিলেন এই অঞ্চলের বন্ধুদের টানে। তাপস পালের শেষ ইচ্ছে ছিল এই দুর্গামন্দিরের সামনের ফাঁকা জায়গায় তাঁর বাবার একটি আবক্ষ মূর্তি বসাতে । সে আর হল না । 2012তে এই মাটিতে বর্তমান সাংসদ শতাব্দী রায়ের সাথে শেষবারের মতো যাত্রা করতে আসেন । বন্ধুর আবক্ষ মূর্তি বসানোর কথা আজ জানালেন তাঁর বাল্যবন্ধুরা ।

লাউদহের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে অভিনেতা তাপস পালের অসংখ্য স্মৃতি
Last Updated :Feb 19, 2020, 10:42 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details