ব্যারাকপুর, 18 মার্চ: দিনকয়েক আগে আইএসএল ডার্বিতে যা সম্ভব হয়নি, সেটাই সোমবার ডেভলপমেন্ট লিগের ডার্বিতে করে দেখাল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ছোটরা ৷ ব্যারাকপুরে জুনিয়র ডার্বিতে এদিন লাল-হলুদকে পাঁচ গোল দিল সবুজ-মেরুনের ছোটরা ৷ যদিও সিনিয়র পর্যায়ে এযাবৎ সর্বাধিক ব্যবধানে জয়ের রেকর্ডে (5-0) এদিনও থাবা বসাতে ব্যর্থ মোহনবাগান। সুপার জায়ান্টের ছোটরা এদিন 5-1 গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গলকে। জুনিয়র পর্যায়ে কোনও ডার্বিতে এ যাবৎ সবুজ-মেরুনের রেকর্ড ব্যবধানে জয় এটি।
প্রথমার্ধে 2-0 গোলে এগিয়ে থাকার পরে দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিনটে গোল করে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ছোটরা। একটা সময় মনে হচ্ছিল সিনিয়র পর্যায়ে মোহনবাগান যা করতে পারেনি এবার জুনিয়র পর্যায়ে সেটাই করে দেখাতে চলেছে। সংযুক্তি সময়ে আমন সিকে'র গোলে বাগানের সেই লক্ষ্যপূরণ হয়নি ৷ যদিও একরাশ লজ্জা নিয়েই এদিন মাঠ ছাড়ল লাল-হলুদের জুনিয়র ব্রিগেড ৷
সোমবার ব্যারাকপুরে বিভূতিভূষণ স্টেডিয়ামে ছোটদের ডার্বি দেখতে সমর্থকদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। দুই দলের সমর্থকরাই ব্যানার, ফেস্টুন, ড্রাম নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রথম থেকে দুই দলই আক্রমণ প্রতিআক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করতে থাকে। তবে দাপট বেশি ছিল বাস্তব রায়ের ছেলেদের। 23 মিনিটে শিবাজিৎ সিং প্রথমে গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন। পিছিয়ে পড়ে আক্রমণের চাপ বাড়াতে থাকে ইস্টবেঙ্গল।
পালটা আক্রমণে ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টায় ছিল মোহনবাগানও। 43 মিনিটে দ্বিতীয় গোল সবুজ-মেরুণের। টাইসন সিং দ্বিতীয় গোল করেন। বিরতির পরে খেলার শুরু হওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে ফের এগিয়ে যায় মোহনবাগান। এবার গোল সুহেল আহমেদ ভাটের। চোট সারিয়ে ফিরে ছন্দে সবুজ-মেরুনের এই কাশ্মীরি স্ট্রাইকার। 67 মিনিটে দলের চার নম্বর এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করেন সুহেল। অন্যদিকে, তিন নম্বর গোলের পরেই ইস্টবেঙ্গল ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল। একটা সময় পুরো খেলাটাই হচ্ছিল ইস্টবেঙ্গলের অর্ধেক।
ফলশ্রুতিতে 82 মিনিটে মোহনবাগানের পাঁচ নম্বর গোল। গোলদাতা দীপেন্দু বিশ্বাস। এই সময়ে সমর্থকরা পাঁচ গোলে জয়ের আনন্দের চেয়েও প্রতিশোধের আনন্দে উৎসব করতে থাকেন। এমনকী 6 নম্বর গোল করার চেষ্টা করতে থাকে মোহনবাগান। অন্যদিকে, লজ্জা বাঁচাতে ব্যবধান কমাতে চেষ্টা করতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে আমন সিকে গোল করে মুখরক্ষা করেন। পাঁচ গোল হজম করে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইস্টবোঙ্গলের গোলরক্ষক রণিত সরকার।
তাঁকে সান্ত্বনা দেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কোচ বাস্তব রায়। তাঁর মতে, "এদেশেই পাঁচ গোল নিয়ে মাতামাতি হয়। এখন বিশ্বে আকছাড় হয় পাঁচ গোল। জুনিয়র দল। ওরা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ফিরে আসবে। এবার ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট লিগে চারটে দল পরের পর্বে যাবে। লড়াই করছে ছয়টি দল। তাই পরের ম্যাচে জেতা পাখির চোখ। না-হলে গোল পার্থক্যের সুবিধা পাওয়া যাবে না।" হাবাসের ফুটবল দর্শনই জুনিয়র পর্যায়ে মেনে চলা হয় বলে জানিয়েছেন বাস্তব।
আরও পড়ুন:
- দুরন্ত বেগে ছুটছে মোহনতরী, কোচিতে গিয়ে কেরালা 'বধ' সবুজ-মেরুনের
- হকির বড় ম্যাচ জিতে আইএসএল ডার্বি হারের ক্ষতে প্রলেপ ইস্টবেঙ্গলের
- ফের শীর্ষে ওঠার হাতছানি, হাফটাইমে এক গোলে এগিয়ে বাগান