ETV Bharat / state

তহবিলের টাকা একশো ভাগ খরচের দাবি সুনীলের, সরকারি তথ্য বলছে অন্য কথা; দেখুন সাংসদের রিপোর্ট কার্ড

Bardhaman Purba Lok Sabha Constituency: একদা বামদুর্গ হিসেবে খ্যাত বর্ধমান এখন ঘাসফুলের খাসতালুক ৷ 2014 সালের পর 2019 সালেও এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে সাংসদ হন সুনীল মণ্ডল ৷ 5 বছরে কী কাজ করলেন এলাকায়, বাকি থাকল কোনটা ? সাংসদের সঙ্গে কথা বলল ইটিভি ভারত ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 18, 2024, 4:42 PM IST

Etv Bharat
Etv Bharat
সুনীল মণ্ডলের রিপোর্ট কার্ড

পূর্ব বর্ধমান, 18 মার্চ: রাজ্যের 42টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে 38 নম্বরে রয়েছে বর্ধমান পূর্ব ৷ এক সময়ের সিপিএমের গড় এই কেন্দ্রটি 2014 সালে বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল । 2019 সালে দ্বিতীয়বারের জন্য ওই কেন্দ্র থেকে সাংসদ হন । এরপর 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন সুনীল ৷ তবে বিধানসভা ভোটে গেরুয়া শিবিরের পরাজয়ের পর ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন তিনি ৷

তাঁকে ঘিরে কম বিতর্ক হয়নি ৷ দল বদলের পর ফের তৃণমূলে আসায় দলের স্থানীয় কর্মী থেকে অনেকেই অসন্তুষ্ট হন ৷ পোস্টারও পড়েছিল তাঁকে দলে না ফেরানোর আবেদন জানিয়ে ৷ বিতর্কের মাঝে এলাকার উন্নয়নে কতটা কাজ করেছেন তিনি ? ইচ্ছে থাকলেও করতে পারলেন না কোন কাজ ? খোঁজ নিল ইটিভি ভারত । এই নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বললেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল ।

বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্র মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা । বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে রায়না, জামালপুর, কালনা, মেমারি, পূর্বস্থলী দক্ষিণ, পূর্বস্থলী উত্তর ও কাটোয়া বিধানসভা কেন্দ্র। ম্যাপ বলছে, কেন্দ্রকে ঘিরে আছে হুগলি, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা । রাঢ়বঙ্গের কৃষিপ্রধান জেলার অন্যতম পূর্ব বর্ধমানকে ধানের গোলা বলা হয় ৷ তাই কৃষির দিকেই জোর দিতে চেয়েছিলেন বলে জানান বিদায়ী সাংসদ । পাঁচ বছরে সাংসদ তহবিলে তিনি 17 কোটি টাকা পেয়েছেন । তার মধ্যে কয়েক হাজার টাকা বাদ দিয়ে বাকি প্রায় সমস্তটাই উন্নয়ন খাতে খরচ করতে পেরেছেন বলে দাবি তাঁর ।

সুনীল মণ্ডলের মতে, "সাংসদ হিসেবে কাটোয়ার মালঞ্চ ব্রিজ তৈরি আমার জীবনে বড়ো কাজ বলে মনে করি । দশ থেকে বারোটা গ্রামের বাসিন্দারা আমার কাছে দাবি করেছিল ওই ব্রিজ যদি না করে দেওয়া হয় তাহলে তারা ভোট বয়কট করবে । আমি তাদের কথা দিয়ে বলেছিলাম চেষ্টা করব । সেই কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি । এটা আমার কাছে খুবই আনন্দের । এছাড়া প্রতিটা ব্লক অঞ্চলে শ্মশান, পুকুরের ঘাট, শৌচালয়, বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর পরিবারের থাকার জন্য বিশ্রামাগার, বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে মানুষের বসার জায়গা, বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা, স্ট্রিট লাইট, সাবমার্সিবলের ব্যবস্থা করেছি । যেহেতু এটা কৃষিপ্রধান এলাকা তাই রাতের দিক থেকে চাষিদের ব্যবসা শুরু হয় । সেই জন্য আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে ।"

তিনি আরও বলেন, "তিনটে কলেজ তৈরি হয়েছে । এছাড়া কালনাতে একটা বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করেছি । সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট প্রায় এক দেড় কিলোমিটারের রাস্তা তৈরি করেছি । কাটোয়ার গোপীনাথ মন্দির এলাকায় রাস্তা আলোর ব্যবস্থা করেছি । পূর্বস্থলী 2 ব্লকে প্রায় 1 কোটি 2 লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে । পূর্বস্থলী এলাকায় প্রায় 70 লক্ষ টাকা খরচে ফ্লাড সেন্টার তৈরি করেছি । আগে বন্যা হলে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে আশ্রয় নিতে হত । এখন ফ্লাড সেন্টারে অনেকগুলো ঘর করা হয়েছে। ফলে সেখানে একসঙ্গে অনেক মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন । আপাতত সেই সেন্টারগুলো পঞ্চায়েত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাড়া দিচ্ছে । কাটোয়া কালনা হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন বসানো হয়েছে । আমাদের টাকা তো সীমিত । 17 কোটি টাকা পেয়েছি । প্রায় 100 শতাংশ টাকাই খরচ করতে পেরেছি ।" সাংসদের মতে, কেন্দ্রীয় সহায়তা তো পশ্চিমবাংলায় নেই । তাঁরা আন্দোলন করেও অনেক কিছু পাননি । যেমন প্রতিবন্ধীদের সহায়তা করার জন্য যে সরঞ্জাম প্রয়োজন সেটা এখনও মেলেনি । বিভিন্ন রাজ্যের 15-16 জন বিরোধী দলের সাংসদ বঞ্চিত হচ্ছেন ।

বাকি থেকে গেল অনেক কাজই ৷ আক্ষেপ সাংসদের ...সুনীল মণ্ডলের কথায়, "একটা সাংসদ ইচ্ছা করলেই অনেক কাজ করতে পারেন । রেলে আমার একটা বড় ভূমিকা আছে । আমি রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ছিলাম । বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম পর্যন্ত রেললাইন আমার উদ্যোগেই হয়েছে । এ বছর উদ্যোগ নিয়েছি মশাগ্রাম থেকে হাওড়া পর্যন্ত রেললাইন করার । মশাগ্রাম, মেমারি, কাটোয়া ও কালনা এলাকায় চারটে ফ্লাইওভার তৈরির জন্য অনুমোদন মিলেছে । এই ফ্লাইওভার করা খুবই দরকার ।"
তিনি জানান, এর পাশাপাশি আরও একটা 1100 কোটি টাকার প্রোজেক্ট ছিল । টেন্ডারও হয়েছিল । কৃষি সেচের উন্নতির জন্য দামোদর নদের উপর একটা জলাধার বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় রায়নাতে করার কথা ছিল । ওই জলাধার করা গেলে সেখানে জল আটকে বর্ধমান-হুগলি-বাঁকুড়া এলাকায় কৃষির আরও উন্নতি করা যেত । যেহেতু কৃষি প্রধান এলাকা তাই কৃষির যদি উন্নতি না করা যায় তাহলে অবস্থা শোচনীয় হয়ে যাবে । কারণ জলস্তর খুব ভালো নয়। ফল নদীর জলকে কাজে লাগিয়ে চাষ করতে পারলে কৃষকের চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়বে ।

তিনি আরও জানান, কৃষিপণ্য উৎপাদন করার পরে সেই পণ্য বাজরাজাত করা । কৃষকজাত দ্রব্যের ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করা । তামিলনাড়ুর দিকে এই ধরনের ইন্ড্রাস্ট্রি আছে । তাতে ফসল নষ্ট না হয় । ইতিমধ্যেই কিছু ইন্ড্রাস্ট্রির মালিকের সঙ্গে কথাবার্তাও হয়েছিল তাই বর্ধমানেও এই ধরনের শিল্প গড়ে তোলার চেষ্টা হয়েছিল। রাজ্যের পাওয়ার এনার্জির জন্য 10 হাজার কোটি টাকা আমি রাজ্যকে এনে দিয়েছি । আগামিদিনে কয়েকটি বড় প্রোজেক্ট আনার পরিকল্পনা ছিল । যা সড়কপথে হলদিয়া থেকে রায়না হয়ে NH-34 এ গিয়ে মিশবে ।"

নিজেকে দশের মধ্যে কত দেবেন ?

