কলকাতা, 24 এপ্রিল: নির্বাচনী বন্ড অসাংবিধানিক বলেই জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত । সেই মামলার আবেদনকারী সিপিএম ভোটের বা দলীয় অর্থ সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে কতটা স্বচ্ছ ? পাই পয়সার হিসেবে স্বচ্ছতার সঙ্গেই দল রাখে, বলছেন সিপিএমের কলকাতা জেলার সম্পাদক কল্লোল মজুমদার । অন্যদিকে সিপিএম চাঁদা দেওয়া জনৈক শম্ভুনাথ দাস বলছেন, ‘‘কমিউনিস্ট পার্টি মানুষের অর্থ চলে । আমরা যে অর্থদান করি সেটাও হাড়ভাঙা খাটুনির টাকা । পছন্দের দলকে দিয়ে থাকি। সিপিএম যে পন্থায় টাকা তোলে, সবসময় সেটা সমর্থন যোগ্য ৷’’
নির্বাচনী বন্ড নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম৷ তাদের বক্তব্য ছিল, এর আড়ালে বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে । তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা ৷ সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলেছে ৷ বন্ড খারিজও করে দিয়েছে ৷ ফলে সিপিএমের তোলা অভিযোগ কার্যত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৷
যদিও এই বন্ড থেকে টাকা দলের তহবিলের জন্য নেওয়ার সুযোগ সিপিএমেরও ছিল ৷ কিন্তু তারা নেয়নি ৷ তাদের যুক্তি, দলের লক্ষ্য একটাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই যেন পাল্টা দুর্নীতির অভিযোগে তাদের দিকে না ওঠে ৷ তবে সিপিএমের তরফে অর্থ আদায় নিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে সিপিএম ।
সিপিএম সূত্রে খবর, হাজার দু’হাজার টাকা পর্যন্ত বিল কেটে টাকা নগদে নেওয়া হয় । তবে টাকার অঙ্ক যখন 5 হাজার ছাড়ায়, তখন বাধ্যতামূলক দাতার প্যান নম্বর নেওয়া । তবে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বাড়তি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে । সেগুলো হল - রশিদে বিস্তারিত তথ্য লেখা, প্যান, আধার নম্বর নেওয়া । চেক মারফত টাকা নেওয়া । দাতা কী কাজ করেন, সেই তথ্য বিস্তারিত রাখা । সেই সবটাই প্রতিবছর আয়কর দফতরের কাছে পাঠানো হয় । পাশাপশি দেওয়া হয় নির্বাচন কমিশনে ।
এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা কল্লোল মজুমদার বলেন, ‘‘মানুষ মতাদর্শকে ভালোবেসে চাঁদা দেন । সেই টাকায় পার্টি চলে । 200 টাকা 500 টাকা থেকে আর্থিক সচ্ছ্বল মানুষ 50 হাজার, একলাখ টাকাও দেন । আগে ছিল রশিদ কেটে টাকা নিতে পারবে । রাজনৈতিক দল কে টাকা দিলে কর ছাড় মেলে । আমাদের সব তথ্য থাকে । মোটা অংকের টাকা চেকে দিতে হবে । আমাদের কাছে অল্প মোটা টাকা এসেছে ৷ কিন্তু সব স্বচ্ছ পথে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপি নতুন একটা কনসেপ্ট আনল বন্ড মারফত টাকা নেওয়া । এক অংশকে বড় অংকের টাকার বরাত পাইয়ে দিয়ে সেখান থেকে ঘুষ নিয়েছে । আরেকটা হল, যারা টাকা দেবে না, সরকারি বিভিন্ন এজেন্সিকে দেখিয়ে ভয় দেখানো । এই ভাবেই টাকা আদায় করেছে ।’’
সিপিএমকে অর্থ দান করেছেন জনৈক শম্ভুনাথ দাস । তিনি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন । তাঁর কথায়, ‘‘স্বচ্ছতা আছে এই দলটার । কমিউনিস্ট পার্টি সাধারণ মানুষের অর্থ সাহায্যে চলে । দাতা হিসেবে আমি খুশি যে তারা এই টাকার পুঙ্খানুপুঙ্ভাবে হিসেব আয়কর ও নির্বাচন কমিশনে জমা করে । শুধু নির্বাচন নয় সিপিএম পার্টি এসব ক্ষেত্রেই জনগণের অর্থ সাহায্যের পাই পয়সার হিসেবে রক্ষিত হয় ।’’
আরও পড়ুন: