পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

তৃণমূলের ‘কাটমানি’ নেওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিতর্কে বলাগড়ের বিধায়ক

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 19, 2023, 8:13 PM IST

TMC MLA Manoranjan Byapari: হুগলির বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ৷ সোশাল মিডিয়ায় তাঁর একটি পোস্ট ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে ৷ যা নিয়ে তিনি এখন সমালোচিত দলের অন্দরেই ৷ যে নেতার বিরুদ্ধে তিনি তোপ দেগেছেন, তিনি পালটা জবাব দিয়েছেন বিধায়ককে ৷ এই নিয়ে সরগরম হুগলির রাজনীতি ৷

Manoranjan Byapari Controversial Social Media Post
Manoranjan Byapari Controversial Social Media Post

বলাগড়, 19 ডিসেম্বর: সোশাল মিডিয়া নাম না করে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে পোস্ট করে বিতর্ক তৈরি করলেন বলাগড়ের বিধায়ক তৃণমূলের মনোরঞ্জন ব্যাপারী ৷ সোশাল মিডিয়ায় করা পোস্টে করুচিকর শব্দও প্রয়োগ করেছেন ৷ যা নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে শাসক দলের অন্দরে ৷ এই নিয়ে বিধায়কের পালটা সমালোচনা করেছেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা ৷

সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী লেখেন, "এতো ট্রেলার হ্যায়, পিকচার আভি বাকি হ্যায় দোস্ত । থোরা ইন্তেজার করো৷ সব দেখনে কো মিলেগা । চোর, কাটমানিখোরদের সাম্রাজ্য আমি ধ্বংস করবোই । আমি দিদির আশীর্বাদ নিয়ে বলাগড়ে এসেছি । ...ক্ষমা করব না । চোর, মাটি মাফিয়া, জুয়া বোর্ডের মালিক যে যা পারবি আমার ... ৷ আমার লড়াই চলছে চলবে ৷"

এই পোস্ট করার জন্য সোশাল মিডিয়াতেও অনেকে বিধায়কের সমালোচনা করেন ৷ মনোরঞ্জন ব্যাপারীর পোস্টের কমেন্ট সেকশনে গিয়ে সমালোচনামূলক মন্তব্য করেন অনেকে ৷ সেখানেই বিধায়ক সমালোচকদের প্রত্যুত্তর দিয়েছেন ৷ আর তা করতে গিয়েও একাধিকবার করুচিকর শব্দ প্রয়োগ করে ফেলেছেন ৷

সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিতর্কে বলাগড়ের বিধায়ক

বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়েছে জেলার রাজনীতিতে ৷ তৃণমূলের অন্দরেও এই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ৷ হুগলির জিরাটের এক পঞ্চায়েত প্রধান তপন দাস বলেন, ‘‘ফেসবুকে যা সব লিখেছেন, তাতে বলাগড়বাসীর মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে গিয়েছে ।’’ বিধায়কের অবশ্য এই নিয়ে বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই ৷ তাঁকে এই নিয়ে ফোন করা হলে তিনি বরং বলেন, ‘‘সময়ের অপেক্ষা করুন । আরও বলব । কলেজে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা কথা বলেছেন । তপন দাসকে কে বলতে বলেছে ? যা বলেছি ঠিক বলেছি । আরও বলব ।’’

উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে মনোরঞ্জন ব্যাপারীর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় ৷ সেখানে দেখা যায় যে প্রকাশ্যে তিনি নাম না করে এক পঞ্চায়েত প্রধানের সমালোচনা করছেন ৷ বলাগড়ের বিজয়কৃষ্ণ কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি এই কথাগুলি বলেন বলে জানা যায় ৷ সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানকে তিনি নেশাগ্রস্ত বলেও দাবি করেন ৷ আরও দাবি করেন যে ওই পঞ্চায়েত প্রধান 23 লক্ষ টাকা দিয়ে পদে বসেছেন ৷

সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিতর্কে বলাগড়ের বিধায়ক

ঘটনাচক্রে, গত শুক্রবার বিজয়কৃষ্ণ কলেজ নবীনবরণ ও বাৎসরিক অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা হয় ৷ সেখানে হাজির ছিলেন হুগলি জেলা পরিষদের সদস্য তৃণমূলের রুনা খাতুন, জিরাটের পঞ্চায়েত প্রধান তপন দাস-সহ আরও কয়েকজন শাসক-নেতা । স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁদের মতে বলাগড়ের বিধায়কের আক্রমণের উদ্দেশ্যেই ছিল পঞ্চায়েত প্রধান তপন দাস ও রুনা খাতুন ৷ কারণ, রুনা খাতুন-সহ তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে শুরু থেকেই বিবাদ রয়েছে মনোরঞ্জন ব্যাপারীর ৷

অনেকের মতে সেই কারণেই পরে কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে এই নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন তিনি ৷ এর রেশ ধরেই বিস্ফোরক ও কুরুচিকর পোস্ট সোশাল মিডিয়ায় করেছেন তিনি ৷ কিন্তু নাম না করে যাঁর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বলাগড়ের বিধায়ক, সেই তপন দাস বলেন, ‘‘আমাকে প্রধান করতে বিধায়ক আর ব্লক সভাপতি সুপারিশ করেছিলেন প্যাডে ৷ তাহলে তিনি বলতে পারবেন কত টাকা নিয়েছেন । বিধায়ক এর আগেও বলাগড়ের প্রায় সব নেতার বিরুদ্ধে কিছু না কিছু বলেছেন । বাদ ছিলাম আমি ।’’

তপন দাসের আরও বক্তব্য, ‘‘বিধায়কের আমার বিরুদ্ধে কোনও বক্তব্য থাকলে দলের ভিতর বলতে পারতেন ৷ এভাবে ওপেন ফোরামে কেন করলেন জানি না । ওঁর সঙ্গে আমার কোনও সমস্যা নেই ।’’

আরও পড়ুন:

  1. নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করে সামাজিক মাধ্যমে বিস্ফোরক পোস্ট মনোরঞ্জনের
  2. ‘রাজনীতিতে এসে বোধহয় ঠিক করিনি’, প্রত্যাশার চাপে হাঁপিয়ে উঠছেন বলাগড়ের বিধায়ক
  3. টিকিট বিক্রি নিয়ে নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, সোশালে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা ঘোষণা মনোরঞ্জনের

ABOUT THE AUTHOR

...view details