পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

চিকিৎসার বদলে মৌলবির ঝাড়ফুঁক, মৃত্যু রোগীর !

By

Published : Aug 16, 2019, 6:45 PM IST

হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে বাড়িতে রেখেই চলে ঝাড়ফুঁক ৷ পরিণতি, যুবকের মৃত্যু ৷ মৃতের নাম অনুপ সর্দার ৷

মৃত অনুপ সর্দার

বারাসত, 16 অগাস্ট : হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে বাড়িতে রেখেই চলল ঝাড়ফুঁক ৷ পরিণতি মৃত্যু ৷ মৃতের নাম অনুপ সর্দার ৷ দেগঙ্গার হরেকৃষ্ণ কুমার কলোনির ঘটনা ৷

বাড়িতে রোগীকে রেখে ঝাড়ফুঁকের খবর পেয়ে গতকাল হরেকৃষ্ণ কুমার কলোনিতে যায় প্রশাসনের এক প্রতিনিধিদল ৷ দেগঙ্গার BDO সুব্রত মল্লিকসহ এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ওই যুবককে হাসপাতালে ভরতি করানোর জন্য তাঁর পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু, পরিবারের সদস্যরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁরা অনুপকে বাড়িতে রেখেই ঝাড়ফুঁক করাবেন ৷ পরে জনপ্রতিনিধিদের দীর্ঘক্ষণ বোঝানোর পর অনুপকে চিকিৎসার জন্য বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ গতকাল তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে RG কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় অনুপকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় ৷ আবারও শুরু হয় ঝাড়ফুঁক ৷ আজ সকালে অনুপ সর্দারের মৃত্যু হয় ৷

আরও পড়ুন : ফের অজানা জ্বরে মৃত্যু দেগঙ্গায়, উদ্বেগে প্রশাসন

কুসংস্কার দূর করতে সরকারি তরফে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচারের পাশাপাশি বিজ্ঞানমঞ্চের তরফেও প্রচার চালানো হচ্ছে ৷ তারপরও সমাজের একশ্রেণির মানুষ ওঝা,গুণিন ও মৌলবরি ওপর ভরসা করছেন ৷ ফলে সঠিক চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হচ্ছে রোগীর ৷ যদি জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো যেত, তাহলে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হত বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল ।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হরেকৃষ্ণ কুমার কলোনিতে স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন অনুপ সর্দার ৷ স্থানীয় একটি পুকুর পাহারা দেওয়ার কাজ করতেন তিনি ৷ কয়েকদিন আগে কাজ থেকে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ গায়ে জ্বর, সারা শরীরে ব্যথা । স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে ওষুধও খাওয়া শুরু করেন অনুপ ৷ কিন্তু শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অনুপের পরিবার স্থানীয় এক মন্দিরে নিয়ে গিয়ে তাঁর ঝাড়ফুঁক করে ৷ তাতেও কাজ হয়নি ৷ এরপর, এক মৌলবিকে বাড়িতে ডাকা হয় ৷ ফলে হাসপাতালের বদলে বাড়িতেই চলে ঝাড়ফুঁক ৷ মৃতের স্ত্রী অয়নবালা সর্দার বলেন, "আমাদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই । তাই, মৌলবি ডেকে স্বামীর চিকিৎসা করাই ৷ ঝাড়ফুঁকের পর প্রথমে দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, সেখান থেকে বারাসাত হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয় ৷ সেখানেও ভরতি করানো হয় ৷ কিছুক্ষণ সেখানে রাখার পর কর্তৃপক্ষ কলকাতার RG কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে ৷ সেখানে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য ছিল না তাই ওকে বাড়িতে নিয়ে আসি ৷"

ভিডিয়োয় শুনুন মৃতের স্ত্রীর বক্তব্য

দেগঙ্গার BDO সুব্রত মল্লিক বলেন, "আজকের সমাজে এই ধরনের ঘটনা কখন‌ই কাম্য নয় ৷ ওঁর পরিবারকে বলা হয়, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য কোন‌ও পয়সা লাগে না ৷ তারপরেও কেন ওঁরা হাসপাতাল থেকে ওই রোগীকে বাড়িতে নিয়ে এল, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details