প্রয়াগরাজ, 5 এপ্রিল: রানি ও সুষমা, দুই বোন ৷ শিকড়ের টানে তাঁরা 62 বছর পর সুদূর ডেনমার্ক থেকে এসেছেন ভারতে ৷ 1962 সালে তাঁরা ভারত থেকে ডেনমার্ক চলে গিয়েছিলেন ৷ তখন তাঁরা নেহাতই শিশু৷ ডেনমার্কের এক মহিলা তাঁদের দত্তক নেন ৷ তার পর নিজের সঙ্গে ওই দেশে নিয়ে চলে যান ৷
রানি ও সুষমার এই দেশে কেউ ছিল না ৷ তাঁরা থাকতেন উত্তরপ্রদেশের এলাহবাদের (অধুনা প্রয়াগরাজ) চিলড্রেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অনাথ আশ্রমে ৷ সেখান থেকেই তাঁদের দত্তক নেন ওই ডেনিশ মহিলা ৷ ওই দেশে গিয়েও বারবার শিকড়ের টান অনুভব করেছেন রানি ও সুষমা ৷ বারবার তাঁদের মতে পড়ত চিলড্রেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অনাথ আশ্রমের কথা ৷ সেখানে যাঁদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন, সেই সব বন্ধুদের কথাও মনে পড়ত রানি ও সুষমার ৷
কিন্তু ইউরোপ থেকে ভারত তো আর কম দূরত্ব নয় ৷ চাইলেও তো আর চলে আসা যায় না ৷ তাছাড়া তখন তাঁরা ছিলেন শিশু ৷ ফলে ফেরার পথ ছিল না ৷ এর পর তাঁদের জীবন এগিয়েছে ৷ বড় হয়েছেন তাঁরা৷ কালের নিয়মে বার্ধক্যও এসেছে ৷ কিন্তু মন থেকে মুছে যায়নি চিলড্রেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অনাথ আশ্রমের স্মৃতি ৷ তাই অবশেষে মার্চ মাসে তাঁরা ভারতে আসার পরিকল্পনা করেন ৷
সেই মতো দিনকয়েক আগে তাঁরা আসেন দিল্লিতে ৷ তার পর সেখান থেকে প্রয়াগরাজ আসেন ৷ উত্তরপ্রদেশের এই জেলায় রয়েছে চিলড্রেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অনাথ আশ্রম ৷ রানি ও সুষমা খোঁজখবর নিয়ে গত 2 এপ্রিল সেখানে যান ৷ সেখানে এখনও অনাথ শিশুরা থাকে ৷ তাদের দেখে এই দুই বোনেরও পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায় ৷ ওই আশ্রমের শিশুদের সঙ্গে তাঁরা সময় কাটান ৷ মজা করেন ৷ কেনাকাটা করতে যান ৷ উপহার দেন ৷ ঘুরে দেখেন সেখানকার দর্শনীয় এলাকাগুলি ৷
যাওয়ার আগে তাই রানি-সুষমার চোখে যেমন জল ছিল, তেমনই আশ্রমের বর্তমান আবাসিকরা কাঁদতে-কাঁদতেই তাঁদের বিদায় দিয়েছে ৷ তবে রানি-সুষমা কথা দিয়ে গিয়েছেন যে প্রতি দু’বছর অন্তর তাঁরা এই আশ্রমে এসে কয়েকদিন করে থেকে যাবেন ৷
আরও পড়ুন: