পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

চড়ুই বাঁচাতে হাজারো মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন পটনার 'স্প্যারো ম্যান'

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 20, 2024, 9:14 PM IST

World Sparrow Day: আজ বিশ্ব চড়ুই দিবস ৷ আধুনিকতার ছোঁয়ায় মনুষ্য জীবন থেকে ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে চড়ুই ৷ বর্তমানে, তা না থাকার সমান ৷ এই পরিস্থিতিতেও চড়ুইদের বাঁচিয়ে রাখার অক্লান্ত চেষ্টা করে চলেছেন বিহারের 'স্প্যারো ম্যান' সঞ্জয় কুমার সিনহা ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT

পটনা, 20 মার্চ: একটা সময় ছিল যখন বাড়ির আঙিনায় ও ছাদে চড়ুই পাখিদের ঝাঁক দেখা যেত ৷ বাড়ির ঘুলঘুলিতে বাসা বাঁধত ৷ কিন্তু বর্তমান সময়ে চড়ুই পাখির দেখা প্রায় নেই বললেই চলে ৷ এর কারণ, পরিবেশ দূষণ ও তার জেরে চড়ুইয়ের সংখ্যা প্রায় বিলুপ্তির পথে ৷ কিন্তু, পটনার সঞ্জয় কুমার সিনহা (55) চড়ুই বাঁচাতে তাঁর অনন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন ৷ তিনি চড়ুই পাখি এতটাই ভালবাসেন যে, তাঁর বাড়িটিকে চড়ুই পাখির ঘর বানিয়ে ফেলেছেন ৷ লোকে সঞ্জয়কে কুমার সিনহাকে 'পটনার স্প্যারো ম্যান' বলেও ডাকে ৷

উল্লেখ্য, চড়ুই বিহারের রাষ্ট্রীয় পাখি ৷ লোকে হয়তো বিশেষ দিনে চড়ুই বাঁচানোর চেষ্টা করে ৷ কিন্তু, সঞ্জয় সিনহার জীবনের মূলমন্ত্র হয়ে উঠেছে- 'সেভ স্প্যারো, সেভ এনভায়রনমেন্ট'। 'চড়ুই' প্রেমিক সঞ্জয় সিনহার প্রতিবেশীরা পাখির কিচিরমিচির শব্দে জেগে ওঠেন ৷ পটনার কাঁকরবাগ এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় সিনহা ভারতীয় তথ্য পরিষেবায় কর্মরত ৷ তাঁর পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের দৈনন্দিন কাজ চড়ুইদের খাবার এবং জল দিয়ে শুরু হয় ৷ তাঁর বাড়িতে ঢুকতে শতাধিক চড়ুইয়ের থাকার ব্যবস্থা করে রেখেছেন সঞ্জয় কুমার সিনহা ৷ চড়ুইদের যত্ন নেওয়ার জন্য তিনি প্রতি মাসে বেতনের একটা অংশ সঞ্চয় করে রাখেন ৷

সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, "আজকাল পাখিদের মধ্যে চড়ুই বেশি দেখা যায় না ৷ আগেকার দিনে বাড়িতে শস্য (চাল, ডাল, গম) থাকত ৷ এই সময়ে যখনই মাটিতে শস্যের দানা পড়ত, চড়ুই তাড়াতাড়ি এসে সেই দানা নিয়ে উড়ে যেত ৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে মানুষের জীবনধারা ৷ সেই বদলের সঙ্গে চড়ুইয়ের সংখ্যাও প্রায় নেই এর পর্যায়ে চলে গেছে ৷ গ্রীষ্মকালে মানুষ যদি তাদের উঠোনে বা বারান্দায় ছোট পাত্রে জল রাখে, তাহলে এসব পাখিরা আর তৃষ্ণার্ত থাকবে না ৷"

সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, "আজ বিশ্ব চড়ুই দিবস ৷ এই দিনে শুধুমাত্র চড়ুই সংরক্ষণ সম্পর্কে কথা বলা যথেষ্ঠ নয় ৷ আমাদের বাড়িতে যে, চড়ুই পাখিরা বাসা তৈরি করত, বাড়ির উঠোনে ঘুরে বেড়াত আর শস্য খেত, উঠোন কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠত, এখন মনে হয় সে যেন অতীত হয়ে গেছে ৷ পরিবর্তিত সময়ে সেই চড়ুইের স্বর আর শোনা যায় না ৷"

সঞ্জয় বলেছেন, তিনি গত 17 বছর ধরে চড়ুই সংরক্ষণে কাজ করছেন ৷ 2007 সালে এই প্রচার শুরু করেন ৷ তাঁর বাড়ির বাইরে পাখিদের জন্য খাবার এবং জল রাখা শুরু করেন ৷ তারপরে পাখিরা আসতে শুরু করে ৷ এটি তাঁকে প্রভাবিত করে ও তারপর তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সচেতনতা তৈরি করতে শুরু করেন ৷ সেই থেকে আজও তাঁর চড়ুই সংরক্ষণের কাজ চলছে ৷

আরও পড়ুন:

  1. ছোট্ট পাখিরে নয় অবহেলা, বিশ্ব চড়ুই দিবসে জানুন তার বাস্তুগুণ মেলা
  2. তিস্তার বন্যায় ভেসে গিয়েছে পাখিদের খাবার, পরিযায়ীরা না আসায় ধুঁকছে গাজোলডোবা
  3. কেন ভি আকারে ওড়ে পাখির দল, জানুন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

ABOUT THE AUTHOR

...view details