সাংসদের মতে, "সুনীল মণ্ডল যদি অন্য কেউ হত আর এই কাজগুলো করত তাহলে তাঁকে দশে দশ দিতাম । অনেক আফসোসের মধ্যেও একটা আনন্দ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজগুলো আদায় করতে পেরেছি। মানুষের ভালোবাসার আশীর্বাদ নিয়ে পথ চলতে পেরেছি।"

তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বিগত 5 বছরে লোকসভায় সাংসদ সুনীল মণ্ডলের উপস্থিতির হার ছিল 81 শতাংশ ৷এর মধ্যে লোকসভায় 195টি প্রশ্ন করেছেন ও বিতর্কে অংশ নিয়েছেন 20 বার ৷ বিগত পাঁচ বছরে সাংসদ পেয়েছেন 17 কোটি টাকা । যার মধ্যে মাত্র কয়েক হাজার টাকা পড়ে আছে এবং বাকি টাকা উন্নয়নের জন্য ব্যয় করেছেন বলে দাবি সাংসদের ৷ যদিও সাংসদ যাই দাবি করুন, কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্য বলছে অন্য কথা ৷ সাংসদ তহবিলের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে বর্ধমান পূর্বের সাংসদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল 17 কোটি টাকা ৷ তিনি খরচ করেছেন মাত্র 7 কোটি ৷ পড়ে আছে 10 কোটি ৷

আরও পড়ুন :

  1. তহবিলের অধিকাংশ অর্থ খরচই হয়নি, একনজরে রাজু বিস্তার কাজের খতিয়ান
  2. বিষ্ণুপুরে মুখোমুখি সৌমিত্র-সুজাতা, পাঁচ বছরের কাজের নিরিখে জয়ের হ্যাটট্রিক কি হবে বিজেপি প্রার্থীর ?
  3. অসিত মালকে ব্যর্থ সাংসদ তকমা বোলপুরবাসীর, কী বলছে রিপোর্ট কার্ড ?

সুনীল মণ্ডলের রিপোর্ট কার্ড

পূর্ব বর্ধমান, 18 মার্চ: রাজ্যের 42টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে 38 নম্বরে রয়েছে বর্ধমান পূর্ব ৷ এক সময়ের সিপিএমের গড় এই কেন্দ্রটি 2014 সালে বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল । 2019 সালে দ্বিতীয়বারের জন্য ওই কেন্দ্র থেকে সাংসদ হন । এরপর 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন সুনীল ৷ তবে বিধানসভা ভোটে গেরুয়া শিবিরের পরাজয়ের পর ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন তিনি ৷

তাঁকে ঘিরে কম বিতর্ক হয়নি ৷ দল বদলের পর ফের তৃণমূলে আসায় দলের স্থানীয় কর্মী থেকে অনেকেই অসন্তুষ্ট হন ৷ পোস্টারও পড়েছিল তাঁকে দলে না ফেরানোর আবেদন জানিয়ে ৷ বিতর্কের মাঝে এলাকার উন্নয়নে কতটা কাজ করেছেন তিনি ? ইচ্ছে থাকলেও করতে পারলেন না কোন কাজ ? খোঁজ নিল ইটিভি ভারত । এই নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বললেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল ।

বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্র মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা । বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে রায়না, জামালপুর, কালনা, মেমারি, পূর্বস্থলী দক্ষিণ, পূর্বস্থলী উত্তর ও কাটোয়া বিধানসভা কেন্দ্র। ম্যাপ বলছে, কেন্দ্রকে ঘিরে আছে হুগলি, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা । রাঢ়বঙ্গের কৃষিপ্রধান জেলার অন্যতম পূর্ব বর্ধমানকে ধানের গোলা বলা হয় ৷ তাই কৃষির দিকেই জোর দিতে চেয়েছিলেন বলে জানান বিদায়ী সাংসদ । পাঁচ বছরে সাংসদ তহবিলে তিনি 17 কোটি টাকা পেয়েছেন । তার মধ্যে কয়েক হাজার টাকা বাদ দিয়ে বাকি প্রায় সমস্তটাই উন্নয়ন খাতে খরচ করতে পেরেছেন বলে দাবি তাঁর ।

সুনীল মণ্ডলের মতে, "সাংসদ হিসেবে কাটোয়ার মালঞ্চ ব্রিজ তৈরি আমার জীবনে বড়ো কাজ বলে মনে করি । দশ থেকে বারোটা গ্রামের বাসিন্দারা আমার কাছে দাবি করেছিল ওই ব্রিজ যদি না করে দেওয়া হয় তাহলে তারা ভোট বয়কট করবে । আমি তাদের কথা দিয়ে বলেছিলাম চেষ্টা করব । সেই কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি । এটা আমার কাছে খুবই আনন্দের । এছাড়া প্রতিটা ব্লক অঞ্চলে শ্মশান, পুকুরের ঘাট, শৌচালয়, বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর পরিবারের থাকার জন্য বিশ্রামাগার, বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে মানুষের বসার জায়গা, বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা, স্ট্রিট লাইট, সাবমার্সিবলের ব্যবস্থা করেছি । যেহেতু এটা কৃষিপ্রধান এলাকা তাই রাতের দিক থেকে চাষিদের ব্যবসা শুরু হয় । সেই জন্য আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে ।"

তিনি আরও বলেন, "তিনটে কলেজ তৈরি হয়েছে । এছাড়া কালনাতে একটা বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করেছি । সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট প্রায় এক দেড় কিলোমিটারের রাস্তা তৈরি করেছি । কাটোয়ার গোপীনাথ মন্দির এলাকায় রাস্তা আলোর ব্যবস্থা করেছি । পূর্বস্থলী 2 ব্লকে প্রায় 1 কোটি 2 লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে । পূর্বস্থলী এলাকায় প্রায় 70 লক্ষ টাকা খরচে ফ্লাড সেন্টার তৈরি করেছি । আগে বন্যা হলে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে আশ্রয় নিতে হত । এখন ফ্লাড সেন্টারে অনেকগুলো ঘর করা হয়েছে। ফলে সেখানে একসঙ্গে অনেক মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন । আপাতত সেই সেন্টারগুলো পঞ্চায়েত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাড়া দিচ্ছে । কাটোয়া কালনা হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন বসানো হয়েছে । আমাদের টাকা তো সীমিত । 17 কোটি টাকা পেয়েছি । প্রায় 100 শতাংশ টাকাই খরচ করতে পেরেছি ।" সাংসদের মতে, কেন্দ্রীয় সহায়তা তো পশ্চিমবাংলায় নেই । তাঁরা আন্দোলন করেও অনেক কিছু পাননি । যেমন প্রতিবন্ধীদের সহায়তা করার জন্য যে সরঞ্জাম প্রয়োজন সেটা এখনও মেলেনি । বিভিন্ন রাজ্যের 15-16 জন বিরোধী দলের সাংসদ বঞ্চিত হচ্ছেন ।

