কলকাতা, 25 সেপ্টেম্বর : কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন 45 বছর বয়সি এক মহিলা । সুস্থ হয়ে উঠে লিভারের প্রায় অর্ধেক অংশ দান করে 42 বছরের এক ব্যক্তির প্রাণ বাঁচালেন তিনি । এমনই মানবিকতার নজিরের সাক্ষী থাকল কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল । হাসপাতাল সূত্রে খবর, দাতা ও গ্রহীতা দু'জনেই সুস্থ আছেন । বৃহস্পতিবার দু'জনকেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে ।
কোরোনা আবহরে মধ্যে অঙ্গদান এবং প্রতিস্থাপনের এমন নজির দেখা গেল মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই মহিলা, গ্রহীতার পরিচিত । ওই ব্যক্তির লিভার জরুরি ভিত্তিতে প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল । এরপর শুরু হয় লিভারের খোঁজ। অবশেষে, আইন অনুযায়ী কোনও বাধা না থাকায়, এই ব্যক্তির পরিচিত এক মহিলার লিভার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। এরপর মহিলার লিভারের প্রায় অর্ধেক অংশ, ওই ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপনের জন্য জুলাই মাসে অস্ত্রোপচারের জন্য দিন ঠিক করা হয় । অস্ত্রোপচারের জন্য দাতা এবং গ্রহীতাকে মুকুন্দপুরের বেসরকারি ওই হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়। সেই সময় কোরোনা পরীক্ষা করা জানা যায় ওই দাতা মহিলা কোরোনা পজ়িটিভ । যদিও ওই মহিলার কোনও উপসর্গ ছিল না । তবে কোরোনা পজ়িটিভ হওয়ায় সেই সময় অঙ্গদান ও প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয় । হোম আইসোলেশনে থেকে দু-সপ্তাহ পর ওই মহিলা কোরোনা মুক্ত হয়ে ওঠেন । এরপর আরও চার সপ্তাহ পর অঙ্গদান ও প্রতিস্থাপনের দিন স্থির করা হয় ।
11 সেপ্টেম্বর প্রায় 15 ঘণ্টা ধরে অঙ্গদান ও প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া চলে । সফল হয় অস্ত্রোপচার । ওই মহিলার লিভারের প্রায় অর্ধেক অংশ ওই ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয় । অস্ত্রোপচারের পর দাতা এবং গ্রহীতাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসায় ধীরে ধীরে তাঁরা সুস্থ হয়ে ওঠেন ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, কোরোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই মহিলা যেভাবে এই ব্যক্তির প্রাণ বাঁচানোর জন্য তাঁর লিভারের প্রায় অর্ধেক অংশ দান করলেন, তা নজির হয়ে থাকল । দুইজনেই এখন ভালো আছেন। তাঁদের বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে ।
