ETV Bharat / city

Sadhan Pande-Subrata Mukherjee : অস্তাচলে সুব্রত-সাধন, মাস কয়েকের ব্যবধানে দুই স্থপতিকে হারাল তৃণমূল

author img

By

Published : Feb 20, 2022, 2:05 PM IST

Sadhan Pande Subrata Mukherjee Death
দুই স্থপতিকে হারাল তৃণমূল

চলে গেলেন তৃণমূল নেতা এবং মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে (Minister Sadhan Pande Passes Away) ৷ গত নভেম্বরে প্রয়াত হয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও ৷ ফলে কয়েকমাসের ব্যবধানে রাজ্যের শাসকদল হারাল তাদের দুই স্তম্ভকে ৷

কলকাতা, 20 ফেব্রুয়ারি : দীর্ঘ অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই শেষ । প্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে ৷ 71 বছর বয়সে শারীরিক অসুস্থতার কাছে হার মেনেছেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতা । গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কল্যাণ চৌবেকে হারিয়ে ফের বিধায়ক হন । মমতার মন্ত্রিসভায় জোড়া দফতরের দায়িত্বও পান এই দুঁদে রাজনীতিবিদ । তারপরই জুলাই মাসের মাঝামাঝি গুরুতর অসুস্থ হয়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন । সেপ্টেম্বরে স্থানান্তরিত করা হয় মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে । ফলে তড়িঘড়ি রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাঁধে অতিরিক্ত দায়িত্ব সঁপেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । সাধনের দফতরের কাজকর্ম সামলাচ্ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীই ৷ গত নভেম্বরে প্রয়াত হয়েছেন সুব্রতও ৷ ফলে কয়েকমাসের ব্যবধানে রাজ্যের শাসকদল হারাল তাদের দুই স্তম্ভকে (Sadhan Pande and Subrata Mukherjee passes away in a short span of time) ৷

রাজ্যের দুই মন্ত্রীরই রাজনৈতিক উত্থান সমান্তরালভাবে ৷ প্রায় একইসময়ে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেন দুই সহকর্মী ৷ 1971 সালে বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে ওয়ার্কার্স পার্টির দু'বারের বিধায়ক জ্যোতিভূষণ ভট্টাচার্যকে হারিয়ে চমক দিয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ৷ সিদ্ধার্থশঙ্কর মন্ত্রিসভার তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রীই শুধু নন, পশ্চিমবঙ্গের সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রীও হন তিনি ৷ অন্যদিকে, তার কয়েকবছর পর থেকে প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা অজিত পাঁজার অনুগামী বলে পরিচিতি পেতে শুরু করেন সাধন । 1985 সালে অজিত পাঁজার ছেড়ে যাওয়া বড়তলা কেন্দ্র থেকেই বিধায়ক হন ৷ তারপর টানা ন'বার বিধায়ক হয়েছেন তিনি ৷ একমাত্র সুব্রতই তাঁর থেকে বেশি বার বিধায়কের চেয়ারে বসেছেন ৷

1998 সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অজিত পাঁজারা । 1999-এ দল বদলে তৃণমূলে আসেন সুব্রত ৷ দু'বছর পর শিবির বদলান সাধনও ৷ 2005-এর কলকাতা পৌরসভার নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতান্তরের জেরে তৃণমূল ছেড়ে শরদ পওয়ারের দল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টিতে যোগ দেন সুব্রত । 2006 নাগাদ থেকে দলনেত্রীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় বড়তলার তৎকালীন বিধায়ক সাধন পাণ্ডেরও ৷ যদিও সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলন ফের কাছাকাছি আনে মমতা-সাধনকে ৷ যাবতীয় বিবাদ মিটিয়ে 2010 সালে ফের তৃণমূলে ফেরেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও ৷ 2011 সালে তৃণমূলের উত্থানের পিছনে অনেকটাই কৃতিত্বের দাবিদার এই দুই রাজনীতিবিদ ৷ বিশেষত দুই কলকাতায় তৃণমূলের গড় তৈরি করতে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিলেন সাধন-সুব্রত ৷

আরও পড়ুন : Sadhan Pande Passes Away : প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে

ফলে 2011-তে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে জনস্বাস্থ্য ও পঞ্চায়েত দফতরের মন্ত্রী হন সুব্রত মুখোপাধ্যায় । পরে তার সঙ্গে যুক্ত হয় সরকারি সংস্থা ও শিল্প পুনর্গঠন দফতরও ৷ আমৃত্যু ‘প্রাক্তন শিষ্যা’র দেওয়া সেই দায়িত্ব সামলেছেন বালিগঞ্জের বিধায়ক ৷ মমতার প্রথম মন্ত্রিসভায় ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী হন সাধন পাণ্ডেও । 2016 এবং 2021 সালের ভোটে জিতেও ওই দফতরের মন্ত্রী হন তিনিই । এর সঙ্গে যুক্ত হয় স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং স্বনিযুক্তি দফতরও । শেষ কয়েকদিন ‘দফতরবিহীন’ মন্ত্রী থাকলেও এই দফতরকে আলাদা উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিলেন মানিকতলার বিধায়ক ৷

আরও পড়ুন : Subrata Mukherjee: হাসপাতালেই অফিস, চিরঘুমে যাওয়ার আগেও কাজ করে গিয়েছেন সুব্রত

দক্ষিণের বালিগঞ্জ থেকে উত্তরের জোড়াবাগান কিংবা চৌরঙ্গী, পরাজিত হলেও প্রার্থী হয়েছেন বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকেও ৷ সুব্রতর রাজনৈতিক কেরিয়ারের ব্যাপ্তি অনেক বেশি ৷ অন্যদিকে বড়তলা এবং মানিকতলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বিধানসভা ভোটে কখনও পরাজিত না হওয়ার নজির রয়েছে সাধনের । মাস কয়েকের ব্যবধানেই বিদায় জানালেন বঙ্গ রাজনীতির দুই হেভিওয়েট নেতা ৷ একের পর এক নির্বাচনে জোড়াফুল ঝড়ের মাঝেই অস্তাচলে গিয়েছেন রাজ্যে তৃণমূলের দুই অন্যতম স্থপতি ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.