বাকি থেকে গেল অনেক কাজই ৷ আক্ষেপ সাংসদের ...সুনীল মণ্ডলের কথায়, "একটা সাংসদ ইচ্ছা করলেই অনেক কাজ করতে পারেন । রেলে আমার একটা বড় ভূমিকা আছে । আমি রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ছিলাম । বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম পর্যন্ত রেললাইন আমার উদ্যোগেই হয়েছে । এ বছর উদ্যোগ নিয়েছি মশাগ্রাম থেকে হাওড়া পর্যন্ত রেললাইন করার । মশাগ্রাম, মেমারি, কাটোয়া ও কালনা এলাকায় চারটে ফ্লাইওভার তৈরির জন্য অনুমোদন মিলেছে । এই ফ্লাইওভার করা খুবই দরকার ।"
তিনি জানান, এর পাশাপাশি আরও একটা 1100 কোটি টাকার প্রোজেক্ট ছিল । টেন্ডারও হয়েছিল । কৃষি সেচের উন্নতির জন্য দামোদর নদের উপর একটা জলাধার বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় রায়নাতে করার কথা ছিল । ওই জলাধার করা গেলে সেখানে জল আটকে বর্ধমান-হুগলি-বাঁকুড়া এলাকায় কৃষির আরও উন্নতি করা যেত । যেহেতু কৃষি প্রধান এলাকা তাই কৃষির যদি উন্নতি না করা যায় তাহলে অবস্থা শোচনীয় হয়ে যাবে । কারণ জলস্তর খুব ভালো নয়। ফল নদীর জলকে কাজে লাগিয়ে চাষ করতে পারলে কৃষকের চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়বে ।

তিনি আরও জানান, কৃষিপণ্য উৎপাদন করার পরে সেই পণ্য বাজরাজাত করা । কৃষকজাত দ্রব্যের ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করা । তামিলনাড়ুর দিকে এই ধরনের ইন্ড্রাস্ট্রি আছে । তাতে ফসল নষ্ট না হয় । ইতিমধ্যেই কিছু ইন্ড্রাস্ট্রির মালিকের সঙ্গে কথাবার্তাও হয়েছিল তাই বর্ধমানেও এই ধরনের শিল্প গড়ে তোলার চেষ্টা হয়েছিল। রাজ্যের পাওয়ার এনার্জির জন্য 10 হাজার কোটি টাকা আমি রাজ্যকে এনে দিয়েছি । আগামিদিনে কয়েকটি বড় প্রোজেক্ট আনার পরিকল্পনা ছিল । যা সড়কপথে হলদিয়া থেকে রায়না হয়ে NH-34 এ গিয়ে মিশবে ।"

নিজেকে দশের মধ্যে কত দেবেন ?

সাংসদের মতে, "সুনীল মণ্ডল যদি অন্য কেউ হত আর এই কাজগুলো করত তাহলে তাঁকে দশে দশ দিতাম । অনেক আফসোসের মধ্যেও একটা আনন্দ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজগুলো আদায় করতে পেরেছি। মানুষের ভালোবাসার আশীর্বাদ নিয়ে পথ চলতে পেরেছি।"

তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বিগত 5 বছরে লোকসভায় সাংসদ সুনীল মণ্ডলের উপস্থিতির হার ছিল 81 শতাংশ ৷এর মধ্যে লোকসভায় 195টি প্রশ্ন করেছেন ও বিতর্কে অংশ নিয়েছেন 20 বার ৷ বিগত পাঁচ বছরে সাংসদ পেয়েছেন 17 কোটি টাকা । যার মধ্যে মাত্র কয়েক হাজার টাকা পড়ে আছে এবং বাকি টাকা উন্নয়নের জন্য ব্যয় করেছেন বলে দাবি সাংসদের ৷ যদিও সাংসদ যাই দাবি করুন, কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্য বলছে অন্য কথা ৷ সাংসদ তহবিলের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে বর্ধমান পূর্বের সাংসদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল 17 কোটি টাকা ৷ তিনি খরচ করেছেন মাত্র 7 কোটি ৷ পড়ে আছে 10 কোটি ৷

আরও পড়ুন :

  1. তহবিলের অধিকাংশ অর্থ খরচই হয়নি, একনজরে রাজু বিস্তার কাজের খতিয়ান
  2. বিষ্ণুপুরে মুখোমুখি সৌমিত্র-সুজাতা, পাঁচ বছরের কাজের নিরিখে জয়ের হ্যাটট্রিক কি হবে বিজেপি প্রার্থীর ?
  3. অসিত মালকে ব্যর্থ সাংসদ তকমা বোলপুরবাসীর, কী বলছে রিপোর্ট কার্ড ?
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.