পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় এগিয়ে আসা উচিত সরকারের

By

Published : May 16, 2021, 2:09 PM IST

বর্তমান পরিস্থিতি রক্ষা করতে এগিয়ে আসা উচিত সরকারকে

সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের যে সকল শ্রমিক আটকে পড়েছেন, তাঁদের যেন দ্রুত ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয় । দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের মানুষজন যাতে সহজে রেশন পান এবং অনাহারে প্রাণ না হারান, সেই দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারকে নিতে হবে । দেশের কোটি কোটি মানুষের ক্ষুধা মোচনের জন্য সরকারকেই কার্যকর পদক্ষেপ করতে হবে ।

কোভিডের ভয়াবহ সঙ্কটের সময় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছে । প্রায় দিন দশেক আগে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা দেশের প্রতিটি চিকিৎসাকেন্দ্রে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ানো এবং বিনামূল্য টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিল । কিন্তু, সেই যৌথ অনুরোধের যথাযথ উত্তর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি । তারপরই বিষয়টির তীব্র নিন্দা করে চারজন মুখ্যমন্ত্রী এবং 12 টি বিরোধী রাজনৈতিক দল ফের একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও করেছেন । প্রতিটি দেশবাসীর জন্য বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার জন্য সরকারের বাজেট বরাদ্দ অবিলম্বে প্রকাশ করার দাবিও জানানো হয়েছে । পাশাপাশি ভাইরাস মোকাবিলায় আরও সক্রিয় পদক্ষেপ করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি । এটা কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায় না, বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক । এই গভীর উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে কার্যকর পদক্ষেপ করার জন্য বিরোধী দলগুলি এক জোট হয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছে ।

প্রধান ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা হিসেবে খ্যাত দেশটিতে ভ্যাকসিনের অভাব দেখা গিয়েছে, এটা বুঝতে অসুবিধা নেই এর পিছনে দায়ী কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনার অভাব । গত কয়েক দশক ধরে দেশে জাতীয় কর্মসূচি হিসেবে বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচি চলে আসছে । সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছে, কেন দেশের প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে না? করোনার কারণে দেশে যে আর্থিক ধ্বংসাবশেষ দেখা গিয়েছে, এবং তার প্রেক্ষিতে দেশের দরিদ্র শ্রেণির অবস্থা অত্যন্ত করুণ, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্রীয় সরকার । এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষার জন্য যে দাবি করেছেন, তা 100 শতাংশ সমর্থনযোগ্য ।

দেশে ভ্যাকসিনের এই ঘাটতি জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এবং অন্যদিকে, অক্সিজেন এবং অন্যান্য জীবনদায়ী ওষুধের ঘাটতি পরিস্থিতি জটিল করেছে । কেন্দ্রের উচিত বর্তমান পরিস্থিতিতে একটা দ্রুত এবং জরুরি পদক্ষেপ করা ।

আরও পড়ুন :এক সপ্তাহ বাড়ল দিল্লির লকডাউন

প্রায় 14 মাস পরে মাত্র দিন কয়েক আগে ব্রিটেনে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য হয়েছে । নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যাও সে দেশে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে । অন্যদিকে, ভারতের 13 টি রাজ্যে কম করে এক লাখ দৈনিক সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে । সারা দেশে 37 লাখের বেশি সক্রিয় আক্রান্তের খবর রয়েছে । 2.37 কোটি সক্রিয় করোনা আক্রান্ত এবং 2.6 লাখ মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজারের নিচে না নামা - এসবই ভারতের ভয়ঙ্কর ছবিটা তুলে ধরে । এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশের মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল আগামী আট সপ্তাহের জন্য দেশের 530 টা জেলায় দ্রুত লকডাউনের সুপারিশ করেছে । যে জেলাগুলিতে দশ শতাংশের বেশি করোনা পজিটিভের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ।

যদি লকডাউন আরও দুই মাসের জন্য চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে গত বছর লকডাউনের ফলে যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটেছিল, সেই ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতিতে পড়ে যাওয়া দরিদ্র শ্রমিক এবং দিনমজুরদের অবস্থা কী হবে? দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবীদ জিন ড্রইজ ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভারত ইতিমধ্যেই একটি ভয়াবহ জীবিকা সঙ্কটের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে । করোনা পরিস্থিতির কারণে, বহু লোক তাঁদের অর্জিত অর্থে হাত দিতে বাধ্য হয়েছেন । এই সমস্যা সমাধানে জোনস কিছু সমাধান সূত্রের কথা বলেছে । ঋণ সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সরকারের ঘোষণা করা করা পদক্ষেপগুলি আরও কিছু দিন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন । যাতে দরিদ্র মানুষদের হাতে নগদের জোগান মজুত থাকে ।

আরও পড়ুন :গাজ়ায় মিডিয়া টাওয়ারে বিমান হামলা ; এটাই চলবে, হুংকার নেতানইয়াহুর

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমেরিকার জো বাইডেন সরকার দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিন সুনিশ্চিত করার জন্য 138 লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল । ভারত সরকারের উচিত বেকার ভাতা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রেও আর্থিক সুবিধা প্রদান অত্যন্ত জরুরি ।

ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের যে সকল শ্রমিক আটকে পড়েছেন, তাঁদের যেন দ্রুত ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয় । দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের মানুষজন যাতে সহজে রেশন পান এবং অনাহারে প্রাণ না হারান, সেই দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারকে নিতে হবে । দেশের কোটি কোটি মানুষের ক্ষুধা মোচনের জন্য সরকারকেই কার্যকর পদক্ষেপ করতে হবে ।

TAGGED:

ABOUT THE AUTHOR

...view details