ETV Bharat / state

হাসছে পাহাড়, উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের চা বাগানে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসাচ্ছে আইএমডি - Rain gauges in tea gardens

Rain gauges installed in Tea Gardens: উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের চা বাগানে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসাচ্ছে জাতীয় আবহাওয়া দফতর ৷ এই উদ্যোগে খুশির হাওয়া পাহাড়ে ৷ আইএমডি-কে সাধুবাদ জানিয়েছে চা বাগানের মালিকপক্ষ ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 21, 2024, 10:44 PM IST

ETV BHARAT
চা বাগানে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসাচ্ছে আইএমডি (নিজস্ব ছবি)
চা বাগানে বসছে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র (ইটিভি ভারত)

জলপাইগুড়ি, 21 মে: চা বাগানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কত, তা জানতে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসাতে চলেছে আবহাওয়া বিভাগ । উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের চা বাগান এলাকায় বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করে চায়ের উৎপাদন । ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানা গেলে চা বাগানের পরিচর্যা করতে সুবিধা হবে ৷ পাশাপাশি আবহাওয়ার সঠিক বার্তা দেওয়া যাবে বলে মত জাতীয় আবহাওয়া দফতরের । হাওয়া অফিসের এই উদ্যোগে যারপরনাই খুশি চা বাগানের মালিকপক্ষ ।

সিকিম ও উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবহাওয়া আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, "উত্তরবঙ্গ ও সিকিম অঞ্চলটা চা বাগানে ঘেরা । সেখানকার জন্য নতুন প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে । চা বাগানে যত বেশি সংখ্যক রেইন গজ বা বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসানো যায় সেই চেষ্টা হচ্ছে । সেই কাজ প্রাথমিক ভাবে শুরুও হয়ে গিয়েছে । আমরা আশা করছি, আসন্ন বর্ষার মধ্যেই কিছু চা বাগানে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসাতে পারব ।"

গোপীনাথ রাহার কথায়, চা বাগানে বা কৃষি বলয়ের উৎপাদন অনেকটাই নির্ভর করে বৃষ্টির উপরে । ফলে কত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হল, সেটা জানতে পারলে খুবই সুবিধা হয় । যেমন কত খরচ হবে, কত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে - এই সবই নির্ভর করে কত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হচ্ছে বা কতদিন খরা হচ্ছে তার উপর ৷ এই রেইন গজগুলো বসানো হলে কতখানি বৃষ্টি হল তার হিসেব পাবে আবহাওয়া দফতর । সেটি চা বাগানের জন্য যেমন খুবই উপকারী হবে, তেমনই আবহাওয়া দফতরের কাছেও এ বিষয়ে তথ্য থাকবে । প্রতিদিন যদি এই বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র ঠিকমতো মনিটরিং করা যায়, তাহলে আবহাওয়ার সঠিক সতর্কতা বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে । কোথায় বেশি বৃষ্টি হচ্ছে, কোথায় কম বৃষ্টি হচ্ছে তাও জানতে পারবে হাওয়া অফিস ।

গোপীনাথ রাহা আরও জানান, আগে বৃষ্টির পরিমাণ কত হল তা জানার জন্য রেইন গজ স্টেশন কম ছিল । গত কয়েক বছর ধরে কীভাবে রেইন গজ নেটওয়ার্ক বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা চালানো হচ্ছিল । এখন রেইন গজ বেড়েছে । 70টি রেইনফল রেকর্ডিং স্টেশন আছে । যার মধ্যে 20টি (এডব্লিউএস) অটোম্যাটিক ওয়েদার স্টেশন আছে । যার থেকে তাপমাত্রার ডেটা পায় হাওয়া অফিস । সম্প্রতি চারটে জায়গায় অটোম্যাটিক ওয়েদার স্টেশন বসানো হয়েছে । এই চারটে জায়গা হল মালবাজার স্কুল, বানারহাট স্কুল,মাথাভাঙা কলেজ ও ধুপগুড়ি কলেজ । এছাড়াও গৌড়বঙ্গের দিকেও বসানো হয়েছে এডব্লিউএস ।

চা বাগানের মালিক তথা জলপাইগুড়ি জেলার ক্ষুদ্র চাষী সমিতির সম্পাদক বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, "রাজ্যের চা উৎপাদনের 52% চা আমরা দিয়ে থাকি । আইএমডি-র এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই । আমরাও জানতে চাই, কতটা জল চা বাগানে দিতে হবে । কারণ সব চা বাগানে সেচের সামর্থ সবার নেই । এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে এ বছর বিরাট ক্ষতির মুখে চা বাগান । কারণ দীর্ঘদিন পর্যাপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে না । ফলে চা উৎপাদনও সেভাবে হচ্ছে না । আইএমডি যদি বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসায়, তাহলে আমরা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানতে পাব এবং বৈজ্ঞানিক ভাবে চা বাগানের পরিচর্যা ও সেচের কাজ করতে পারব ।"

চা বাগানের মালিকপক্ষের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অমৃতাংশু চক্রবর্তী বলেন, "এ বার যেভাবে বৃষ্টি কম হয়েছে তাতে আমরা বিরাট ক্ষতির মুখে । চা বাগান বাঁচানোই চ্যালেঞ্জ । ফলে চা বাগানে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসালে আমাদের সুবিধা হবে ।"

আরও পড়ুন:

  1. উচ্চমাধ্যমিকে সফল চা শ্রমিকের মেয়ে, স্বপ্ন সরকারি আমলা হওয়ার
  2. বাগান খুললে ফিরবে 'ভালো দিন', আশায় ভোট দান চা শ্রমিকদের
  3. দার্জিলিংয়ের সুগন্ধি চা, দামে পাল্লা দিচ্ছে সোনার সঙ্গেও

চা বাগানে বসছে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র (ইটিভি ভারত)

জলপাইগুড়ি, 21 মে: চা বাগানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কত, তা জানতে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসাতে চলেছে আবহাওয়া বিভাগ । উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের চা বাগান এলাকায় বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করে চায়ের উৎপাদন । ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানা গেলে চা বাগানের পরিচর্যা করতে সুবিধা হবে ৷ পাশাপাশি আবহাওয়ার সঠিক বার্তা দেওয়া যাবে বলে মত জাতীয় আবহাওয়া দফতরের । হাওয়া অফিসের এই উদ্যোগে যারপরনাই খুশি চা বাগানের মালিকপক্ষ ।

সিকিম ও উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবহাওয়া আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, "উত্তরবঙ্গ ও সিকিম অঞ্চলটা চা বাগানে ঘেরা । সেখানকার জন্য নতুন প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে । চা বাগানে যত বেশি সংখ্যক রেইন গজ বা বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসানো যায় সেই চেষ্টা হচ্ছে । সেই কাজ প্রাথমিক ভাবে শুরুও হয়ে গিয়েছে । আমরা আশা করছি, আসন্ন বর্ষার মধ্যেই কিছু চা বাগানে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসাতে পারব ।"

গোপীনাথ রাহার কথায়, চা বাগানে বা কৃষি বলয়ের উৎপাদন অনেকটাই নির্ভর করে বৃষ্টির উপরে । ফলে কত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হল, সেটা জানতে পারলে খুবই সুবিধা হয় । যেমন কত খরচ হবে, কত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে - এই সবই নির্ভর করে কত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হচ্ছে বা কতদিন খরা হচ্ছে তার উপর ৷ এই রেইন গজগুলো বসানো হলে কতখানি বৃষ্টি হল তার হিসেব পাবে আবহাওয়া দফতর । সেটি চা বাগানের জন্য যেমন খুবই উপকারী হবে, তেমনই আবহাওয়া দফতরের কাছেও এ বিষয়ে তথ্য থাকবে । প্রতিদিন যদি এই বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র ঠিকমতো মনিটরিং করা যায়, তাহলে আবহাওয়ার সঠিক সতর্কতা বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে । কোথায় বেশি বৃষ্টি হচ্ছে, কোথায় কম বৃষ্টি হচ্ছে তাও জানতে পারবে হাওয়া অফিস ।

গোপীনাথ রাহা আরও জানান, আগে বৃষ্টির পরিমাণ কত হল তা জানার জন্য রেইন গজ স্টেশন কম ছিল । গত কয়েক বছর ধরে কীভাবে রেইন গজ নেটওয়ার্ক বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা চালানো হচ্ছিল । এখন রেইন গজ বেড়েছে । 70টি রেইনফল রেকর্ডিং স্টেশন আছে । যার মধ্যে 20টি (এডব্লিউএস) অটোম্যাটিক ওয়েদার স্টেশন আছে । যার থেকে তাপমাত্রার ডেটা পায় হাওয়া অফিস । সম্প্রতি চারটে জায়গায় অটোম্যাটিক ওয়েদার স্টেশন বসানো হয়েছে । এই চারটে জায়গা হল মালবাজার স্কুল, বানারহাট স্কুল,মাথাভাঙা কলেজ ও ধুপগুড়ি কলেজ । এছাড়াও গৌড়বঙ্গের দিকেও বসানো হয়েছে এডব্লিউএস ।

চা বাগানের মালিক তথা জলপাইগুড়ি জেলার ক্ষুদ্র চাষী সমিতির সম্পাদক বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, "রাজ্যের চা উৎপাদনের 52% চা আমরা দিয়ে থাকি । আইএমডি-র এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই । আমরাও জানতে চাই, কতটা জল চা বাগানে দিতে হবে । কারণ সব চা বাগানে সেচের সামর্থ সবার নেই । এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে এ বছর বিরাট ক্ষতির মুখে চা বাগান । কারণ দীর্ঘদিন পর্যাপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে না । ফলে চা উৎপাদনও সেভাবে হচ্ছে না । আইএমডি যদি বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসায়, তাহলে আমরা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানতে পাব এবং বৈজ্ঞানিক ভাবে চা বাগানের পরিচর্যা ও সেচের কাজ করতে পারব ।"

চা বাগানের মালিকপক্ষের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অমৃতাংশু চক্রবর্তী বলেন, "এ বার যেভাবে বৃষ্টি কম হয়েছে তাতে আমরা বিরাট ক্ষতির মুখে । চা বাগান বাঁচানোই চ্যালেঞ্জ । ফলে চা বাগানে বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বসালে আমাদের সুবিধা হবে ।"

আরও পড়ুন:

  1. উচ্চমাধ্যমিকে সফল চা শ্রমিকের মেয়ে, স্বপ্ন সরকারি আমলা হওয়ার
  2. বাগান খুললে ফিরবে 'ভালো দিন', আশায় ভোট দান চা শ্রমিকদের
  3. দার্জিলিংয়ের সুগন্ধি চা, দামে পাল্লা দিচ্ছে সোনার সঙ্গেও
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.