ETV Bharat / state

Corona Effect in Gour : গৌড়ের পর্যটনেও করোনার প্রভাব, চিন্তায় স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে পর্যটকরা

author img

By

Published : Jan 1, 2022, 9:31 PM IST

Corona Effect in Gour
গৌড়ের পর্যটনেও করোনার প্রভাব

করোনার প্রভাব মালদার গৌড়ের পর্যটনে (impact of corona in tourism of gour in malda) ৷ ব্যবসা কমেছে স্থানীয়দের ৷ ওমিক্রন আতঙ্কে কমছে পর্যটকদের সংখ্য়াও ৷

মালদা, 1 জানুয়ারি : মালদা জেলারর অন্যতম নামকরা পর্যটন স্থল হল গৌড় ৷ ঐতিহাসিক দিক দিয়েও যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে এই স্থানের ৷ করোনা সংক্রমণের কারণে গত প্রায় 2 বছর ধরে বন্ধ ছিল গৌড়, আদিনা, পাণ্ডুয়া, জগজীবনপুরের মতো মালদার প্রসিদ্ধ পর্যটনস্থলগুলি ৷ করোনার প্রভাব পড়েছিল এলাকার পর্যটনে (impact of corona in tourism of gour in malda) করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমায় মাঝে খুলেছিল এই পর্যটনস্থলগুলির দরজা ৷ কিন্তু ফের বাড়ছে সংক্রমণ ৷ ওমিক্রনের আতঙ্কও ইতিমধ্যেই প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে গৌড়-আদিনায় ৷ কমছে পর্যটক ৷ মনে করা হচ্ছে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়লে ফের বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই পর্যটনস্থলগুলি ৷

মালদা শহর থেকে প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড়ের দূরত্ব প্রায় 18 কিলোমিটার । একসময় গৌড়ের আয়তন ছিল প্রায় 80 বর্গ মাইল । তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সেই আয়তন অনেকটা কমে গিয়েছে । এখন ওই জায়গার মধ্যে গড়ে উঠেছে জনবসতি । দেশ বিভাজনে কিছুটা অংশ চলে গিয়েছে বাংলাদেশে । তবে বেশিরভাগ অংশ এখনও মালদার মধ্যে । বর্তমানে এখানে 16টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য রয়েছে । রয়েছে প্রাচীন গৌড় নগরীকে বহিঃশত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নির্মিত বাইশ গজি প্রাচীরের ভগ্নাবশেষ । তৎকালীন পিলখানার কিছু অংশ এখনও দেখা যায় । এখনও মাঝেমধ্যেই মাটির নীচ থেকে বেরিয়ে আসে প্রাচীনকালে ব্যবহৃত একাধিক নিদর্শন, এমনকি অস্ত্রশস্ত্রও । প্রতি বছর শীতে এখানে পর্যটকদের ঢল নামে এইসব ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখার টানে । কিন্তু করোনার আতঙ্ক ও প্রভাব এখন এই পর্যটনস্থলেও ৷

পর্যটনের মরশুমে এভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং তার জেরে পর্যটকদের আসা কমে যাওয়ায় চিন্তা বাড়ছে গৌরের টোটো চালক, ছোট ব্যবসায়ীদের ৷ তাঁদের বক্তব্য, গত প্রায় 2 বছরে করোনা, লকডাউনের কারণে তাঁদের রোজগারে এমনিতেই টান পড়েছে ৷ কমেছে আয় ৷ এবছর ফের একই পরিস্থিতি তৈরি হলে তাঁদের বড় বিপদের মুখে পড়তে হবে ৷

গৌড়ের পর্যটনেও করোনার প্রভাব, চিন্তায় স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে পর্যটকরা

আরও পড়ুন : 2022টি ডুব দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত বিষ্ণুপুরের সদানন্দর

এই এলাকায় টোটো চালান অভিনন্দন রায় । মালদা শহরের বালুচরে তাঁর বাড়ি । বছরের প্রথম দিন ভাড়া পেয়ে দু’জনকে গৌড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন । তিনি জানান, “করোনা আমাদের পেশায় বড় আঘাত করেছে । করোনা হানা দেওয়ার আগে আমরা বছরের এই সময় দিনে গৌড়ে 2 ট্রিপ করতাম । 1200 থেকে 1400 টাকা, কখনও বা তারও বেশি রোজগার হত । কিন্তু এখন দিনে একটা ভাড়াও হয় না । আজ অনেকদিন পর একটা ভাড়া পেয়েছি । মাত্র 600 টাকা রোজগার হবে । বাজারে সব জিনিসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। এদিকে সংক্রমণের ভয়ে টোটোয় দু’জনের বেশি কেউ বসতে চাইছেন না। কীভাবে আমাদের চলবে জানি না ।” প্রায় একই কথা এই এলাকার অস্থায়ী এক খাবারের দোকানের মালিক প্রতাপ রজকের মুখেও ৷ তিনি বলেন,“করোনা শুরু হওয়ার আগে দিনে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকার বিক্রি হত । এখন দিনে দুই থেকে আড়াই হাজারের বেশি বিক্রি হয় না । করোনা হানা দেওয়ার পর থেকে লোকজনের আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে । এবার লোকজন এলেও খুব কম । তারা টাকাপয়সাও খরচ করছে না । পরিস্থিতি ভালো নয় । আমরা চাই, করোনা তাড়াতাড়ি বিদায় নিক।”

মাঝে মাঝেই করোনার এই দাপট তার জেরে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না গৌড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকরাও ৷ কলকাতার বাসিন্দা সুলেখা পারভিনের কথায়,“করোনা কারণে স্কুল-কলেজের পড়াশোনায় প্রভাব পড়েছে ৷ নতুন বছরে বাচ্চাদের পড়াশোনাটা যেন আগের মতো হয়ে যায় । স্কুল-কলেজে যেন আগের মতো পড়াশোনা হয়। আর করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগে যেন প্রত্যেককে প্রতিষেধক দেওয়া হয় ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.