ETV Bharat / state

বউবাজার বিস্ফোরণের অন্যতম অভিযুক্ত রশিদ খানের মুক্তির আর্জি, শুনবে হাইকোর্ট - Boubazar blast case

Boubazar blast case: বউবাজার বিস্ফোরণ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত রশিদ খানকে মুক্তি দেওয়ার আর্জি ৷ মেয়াদ শেষের আগে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে কি না, তার শুনানি হবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 13, 2024, 4:22 PM IST

Calcutta High Court
কলকাতা হাইকোর্টে বউবাজার বিস্ফোরণ মামলা (ফাইল)

কলকাতা, 13 মে: বউবাজার বিস্ফোরণ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত রশিদ খানকে মেয়াদ শেষের আগে মুক্তি দেওয়া যায় কি না, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ গ্রীষ্মকালীন অবকাশের পর বিবেচনা করবে। ইতিমধ্যেই 31 বছর জেল খেটেছে রশিদ ৷ টাডা আইনে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। মূলত, অভিযুক্তের বয়স, তার কোনওরকম অসামাজিক লোকজনের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ আছে কিনা, রশিদ খানকে মুক্তি দিলে সমাজে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, এই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখবে কলকাতা হাইকোর্ট।

তবে 24 জুন পর্যন্ত তার সহকারী মহম্মদ খালিদকে ছাড়ার সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
আপাতত রশিদের মামলাটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এপ্রিল মাসে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ বউবাজার বোমা বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত মহম্মদ খালিদকে 31 বছর পর মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ উল্লেখ করেই রাশিদ খানেরও মুক্তির আর্জি জানানো হয় হাইকোর্টে।

উল্লেখ্য, 1993 সালের 16 মার্চ রাতে 267 বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের দোতলা একটি বাড়ি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে যায়। মৃত্যু হয় 69 জনের। সেই মামলায় কলকাতার সাট্টা কারবারের ‘বেতাজ বাদশা’ রশিদ খানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। বলা হয়, রশিদ খানের কাছে যে পরিমাণ বিস্ফোরক ছিল, তা গোটা কলকাতা উড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। মহম্মদ খালিদ সেই রশিদেরই ছায়াসঙ্গী। ওই মামলায় তাকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। কয়েক বছর আগে খালিদ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার দাবিতে রাজ্য সরকারের ‘সেনটেন্স রিভিউ বোর্ডে’ আবেদন করে। সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তাকে এপ্রিল মাসে 15 দিনের মধ্যে ছাড়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু রাজ্যের তরফে সেই নির্দেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে দাবি করে এক মাসের জন্য নির্দেশ কার্যকর করার উপর স্থগিতাদেশ জারি করা হয়।

সোমবার রশিদ খানের আইনজীবী আদালতে বলেন, "অভিযুক্তর 59 বছর বয়স। 15 বারের বেশি প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন। সামাজিক ক্ষেত্রে কোনওরকম ক্ষতিকর কিছু করেননি।" এই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, "এই মর্মে জেল কতৃপক্ষের কাছে তিনি আবেদন করতে পারেন যে, 31 বছর ধরে তিনি জেলে রয়েছেন। জেলে থাকাকালীন তার ভালো ভুমিকা ছিল। কিন্তু সেই ধরনের কোনও আইন কি রাজ্যে আছে ?" রাজ্যের এবিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট নীতি আছে কি না, রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের কাছে জানতেও চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি। কিশোর দত্ত জানান, রিভিউ বোর্ডের রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে 1993 সালে বিস্ফোরণের ঘটনায় 69 জনের মৃত্যু হয়। 9 অক্টবর 2023-এ মেদিনীপুর জেল সুপার জানান, জেলে রশিদের ব্যবহার খুব ভালো।

কিন্তু কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, রশিদ খানকে ছাড়লে সমাজে তার প্রভাব পড়তে পারে। পরবর্তীতে ফের এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে। যেভাবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিলেন তিনি, সে দিকে তাকিয়ে তাকে ছাড়া উচিত নয়। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল আরও বলেন, "রাজ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে সমস্ত জেলবন্দীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো অভিযোগ রয়েছে, তাদের সময়সীমা পূর্ণ না হওয়ার আগে ছাড়া হবে না।" এই মর্মে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ আছে বলেও জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। প্রধান বিচারপতি 24 জুন ফের মামলাটি শুনানি করবেন।

আরও পড়ুন:

  1. এফআইআর চ্যালেঞ্জ করে এবার হাইকোর্টের দ্বারে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
  2. আমলা-রাজ্যপালের অনুমতির গেরোয় থমকে বিচার, সিবিআইকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ
  3. সম্পত্তি লিখিয়ে বাড়ি থেকে মা'কে বের করে দিয়েছে ছেলে, হাইকোর্টের দ্বারস্থ বৃদ্ধা

কলকাতা, 13 মে: বউবাজার বিস্ফোরণ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত রশিদ খানকে মেয়াদ শেষের আগে মুক্তি দেওয়া যায় কি না, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ গ্রীষ্মকালীন অবকাশের পর বিবেচনা করবে। ইতিমধ্যেই 31 বছর জেল খেটেছে রশিদ ৷ টাডা আইনে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। মূলত, অভিযুক্তের বয়স, তার কোনওরকম অসামাজিক লোকজনের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ আছে কিনা, রশিদ খানকে মুক্তি দিলে সমাজে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, এই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখবে কলকাতা হাইকোর্ট।

তবে 24 জুন পর্যন্ত তার সহকারী মহম্মদ খালিদকে ছাড়ার সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
আপাতত রশিদের মামলাটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এপ্রিল মাসে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ বউবাজার বোমা বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত মহম্মদ খালিদকে 31 বছর পর মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ উল্লেখ করেই রাশিদ খানেরও মুক্তির আর্জি জানানো হয় হাইকোর্টে।

উল্লেখ্য, 1993 সালের 16 মার্চ রাতে 267 বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের দোতলা একটি বাড়ি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে যায়। মৃত্যু হয় 69 জনের। সেই মামলায় কলকাতার সাট্টা কারবারের ‘বেতাজ বাদশা’ রশিদ খানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। বলা হয়, রশিদ খানের কাছে যে পরিমাণ বিস্ফোরক ছিল, তা গোটা কলকাতা উড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। মহম্মদ খালিদ সেই রশিদেরই ছায়াসঙ্গী। ওই মামলায় তাকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। কয়েক বছর আগে খালিদ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার দাবিতে রাজ্য সরকারের ‘সেনটেন্স রিভিউ বোর্ডে’ আবেদন করে। সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তাকে এপ্রিল মাসে 15 দিনের মধ্যে ছাড়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু রাজ্যের তরফে সেই নির্দেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে দাবি করে এক মাসের জন্য নির্দেশ কার্যকর করার উপর স্থগিতাদেশ জারি করা হয়।

সোমবার রশিদ খানের আইনজীবী আদালতে বলেন, "অভিযুক্তর 59 বছর বয়স। 15 বারের বেশি প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন। সামাজিক ক্ষেত্রে কোনওরকম ক্ষতিকর কিছু করেননি।" এই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, "এই মর্মে জেল কতৃপক্ষের কাছে তিনি আবেদন করতে পারেন যে, 31 বছর ধরে তিনি জেলে রয়েছেন। জেলে থাকাকালীন তার ভালো ভুমিকা ছিল। কিন্তু সেই ধরনের কোনও আইন কি রাজ্যে আছে ?" রাজ্যের এবিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট নীতি আছে কি না, রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের কাছে জানতেও চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি। কিশোর দত্ত জানান, রিভিউ বোর্ডের রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে 1993 সালে বিস্ফোরণের ঘটনায় 69 জনের মৃত্যু হয়। 9 অক্টবর 2023-এ মেদিনীপুর জেল সুপার জানান, জেলে রশিদের ব্যবহার খুব ভালো।

কিন্তু কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, রশিদ খানকে ছাড়লে সমাজে তার প্রভাব পড়তে পারে। পরবর্তীতে ফের এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে। যেভাবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিলেন তিনি, সে দিকে তাকিয়ে তাকে ছাড়া উচিত নয়। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল আরও বলেন, "রাজ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে সমস্ত জেলবন্দীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো অভিযোগ রয়েছে, তাদের সময়সীমা পূর্ণ না হওয়ার আগে ছাড়া হবে না।" এই মর্মে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ আছে বলেও জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। প্রধান বিচারপতি 24 জুন ফের মামলাটি শুনানি করবেন।

আরও পড়ুন:

  1. এফআইআর চ্যালেঞ্জ করে এবার হাইকোর্টের দ্বারে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
  2. আমলা-রাজ্যপালের অনুমতির গেরোয় থমকে বিচার, সিবিআইকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ
  3. সম্পত্তি লিখিয়ে বাড়ি থেকে মা'কে বের করে দিয়েছে ছেলে, হাইকোর্টের দ্বারস্থ বৃদ্ধা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.