চণ্ডীগড়, 10 জুলাই: উত্তর ও পশ্চিম ভারত প্রবল বর্ষণে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে । আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে যে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ও মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হওয়ার কারণে দিল্লি, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা-সহ উত্তর পশ্চিম ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে । হিমাচল প্রদেশ-সহ পার্বত্য রাজ্যগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । যমুনা নদীর দ্রুত প্রবাহের কারণে দিল্লিতে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে । মোহালিতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজের জন্য সেনা মোতায়েন করার অনুরোধ জানিয়েছে পঞ্জাব সরকার ।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেন, ‘‘আমি পাঞ্জাবের বাসিন্দাদের কোনও ধরনের আতঙ্কের মধ্যে না থাকার জন্য আবেদন করছি ৷ আমি পাঞ্জাবের প্রতিটি ছোট-বড় আধিকারিকদের সঙ্গে রাজ্যের প্রতিটি কোণের তথ্য প্রতি মুহূর্তে নিচ্ছি ৷ এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আমরা একসঙ্গে এটি মোকাবিলা করব । সরকারেক তরফে জনগণকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে ।’’
আরও পড়ুন: প্রকৃতির তাণ্ডবে 'ছারখার' হিমাচল, ভিডিয়ো দেখলে শিউরে উঠবেন!
পঞ্জাবের পরিস্থিতি: পঞ্জাবেও লাগাতার বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । খাল-বিল-নালার জল উপচে মানুষের ঘরে ঢুকে পড়েছে । এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ভিডিয়ো ভাইরালও হচ্ছে, যাতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে মানুষের জীবন সংকটে ৷ তাঁরা কীভাবে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি বাঁচতে হিমশিম খাচ্ছেন । অবিরাম উপচে পড়া খালের জলের কারণে অনেক শহরে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ তবে পঞ্জাব সরকারের তরফে মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে এবং জনগণকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । হরিয়ানায় তিনটি নদী মার্কন্দা, ঘাগর ও ট্যাংরি বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে ৷ সেই কারণে সেখানে একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে ৷
জল ছাড়ার খতিয়ান: হরিকে হেড ওয়ার্কসের চারটি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে ৷ যার ফলে জলের প্রবাহ বেড়েছে ৷ ক্যানাল বিভাগের মহকুমা আধিকারিক নবীন গুপ্তের মতে, বন্যার আশঙ্কার জেরে নিচের দিকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে ৷ সামান্য জল রাজস্থান ও ফিরোজপুর ফিডারে দেওয়া হয়েছে । এছাড়া ভাঙনের কারণে মাখু খালের গেট সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ সেখানে মাটির ব্যাগ বসানো হচ্ছে । পাশাপাশি উদ্ধারকাজও চলছে ৷ গতকাল রবিবার দেড় লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: উত্তর ভারতে প্রবল বর্ষণে মৃত 14, বিপর্যস্ত দিল্লি-হিমাচল; আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস
পঞ্জাবে পাঁচটি জেলায় কমলা সতর্কতা: শুধু পাঞ্জাব নয়, রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টি পড়ছে চণ্ডীগড়, হিমাচল প্রদেশ ও দিল্লিতে । আজও পঞ্জাবে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে । এছাড়াও রাজ্যের নদী ও খালের জল বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । এ কারণে সতলুজ নদীর আশপাশের 15 থেকে 20টি গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ জলন্ধরের দুই শহরের স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে । জান্দিয়ালা গুরুর বান্দালার আশপাশের এলাকায় খালের দেওয়াল ভেঙে প্রায় দুইশো একর ফসলি জমি জলে তলিয়ে গিয়েছে । সেই কারণেই পাঁচটি জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি হিমাচলেও হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে ৷
অনেক জেলায় স্কুল-কলেজ বন্ধ: ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কিছু জায়গায় বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে । এর জেরে জলন্ধর জেলা প্রশাসন আজ সোমবার ফিল্লার ও শাহকোট মহাকুমার স্কুলে ছুটির ঘোষণা করেছেন । এছাড়াও রোপার, পাতিয়ালা ও লুধিয়ানাতেও স্কুল বন্ধ থাকছে ।
আরও পড়ুন: 41 বছর পর জুলাইতে রেকর্ড বৃষ্টি, দিল্লির সরকারি কর্মীদের রবিবারের ছুটি বাতিল কেজরির
