ETV Bharat / state

Ghost Fear at Bankura Mejia Forest : ভূতের ভয়ে জঙ্গলে থাকছে না বনকর্মী, চুরি যাচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ

author img

By

Published : Mar 11, 2022, 8:31 PM IST

বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকে রয়েছে বনাঞ্চল (Ghost Fear at Bankura Mejia Forest) ৷ দীর্ঘদিন ধরে রাতে সেখানে কোনও বনকর্মী থাকেন না ৷ কারণ সেখানে নাকি ভূতের ভয় ৷ আর এই সুযোগে ফাঁকা জঙ্গলে রাতের অন্ধকারে দেদার কাটা পড়ছে একের পর এক গাছ ৷ কী বলছেন বনকর্মী থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা ? সত্যিই কি ভূতের ভয় নাকি, নিছক কুসংস্কার?

Bankura Mejia Forest
ভূতের ভয়ে ফাঁকা বন পেয়ে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বাঁকুড়ার বনে

মেজিয়া, 11 মার্চ : সন্ধ্যার পর নাকি ভূতের ভয় ৷ তার জন্য বনকর্মীরা কেউ একা থাকতে চান না বনাঞ্চলে ৷ যার সুযোগ নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা ৷ রাতের অন্ধকারে একের পর এক গাছ কেটে সাফ করে দিচ্ছে বনাঞ্চল ৷ এমনই অবস্থা বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের মানা রিজার্ভ বনাঞ্চলের (Bankura Mejia Forest) ৷

মেজিয়া ব্লকের একটি ছোট নদী লাগোয়া এলাকায় রয়েছে সংরক্ষিত মানা বনাঞ্চল । প্রায় 130 হেক্টর জুড়ে থাকা এই বনাঞ্চলকেই বলা হয় মেজিয়া শিল্পাঞ্চলের ফুসফুস । শিল্পাঞ্চলের দূষিত বাতাস শুষে নেয় এই বনাঞ্চল জুড়ে থাকা হাজার হাজার গাছ । কিন্তু সেই বনাঞ্চলই এবার দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে পড়ে অস্তিত্ব সংকটের পথে ।

কারণ একটাই, ভূতের ভয় । রাত হলেই নাকি অশরীরী আত্মারা ঘুরে বেড়ায় এই জঙ্গলে । বিভিন্ন রকম অপার্থিব শব্দও নাকি ভেসে বেড়ায় নিশুতি রাতে । স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময় এই জঙ্গল রক্ষার জন্য দু'জন ফরেস্ট গার্ড মোতায়েন ছিলেন । এর মধ্যে একজন অবসর নেন কয়েক মাস আগে । আর এরপরই আরেক ফরেস্ট গার্ডের মনের মধ্যে চেপে বসে ভূতের আতঙ্ক । অবস্থা এমন হয় যে ভূতের আতঙ্কে নিরুপায় হয়ে সংরক্ষিত ওই জঙ্গল ছেড়ে তিনি ডিউটি করতে শুরু করেন মেজিয়া রেঞ্জ অফিসে । অগত্যা সংরক্ষিত সেই জঙ্গল হয়ে পড়ে অরক্ষিত ।

ভূতের ভয়ে জঙ্গলে থাকছে না বনকর্মী, চুরি যাচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ

আরও পড়ুন : Skoch Awards : রাজ্যের শিক্ষা-পর্যটন-বন দফতর জিতল স্কচ অ্যাওয়ার্ড

আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই একের পর এক গাছ কেটে সাফ করে দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা ৷ যার ফলে ক্রমশ ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মেজিয়া শিল্পাঞ্চলের ফুসফুস । যদিও মেজিয়ার রেঞ্জ অফিসার দুর্গাদাস হাঁসদা বলছেন, "ভূতের ভয় বলে কিছু নেই ৷ কিন্তু একা কোনও বনকর্মী বা অফিসার সেখানে থাকতে চাইছেন না ৷ একা থাকাটাও খুব ঝুঁকিপূর্ণ ৷ তবে লোকবল খোঁজা হচ্ছে ৷ খুব শীঘ্রই সেখানে লোকজন থাকার ব্যবস্থা করা হবে ৷ রাতে না থাকলেও জঙ্গলে গাছ চুরি রুখতে দিনের বেলা হানা দেওয়া হয় । মাঝে মধ্যে চোরাই কাঠ উদ্ধারও হয় ৷

এই বনাঞ্চলেই একসময় থাকতেন বনকর্মী শ্যামাপদ মান্ডি ৷ তাঁর কথায়, ভূতের ভয় বলে কিছু নেই ৷ কিন্তু রাতের বেলা কেউ একা থাকলে একটা গাছের ডাল ভেঙে পড়লেও ভয় তো করবেই ৷ আর তাছাড়া, একার পক্ষে সেখানে থেকে তো দুষ্কৃতীদের গাছ কাটা থেকে রুখে দেওয়া সম্ভব নয় ৷ এই সব সমস্যার কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি ৷ আগে বনের ভিতরেই থাকতাম ৷ তবে একবার বন্যা হওয়ার পর ওখান থেকে আমি চলে আসি ৷"

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই বন ফাঁকা হয়ে যাবে ৷ দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করুক বন বিভাগ ৷
আরও পড়ুন : Mechanised Planting Machine : আস্ত গাছ তুলে নিয়ে যেতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মেশিন কিনছে বন দফতর

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.