পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

Kapil muni Temple: এগিয়ে আসছে সাগর, কপিলমুনি মন্দিরের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা

By

Published : Sep 12, 2021, 9:15 PM IST

Updated : Sep 12, 2021, 9:29 PM IST

kapilmuni temple is in threat because of gangasagar erosion
এগিয়ে আসছে সাগর, সঙ্কটে কপিল মুনি মন্দিরের ভবিষ্যৎ ()

গঙ্গাসাগরের ভাঙন (Gangasagar Erosion) যে ভাবে বাড়ছে তাতে নতুন কপিলমুনির আশ্রম (Kapil Muni's Temple) রক্ষা করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের কাছে ৷ কেন্দ্রীয় ছাড়পত্র না-মেলাতেই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরার (Bankim Hazra)৷

সাগর, 12 সেপ্টেম্বর: একটু একটু করে এগিয়ে আসছে সমুদ্র । সমুদ্রের এই আগ্রাসন কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা প্রশাসনের । গঙ্গাসাগরে (Gangasagar Erosion) কপিলমুনির প্রাচীন মন্দিরটি অনেক আগেই বিলীন হয়ে গিয়েছে গভীর সমুদ্রে । নতুন কপিলমুনির মন্দিরের (Kapil Muni's Temple) ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন ক্রমশ জোরদার হচ্ছে ।

গঙ্গাসাগরে দিবারাত্র পাড় ভাঙার শব্দ । থেকে থেকেই ভাঙনের ভয়ঙ্কর হুঙ্কার আসছে সাগরের কাছ থেকে । সাগরের ভাঙন সমস্যা দীর্ঘদিনের । সমাধান হয়নি । ফলে নতুন করে পাড় ভাঙছে গঙ্গাসাগরে । সঙ্কটে পড়েছে কপিলমুনির নতুন মন্দির । ভাঙন রুখতে না-পারলে সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাবে এই মন্দিরও ৷ জৌলুস হারাবে সুপ্রাচীন তীর্থভূমি গঙ্গাসাগর ।

সাগর ভাঙনে বিচলিত জেলা প্রশাসন ভাঙন রোধে পরিকল্পনা নিয়েছে প্রায় তিন বছর ধরে । এখনও সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা গেল না কেন, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে প্রশাসনের অন্দরেই । গঙ্গাসাগরের ভাঙনপ্রবণ প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল বরাবর সারিবদ্ধ ভাবে নারকেল গাছ পুঁতেছিল প্রশাসন । তারও একাংশ সম্প্রতি ভাঙনের কবলে পড়েছে । এই ঘটনা প্রশাসনের শঙ্কা বাড়িয়েছে ।

আরও পড়ুন:Independence Special : বার্মার ব্রিটিশ কারাগারে একাকী মৃত্যুবরণ শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের

প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, প্রতি বছর গঙ্গাসাগরে 100-200 ফিট এলাকা সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে । 2019 সালে গঙ্গাসাগরের ভাঙন ঠেকাতে তৎপর হয় সরকার । গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্যদ এবং রাজ্যের পৌর দফতর যৌথ ভাবে এই নিয়ে কাজ শুরু করে । সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা (Bankim Hazra) বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগরের মন্দিরকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার ৷ ইতিমধ্যেই মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছে ৷ ঘূর্ণিঝড় যশে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাগর বিধানসভার বিস্তীর্ণ অঞ্চল । প্রশাসনিক অনুমোদন-সহ সবই প্রস্তুত । কিন্তু কেন্দ্রের তরফে অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না । রাজ্যের পরিবেশ দফতর প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিয়েছে । কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেলেই কাজ শুরু করা সম্ভব ।’’

সঙ্কটে কপিল মুনির মন্দিরের ভবিষ্যৎ

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ড. পি উলগানাথান বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড় আমফান ও যশের কারণে এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । ইতিমধ্যেই সাগর বেলাভূমির মাটি তলদেশ থেকে সরতে শুরু করেছে ৷ এটাই প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে । কেন্দ্রের কাছ থেকে সিআরজেড ছাড়পত্র এসে গেলে তা পরিবেশ দফতরে পাঠানো হবে । তার পরে অর্থ মঞ্জুর হয়ে গেলে কাজ শুরু করতে দেরি হবে না ।’’

আরও পড়ুন:Bhatkunda Murder Case : পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলে খুনে আটক চার, টেন্ডারের সমস্যার জেরেই খুন ?

যদিও কপিলমুনির মন্দির সাগরের জলে বিলীন হয়ে যাওয়া নিয়ে ঐতিহাসিকদের ভিন্নমত রয়েছে । 1862 সালের উইলসন সাহেব গঙ্গাসাগর প্রসঙ্গে যে প্রবন্ধ লেখেন, তাতে এই মন্দিরের কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘‘সুপ্রাচীন মন্দির একটি বট গাছ এবং তার নিচে রাম হনুমানের মূর্তি ছিল ৷ পুণ্যার্থীরা মন্দিরের গায়ে নামধাম লিখে রাখত ৷ মন্দিরের পিছনে ছিল একটি কুয়ো ৷ তার নাম ছিল নীলকুণ্ড ৷ পুণ্যার্থীরা সেই কুয়োর জল পান করতেন ৷’’ সাহেবের লেখা এই প্রবন্ধে কপিলমুনির মন্দিরের এই বর্ণনা উঠে এসেছে ।

আরও পড়ুন :Crime : আসানসোলে স্বর্ণঋণ সংস্থায় ডাকাতি, লুট 12 কেজি সোনা

ঐতিহাসিকদের মতে, আনুমানিক 430 খ্রীস্টাব্দে রানি সত্যভামা প্রথম কপিলমুনির মন্দির তৈরি করেন ৷ সেই মন্দির সমুদ্রের করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে যায় । দ্বিতীয় মন্দিরটি 1500 খ্রীস্টাব্দে তৈরি করা হয় ৷ এরপর প্রায় ছ'টি মন্দির সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে ৷ 1973 সালে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে নতুন মন্দিরটি তৈরি করা হয় । স্থানীয়দের মতে, সাগর যে ভাবে ক্রমাগতভাবে আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসছে, এই মন্দিরটিরও সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে বেশি দেরি হবে না ।

জানুয়ারি মাসের মকর সংক্রান্তিতে এই সাগর পূণ্যভূমিতে রাজ্য-সহ দেশ-বিদেশের বহু পূণ্যার্থীর সমাগম হয় । কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়েই সাগরের ভাঙন রক্ষায় এগিয়ে এলে তবেই মন্দিরটি রক্ষা করা যেতে পারে বলে মত স্থানীয়দের ৷

Last Updated :Sep 12, 2021, 9:29 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details