কেতুগ্রাম, 21 মার্চ: দিন তিনেক ধরে (সোমবার থেকে) নিখোঁজ ছিল বছর দশের এক নাবালিকা। প্রায় 72 ঘণ্টা পরে ওই নাবালিকা পরিচারিকার দেহ উদ্ধার হল গৃহকর্ত্রীর বাড়ি থেকে। নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ, তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে দেহ লোপাটের চেষ্টা চলছিল। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম এলাকায়। স্থানীয়দের দাবি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে তার ফাঁসি দেওয়া হোক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকা মায়ের সঙ্গে কেতুগ্রাম এলাকায় থাকত ৷ পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় স্থানীয় জালাল শেখের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করত। জালাল শেখের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী রুবি বিবি, ছাড়াও দুই ছেলে জুয়েল ও পিয়েল থাকে। ছোট ছেলে পিয়েল অবিবাহিত। জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে ওই নাবালিকাকে রুবি বিবির বাড়িতে থেকেই কাজ করতে হত। তাকে বাড়ি যেতে দেওয়া হত না। এরপরই সোমবার থেকে তার হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না।
নাবালিকার মা রুবি বিবির বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে জানানো হয়, মেয়েটি বাড়ি চলে গিয়েছে। ফলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। নাবালিকার খোঁজ না-পেয়ে কেতুগ্রাম থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করতে যাওয়ার চেষ্টা করলে রুবি বিবি তাঁকে আশ্বাস দিয়ে বলে আরও দু-একদিন অপেক্ষা করতে বলেন। এদিকে বিষয়টি পাড়ায় জানাজানি হতে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরে পাড়ার লোকজন জুয়েলের বাড়িতে গিয়ে চড়াও হয়।
তারা রুবি বিবি ও পিয়েলকে চেপে ধরতেই তারা বলে মেয়েটি আত্মঘাতী হয়েছে। তিনতলার চিলেকোঠার ঘরে তার বডি পড়ে আছে। এরপর রুবি ও পিয়েল পালানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা তাদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। গ্রামবাসীদের মতে, নাবালিকাকে ধর্ষণ করার পরে মা ও ছেলে মিলে প্রমাণ লোপাট করতে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। চিলেকোঠার ঘরে সেই দেহ লুকিয়ে রাখা হয়। পরে সুযোগ বুঝে সেই দেহ পাচারের চেষ্টা চলছিল ৷
স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, "গরিব পরিবারের মেয়ে। পরিচারিকার কাজ করত সে। সোমবার থেকে মেয়েটা নিখোঁজ ছিল। পরে রটে যায় সে নাকি কারও সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে। এদিকে দেখা যাচ্ছে যেখানে কাজ করত সেই বাড়ির ছেলে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর যাতে জানাজানি না-হয় সেইজন্য মা ও ছেলে মিলে মেয়েটাকে গলায় ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলেছে। যা বোঝা যাচ্ছে মেয়েটাকে 72 ঘণ্টা আগে মেরে তিনতলার ঘরে ফেলে রেখেছিল। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই। '
নাবালিকার মা বলেন, "আমার মেয়ে যেতে চাইত না। আমি জোর করে কাজে পাঠাতাম। মেয়েটা কয়েকদিন ধরেই নিখোঁজ। আমার মনে হয় তার ছেলে ধর্ষণ করার পরে মা ও ছেলে মিলে মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেছে।" কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, "ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই জানা যাবে কী হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।"
আরও পড়ুন: