ETV Bharat / state

কর্মী নিয়োগের সরকারি নির্দেশিকাকে কটাক্ষ বিরোধীদের

author img

By

Published : Apr 29, 2020, 11:53 PM IST

Kolkata
কলকাতা

কোরোনা মোকাবিলায় লকডাউনের কারণে অর্থনীতির বেহাল দশা ৷ সেক্ষেত্রে সরকার ব্যয় সংকোচ করবে বলে সব নিয়োগ বন্ধ বলে জানানো হয়েছিল ৷ কিন্তু তারপরেও মন্ত্রী , রাষ্ট্রমন্ত্রী , বিধানসভায় শাসকদলের মুখ্য সচেতকের অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগের নির্দেশিকা বের করে সরকার ৷ আর আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করলেন বামপরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ।

কলকাতা , 29 এপ্রিল : মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীদের অ্যাটেনডেন্ট অর্থাৎ সহকারী কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বাম এবং কংগ্রেস শিবিরে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বামপরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র । রাজ্যের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রেকর্ডসংখ্যক শূন্য পদ রয়েছে । শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে । পরীক্ষায় পাশ করে সফল হওয়ার পরেও রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে নিয়োগ করা হয়নি শিক্ষক । এই অবস্থায় কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণের এই কঠিন পরিস্থিতিতে মন্ত্রীদের অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগ হতবাক করে দিয়েছে বিরোধীদলের নেতৃত্বকে ।


রাজ্যের এই কঠিন সময়েও মন্ত্রী , রাষ্ট্রমন্ত্রী , বিধানসভায় শাসকদলের মুখ্য সচেতকের অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগ করা হবে । এই নির্দেশিকা দেখে সুজন চক্রবর্তী হতবাক । স্তম্ভিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ৷ চলতি মাসের দুই তারিখ সরকারের খরচ কমাবার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল । যেকোনও উপায়ে সরকারের ব্যয় সংকোচন করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল । সদ‍্য ফের নতুন করে নির্দেশ জারি করা হয়েছে । অতিরিক্ত সহায়ক পাবেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রমন্ত্রীরা ।

বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন , " আজব কাণ্ড চলছে রাজ্যে । সরকার ব্যয় সংকোচ করবে বলে সব নিয়োগ বন্ধ । পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে সফল প্রার্থীদের নিয়োগ বন্ধ । শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ ।TET , SSC বাতিল । কোথাও কোনও লোকের কাজ নেই । কাজ আর হবে না । সরকার সচেতনভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে । সেই সরকারের মাথায় কীভাবে বুদ্ধি আসে যে দলের লোককে চাকরি পাইয়ে দাও ? নেতা-মন্ত্রীদের যারা সচিব হবেন , তাঁরাই শাসকদলের । ব্যক্তিগত দলের লোক । মন্ত্রী বা রাষ্ট্রমন্ত্রী হোক তার জন্য স্পেশাল সার্কুলার কেন ? সবার কাজ বন্ধ । কোথাও কোনও নিয়োগ নেই । মানুষ কষ্টের মধ্যে রয়েছে । এ রাজ্যের যুবক-যুবতিরা চাকরির জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছে সেগুলি সব বন্ধ । দলের লোককে ঢোকাতেই হবে । দলতন্ত্রের সরকার চলছে । এসব বন্ধ করুক সরকার । বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর অজানা নয় । বিভিন্ন বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন কোষাগার শূন্য । রাজ‍্যের বহু কাজ আটকে যায় অর্থ না থাকার কারণে । এই সময়ে রাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের সহকারী নিয়োগের এই টাকা আসছে কোথা থেকে ? বেকার যুবক যুবতিরা পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে । তাদের নিয়োগ পত্রের ব্যবস্থা না করে, দলের লোককে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য মন্ত্রীর সচিব পদে নিয়োগ ! এটা কর্মসংস্থান বিরোধী । সরকারের দলতন্ত্রের মনোভাব স্পষ্ট । সরকারের কাণ্ডজ্ঞান হোক । এসব বন্ধ করুন ।"

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি একই সুরে বলেন , "সরকারের দ্বিচারিতার প্রমাণ এর আগেও মিলেছে । রাজ্যের বিভিন্ন জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষেও মনিটরিং কমিটিতে শাসকদলের লোককে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে । রাজ্যের উন্নয়ন অর্থনীতি নিয়ে তৃণমূল সরকারের মাথাব্যথা নেই । কী করে দলতন্ত্র করা যায় তা নিয়েই ভাবছে সরকার । সরকারের নামে দলীয় রাজনীতি চলছে । বহু ক্ষেত্রেই এই সরকার দ্বিচারিতা করে । সুযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর চাকরি নেই । মেধাবী পড়ুয়ারা পাশ করে বেকার হয়ে ঘরে বসে রয়েছে । আর শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের স্বজনপোষণের জন্য সরকার নিয়োগ-পদ্ধতি সক্রিয় করছে দেশের এই মহামারীর পরিস্থিতিতেও ।"

অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট নিয়োগের নির্দেশিকা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন বিরোধীরা । তাঁরা চান স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া হোক ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.