রায়গঞ্জ, 23 মে: নিজের বাড়িতে ঢোকার অধিকার নেই বৃদ্ধা মায়ের ! অশীতিপর মানুষটিকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি ছোট ছেলে ! এমনই অভিযোগে নিজের বাড়ির সামনেই ধরনায় বসেছেন বৃদ্ধা ৷ আরও অভিযোগ, ওই বাড়ি বেআইনি ভাবে নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছেন তাঁর ছোট ছেলে ৷ যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ৷
রায়গঞ্জ থানার সুভাষগঞ্জের কোতগ্রাম এলাকার ঘটনা ৷ মঙ্গলা সরকারের অভিযোগ তাঁর ছোট ছেলে স্বপন সরকারের বিরুদ্ধে ৷ তবে স্বপনের দাবি, তিনি 30 বছর ধরে মায়ের সেবা করেছেন । মায়ের জায়গা পর্যাপ্ত অর্থ দিয়ে কিনে নিয়েছেন তিনি । তাই মাকে রাখার বিষয়টি সব ভাইবোন মিলে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে ৷ এই অজুহাতে তিনি মাকে ঘরে ঢুকতে দেননি বলে অভিযোগ ৷
এ দিকে, ঘরে ঢুকতে না-পেরে বাড়ির দাওয়ায় বসে রয়েছেন বৃদ্ধা । এমন দিনও দেখতে হবে তিনি কখনও ভাবেননি । স্থানীয় সূত্রের খবর, কোতগ্রামের বাসিন্দা মঙ্গলা দেবীর পাঁচটি ছেলে ও চারটি মেয়ে । কয়েকদিন আগেই গত হয়েছেন বড় ছেলে । বৃদ্ধার স্বামী মারা গিয়েছেন অনেক আগেই । এতদিন ছোট ছেলে স্বপন সরকারের সঙ্গে নিজের বাড়িতেই বসবাস করতেন ওই বৃদ্ধা ।
তাঁর মেয়ে রীণা কীর্তনীয়ার অভিযোগ, মাকে কখনও মেয়েদের বাড়িতে নিয়ে যেতে দিতেন না তাঁদের ছোট ভাই অর্থাৎ বৃদ্ধার ছোট ছেলে স্বপন । কয়েকমাস আগে মেয়েরা জোর করে মাকে নিয়ে যেতেই ঘটে বিপত্তি ৷ নিজের বাড়ির দরজা চিরতরে তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে যায় । মাকে আর ঘরে তুলতে চান না তাঁর ছোট ছেলে ।
বৃহস্পতিবার মেয়েরা মাকে তাঁর বাড়িতে ঢোকাতে এলে শুরু হয় বচসা । ছোট ছেলের বাধা পেয়ে বাড়ির দরজায় এসে বসে পড়েন মঙ্গলা দেবী । তিনি চান, বাকী জীবনটা স্বামীর ঘরে কাটাতে । জানা যায়, বৃদ্ধার নামে থাকা বাড়িটি তাঁর ছোট ছেলে নিজের নামে করে নিয়েছে । তা কখন, কীভাবে হল তাও বলতে পারছেন না বৃদ্ধা ।
বৃদ্ধার আরেক ছেলে গণেশ সরকার বলেন, তাঁর আর্থিক অবস্থা শোচনীয় । মা আগে থেকেই ছোট ভাইয়ের বাড়িতে থাকতেন । শোনা যাচ্ছে, জায়গাটি ভাইয়ের নামে করা হয়েছে । তাঁর অভিযোগ, ভাই ওই জায়গা হাতিয়ে নিয়েছে । এই ঘটনার জেরে হতবাক প্রতিবেশীরাও । তাঁরা সকলেই বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছেন । তাঁরা চান বৃদ্ধাকে যেন নিজের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয় ।
এ দিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য । তিনি জানান, সহজ ভাবে বৃদ্ধাকে ঢুকতে না-দিলে প্রশাসনকে জানাবেন । যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বৃদ্ধার ছোট ছেলে স্বপন সরকার । তাঁর যুক্তি, বাড়ির জায়গা মায়ের থেকে কিনে নিয়েছেন তিনি । মাকে 30 বছর ধরে সেবা করেছেন । এখন সব ভাইরা মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে মা কোথায় থাকবে । যেন ভাগের মা...৷
আরও পড়ুন: