জলপাইগুড়ি, 12 জানুয়ারি: যাকে নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত । সেই মৃতদেহ কাঁধে নেবার ঘটনার মৃতার স্বামীকেই জিজ্ঞাসাবাদ করল না তদন্ত কমিটির সদস্যরা । কেন তিনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে স্ত্রী-র মৃতদেহ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তা জানার কোনও চেষ্টাই করল না স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তকারী দল (Investigation Committee of Jalpaiguri Body Carrying Incident)। হাসপাতালের স্টাফদের ক্লিনচিট দিয়ে কার্যত বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদেরই বলির পাঁঠা করা হল বলে অভিযোগ ।
এই ঘটনায় হাসপাতালের কোনও কর্মীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ গাফিলতি খুঁজে পায়নি তদন্তকারী দল । কিন্তু মৃতার স্বামী জয়কৃষ্ণ দেওয়ান জেলাশাসকের কাছে দেখা করে লিখিতভাবে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে সরকারি সাহায্যের জন্য গেলে তাঁকে পরিষেবা নেই বলে সাফ জানিয়েছিলেন । এই মারাত্মক লিখিত অভিযোগের পরও মৃতার পরিবারকে একটিবারের জন্যও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি বলে অভিযোগ । অন্যদিকে, যাদের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের টাকা ভাড়া নেবার অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতর অভিযোগ বা কড়া পদক্ষেপ নেবার বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্যই করল না । বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুরের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতর বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ করা হয়নি । তবুও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদকের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার পরিবারকে সাহায্যকারী অঙ্কুরকে গ্রেফতার করা হল । নিজেদের বিরুদ্ধে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ঢাকতে অঙ্কুরের বিরুদ্ধে বলা হয় তিনি সরকার ও অ্যাম্বুলেন্স চালকদের বদনাম করার চেষ্টা করছেন ৷
আরও পড়ুন :শববাহী গাড়ি ভাড়ার টাকা নেই, হাসপাতাল থেকে কাঁধেই মায়ের দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরল ছেলে
এই ঘটনায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীদের কর্তব্যে গাফিলতি ছিল । তদন্ত কমিটির রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে । হাসপাতালের তিনজন নিরাপত্তাকর্মীকে শো-কজ করার কথা জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri News) গভঃ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ কল্যাণ খাঁ । এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, "মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে যাবার ঘটনায় পাঁচজনের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দিয়েছে । ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ আমরা দেখেছি । তাতে দেখা গিয়েছে উপর থেকে ট্রলি করে মৃতদেহ নামানো হয়েছিল । কিন্তু সে সময় যারা নিরাপত্তারক্ষী ছিল তাদের ভূমিকা কী ছিল তা খতিয়ে দেখা হয়েছে । কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের আটকায়নি ও সহযোগিতা করতেও আসেনি । তাঁরা যদি একটু সচেতন হতেন তাহলে এই ঘটনা ঘটত না ৷ তদন্ত কমিটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক ও মৃতার পরিবারের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি । শুধু হাসপাতালের ভিতরের অংশ নিয়েই তাঁরা তদন্ত করছেন ।"