কলকাতা, 9 এপ্রিল: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের ভূমিকার ফের সমালোচনা করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ । আগের শুনানিতেই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, মুখ্যসচিবকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতকে জানাতে হবে । কিন্তু এ দিন মুখ্যসচিবের তরফে আদালতকে জানানো হয়, লোকসভা নির্বাচনের পর এ বিষয়ে রিপোর্ট দেওয়া হবে । এর পরই মুখ্যসচিবের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট ৷
ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, "রাজ্যের পুলিশ কি এফআইআর করা বন্ধ রেখেছে ? দেড় বছর ধরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে চার্জ ফ্রেম করা যাচ্ছে না । সিবিআই কি তদন্ত বন্ধ রেখে দেবে ?"
উল্লেখ্য, এর আগে দুবার আদালত নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে । এমনকি মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকাকে সশরীরের হাজিরার নির্দেশও দেয় ডিভিশন বেঞ্চ । এ দিনও ফের তাঁকে সময় দেওয়া হয়েছিল ।
রাজ্যের আইনজীবী অনির্বাণ রায় এ দিন মুখ্যসচিবের বক্তব্য আদালতে পেশ করেন । সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, এই মামলায় নির্বাচনের পর তিনি আদালতকে জানাবেন । কিন্ত বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, "মুখ্যসচিবের এই বক্তব্য যেন অভিযুক্তরা প্রভাবিত না করে । কারও দ্বারাই মুখ্যসচিবের বক্তব্য প্রভাবিত হোক, সেটা কাম্য নয় । এ বিষয়ে 23 এপ্রিলের মধ্যে তাঁকে প্রভাবমুক্ত হয়ে রিপোর্ট পেশ করতে হবে । এই রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট যে, অভিযুক্তরা কতটা প্রভাবশালী । তবে মুখ্যসচিবকে সমস্ত প্রভাবমুক্ত হয়ে রিপোর্ট পেশ করতে হবে । তাঁর হাতে আরও বড় দায়িত্ব রয়েছে ।"
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হচ্ছে না কেন, গত 3 এপ্রিল মামলার শুনানিতে এই প্রশ্ন তুলে সে বিষয়ে মঙ্গলবারের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকাকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত ৷ সেই নির্দেশ না-মানলে তাঁকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ারও নির্দেশ দেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী । কারণ, চার্জ গঠনের অনুমতি না দেওয়ায় নিম্ন আদালতে এই মামলার বিচারপর্ব শুরু করা যাচ্ছে না । রাজ্যের মুখ্যসচিবের ভূমিকায় বিস্মিত বিচারপতি বাগচী বলেন, "2022 সালের সেপ্টেম্বর মাসে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল । দেড় বছর হয়ে গেল, একটা অনুমতি দেওয়ার সময় পেলেন না ? এখন নির্বাচনের অজুহাত দিচ্ছেন ?" রাজ্য প্রশাসনের এই গড়িমসিতে বেজায় ক্ষুব্ধ উচ্চ আদালত ।
আরও পড়ুন: