ব্যারাকপুর, 31 ডিসেম্বর: ব্যারাকপুর সোমনাথ শ্যাম এবং অর্জুন সিংয়ের মধ্যে দ্বন্দ্বের অবসান হল না ৷ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পরেও না ৷ দলের নির্দেশ উপেক্ষা করেই আবারও ব্যারাকপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে সরব হলেন তিনি ৷ এবার পুরনো খুনের মামলার ফাইল খোলার হুঁশিয়ারি দিলেন জগদ্দলের বিধায়ক ৷ নাম না করেই এই হুমকি ছিল অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে ৷ বুঝিয়ে দিলেন, অর্জুনের সঙ্গে কোনও সমঝতার পক্ষে নেই শ্যাম ৷
রবিবার ব্যারাকপুরের বাসুদেবপুরের কাউগাছি অঞ্চলে তৃণমূলের একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন সোমনাথ শ্যাম ৷ ছিলেন বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারীও ৷ সেই সভাতেই অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে থাকা পুরনো খুনের মামলার ফাইল খোলার হুমকি দিয়েছেন শ্যাম ৷ তিনি বলেন, "নোয়াপাড়া শহর তৃণমূলের সভাপতি গোপাল মজুমদার খুনের ঘটনার ফাইল পুনরায় খুলে মামলা চালু করতে হবে ৷ এর জন্য যা যা করা দরকার আমি তা করব ৷ যাতে খুনের ঘটনার মূল চক্রীকে গ্রেফতার করা যায় ৷" স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এই মূলচক্রী বলতে অর্জুন সিংকেই নিশানা করেছেন সোমনাথ শ্যাম ৷
শুধু তাই নয়, একাধিক খুনের মামলার হলুদ ফাইল ফের খোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক ৷ ব্যারাকপুরের সাংসদের মুখোশ খুলে দেওয়ারও কথাও বলেন তিনি ৷ এর পরেই সোমনাথ জানিয়েছেন, "সেই সমস্ত খুনের যাবতীয় ফাইল আমি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেব ৷" দলে থেকে ব্যারাকপুরের সাংসদ তৃণমূলের ক্ষতি করছেন বলেও মনে করেন তিনি ৷
উল্লেখ্য, শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে সোমনাথ শ্যামকে ব্যারাকপুরের সাংসদের সঙ্গে সমস্ত বিবাদ মিটিয়ে নিতে বলা হয়েছিল ৷ তৃণমূল সূত্রে খবর, এর জন্য রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ৷ তিনি ব্যারাকপুরের দুই যুযুধান তৃণমূল নেতার মধ্যে সমস্যা মেটাতে দু’পক্ষকে মুখোমুখি বসানোর চেষ্টা করেছিলেন ৷ যদিও, দ্বন্দ্ব মেটাতে বৈঠক ডাকার কথা আগেই অস্বীকার করেছেন সুব্রত বক্সী ৷ কিন্তু, দ্বন্দ্ব ঠেকানোর বৈঠক না হলেও, সেখানে অর্জুন সিং এলেও সোমনাথ শ্যাম আসেননি ৷ তাই শীর্ষ নেতৃত্ব সত্যি কোনও উদ্যোগ নিয়ে থাকলে, তাতে আগেই জল ঢেলে দিয়েছিলেন জগদ্দলের বিধায়ক ৷ আর এবার মমতার নির্দেশও উপেক্ষা করলেন সোমনাথ শ্যাম ৷
সোমনাথ-সুবোধের আক্রমণের প্রসঙ্গে এদিন বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, "দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এ বিষয়ে মুখ খুলতে বারণ করেছেন আমাকে । তাই কে কী বলল, তাতে কিছু আসে যায় না । আমি দলের একনিষ্ঠ সৈনিক । দল এ বিষয়ে যা উত্তর দেওয়ার দেবে । সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেবে । দলে কারও কথাতে ভোট হয় না । ভোট হয় কেবলমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে । তাই, তাঁর আশীর্বাদ যার মাথায় থাকবে সেই থাকবে রাস্তাতে ।"
আরও পড়ুন: