কলকাতা, 20 মার্চ: সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা। দিনভর হয়েছে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ৷ কে বলবে মাসটা চৈত্র! ঋতু বসন্ত। দিন কয়েক আগেও যে তীব্র গরমের আবাহনী ছিল আবহাওয়ার গতি প্রকৃতিতে। কিন্তু শেষ পাঁচদিনে ক্রমে ক্রমে তা মালুম হচ্ছে না। বুধবার সকালে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের আবহে বর্ষার মেজাজ। এরই মাঝে আজকের তাপমাত্রা নজির গড়ল ৷ আজকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 21.1 ডিগ্রি ৷ 1970-2024-এর এই সময়টা অর্থাৎ মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 21.1 ডিগ্রি ৷ এর আগে 2003 সালের মার্চের মাসের এই সময় কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 20.3 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷
এদিকে বৃষ্টি মেঘের খেলায় পারদ নেমেছে স্বাভাবিকের চেয়ে 13 ডিগ্রির নীচে। বুধবার কলকাতা এবং তার আশাপাশের অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 21.1 ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের চেয়ে 13 ডিগ্রির নীচে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল 18.7 সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের চেয়ে 5 ডিগ্রির নীচে। প্রায় শীতের প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত। যদিও আলিপুর আবহাওয়া দফতর শীতের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। বরং বলছেন বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্পের প্রবেশেই বৃষ্টির এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি কমবে। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গে। এরপর উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ড থেকে দক্ষিণ অসম পর্যন্ত একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছিল। বর্তমানে তা বিস্তৃত হয়েছে মধ্যপ্রদেশ থেকে দক্ষিণ অসম পর্যন্ত। একইসঙ্গে ঘূর্ণাবর্তের বিস্তার হয়েছে পূর্ব বাংলাদেশ ও তৎপার্শ্ববর্তী অঞ্চলে। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প বঙ্গোপসাগর থেকে এই রাজ্যের বাতাসে প্রবেশ করছে। ফলস্বরূপ আজ থেকে শনিবার পর্যন্ত অর্থাৎ 20 থেকে 23 মার্চ পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
দুই দিনাজপুরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। 30 থেকে 40 কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। তাই কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামিকাল উত্তরবঙ্গজুড়েই হালকা থেকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি বৃষ্টি চলবে। তিরিশ থেকে চল্লিশ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। শুক্রবার উত্তরবঙ্গের ওপরের জেলা দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।
শনিবারও ওপরের পাঁচটি জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যে সমগ্র উত্তরবঙ্গের জন্য আজ বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। এই বৃষ্টিতে চাষাবাদের ক্ষতির শঙ্কা। হাওয়া অফিস ইতিমধ্যে বজ্রবিদ্যুৎ চলাকালীন ঘরের বাইরে না-থাকার পরামর্শ দিয়েছে। সব মিলিয়ে চৈত্র মাসে গ্রীষ্ম নয় বর্ষার আগমনী বঙ্গজুড়ে।
আরও পড়ুন: