ETV Bharat / bharat

Rajasthan: বিয়ে মাত্র 8 বছর বয়সেই, রাজস্থানের সেই বালিকা বধূ এখন চিকিৎসক

author img

By

Published : Dec 22, 2022, 8:26 PM IST

রাজস্থানের (Rajasthan) কারিরি এলাকার রূপা যাদব (Rupa Yadav) ৷ মাত্র আট বছর বয়সেই তাঁর বিয়ে হয় (Child Marriage) ৷ কিন্তু পরিবার পাশে থাকায় তিনি আজ একজন চিকিৎসক ৷

Child Marriage
বালিকা বধূ এখন চিকিৎসক

কারিরি (রাজস্থান), 22 ডিসেম্বর: রূপা যাদব (Rupa Yadav) ৷ রাজস্থানের (Rajasthan) কারিরি এলাকার বালিকা বধূ ৷ তাঁর যখন বয়স সবেমাত্র আট বছর, তখনই তাঁর বিয়ে হয় (Child Marriage) ৷ অন্যদের মতো তাঁকে সংসারের বেড়াজালে আবদ্ধ হতে হয়নি ৷ বরং পরিবার পাশে থাকায় তিনি এখন একজন চিকিৎসক ৷

রূপার পরিবার তাঁকে দূর-সম্পর্কের এক আত্মীয়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয় । সেই সময়ে তাঁরা যৌথ পরিবারে থাকতেন ৷ আর পরিবারের প্রধান তাঁর জেঠু ৷ দাদার প্রতি শ্রদ্ধার কারণে আপত্তি করতে পারেননি তাঁর বাবা । কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন মেয়েকে শিক্ষিত করতে ৷ তাই তিনি বিয়ের পরও মেয়ে যাতে পড়াশোনা চালাতে পারে, তার জন্য রূপার শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের রাজি করিয়েছিলেন ৷

সাধারণত শ্বশুরবাড়ির নানা কাজের মাঝে অনেক মেয়েকেই কেরিয়ার জলাঞ্জলি দিতে হয় ৷ কিন্তু রূপার ক্ষেত্রে তা হয়নি ৷ তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পেরেছিলেন ৷ দশম শ্রেণির পরীক্ষায় তিনি 86 শতাংশ নম্বর পান ৷ যা দেখে পরিবারের লোকেরাও চমকে গিয়েছিলেন ৷ কারণ, কারিরির ওই গ্রামের ছেলেরাই দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারে না ৷

এর পর রূপার উচ্চশিক্ষার পথ আরও সুগম ৷ শ্বশুরবাড়ির সকলকেই তিনি পাশে পেয়ে যান ৷ কিন্তু গ্রামের একটা মেয়ে এভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে এটা অনেকের সহ্য হয়নি বলে রূপা জানিয়েছেন ৷ তবে সেই বাধাকে তোয়াক্কা না করেই তাঁর পরিবার তাঁর পাশে সবসময় থেকেছে ৷ সেই কারণে চিকিৎসক হওয়ার পরও সেই সব দিনের কথা ভোলেননি তিনি ৷

বরং বলেছেন, "পুরো পরিবার আমার পড়াশোনার টাকা জোগাড়ের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিল । আমি যখন ইন্টারেও ভালো নম্বর পেয়েছিলাম, তখন তাঁরা আমার চেয়ে বেশি উত্তেজিত ছিলেন ৷" তিনি আরও জানান, তাঁর জন্য পরিবারের তরফে নিট (NEET) এর কোচিংয়ের জন্য টাকা ধার করা হয়েছিল ৷ তাই একজন চিকিৎসক হতে পেরে তাঁর বাবা-মা, শ্বশুরবাড়ির সদস্য় এবং বন্ধুদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন রূপা ।

তিনি বলেন, ''আমি ভাগ্যবান যে আমি যত সমস্যারই মোকাবিলা করি না কেন, এমন মানুষ ছিলেন, যাঁরা আমাকে প্রতিটি পর্যায়ে সাহায্য করেছিলেন । পরিবারের পাশাপাশি আমার বন্ধুরাও আমাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন । কলেজে, কেউ যদি আমাকে বাল্যবিবাহের জন্য উত্যক্ত করত, আমার বন্ধুরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছে সেই সময় ৷” তিনি জানান, এমবিবিএসের তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় তিনি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন ৷ সেই সময় গ্রামের কয়েকজন তাঁকে গর্ভপাতেরও পরামর্শ দিয়েছিলেন ।

কিন্তু তিনি তাঁদের কথা শোনেননি ৷ তাঁর কথায়, ‘‘কিন্তু সন্তান এবং কেরিয়ার দুটোই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ । আবার আমার পরিবার আমার পাশে থেকেছে ৷’’ সন্তানের জন্ম দেওয়ার একমাস পর তাঁর পরীক্ষা ছিল ৷ সেই সময় নিয়ে রূপা বলেন, “বাচ্চাটিকে আমার বোন এবং আমার শাশুড়ি যত্ন করেছিলেন । আমি অর্ধেক সময়ে তিন ঘণ্টার পরীক্ষা শেষ করেছি ৷”

তবে রূপার লড়াই এখনও থেমে যায়নি ৷ তিনি এবার স্নাতকোত্তর স্তরে পড়তে চান ৷ তার পর গ্রামে হাসপাতাল তৈরি করতে চান ৷ একই সঙ্গে তিনি বলেন, "আমাদের অবশ্যই তাঁদের সমর্থন করতে হবে, যাঁরা স্বপ্ন দেখে এবং তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য লড়াই করে ৷"

আরও পড়ুন: বাল্যবিবাহ ঠেকাতে ইউনিসেফের সঙ্গে গাঁটছড়া রাজ্য়ের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.