কলকাতা, 19 ফেব্রুয়ারি: রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের পাঁচ শীর্ষ আধিকারিককে লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটির তলব নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের নির্দেশকে স্বাগত জানাল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ শান্তনু সেনের প্রতিক্রিয়া, বিজেপি এখনও বিচারব্যবস্থাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ৷ পাশাপাশি তিনি এই নিয়ে এথিক্স কমিটির এক্তিয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন ৷
উল্লেখ্য, সন্দেশখালি যাওয়ার পথে টাকিতে পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি হওয়ার জেরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ পরে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব, ডিজি-সহ মোট পাঁচ আধিকারিককে ওই ঘটনা নিয়ে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ পাঠিয়েছিল সংসদের প্রিভিলেজ কমিটি । আজ সোমবারের মধ্যে রাজ্যের পাঁচ আধিকারিককে স্বাধিকার রক্ষা কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছিল । কিন্তু রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকার দায়ের করা এক মামলায় তাঁদের হাজিরার উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ সোমবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ।
এর পরই দেশের শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালো রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস । এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘আমরা সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি । এই রায়ের মধ্যে দিয়ে মনে হল, হাজার চেষ্টা করে এখনও বিচারব্যবস্থাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি নিতে পারেনি বিজেপি । আমরা দেখেছি, সন্দেশখালিতে 144 ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও কিভাবে হেলমেট ছাড়া বাইক নিয়ে দুষ্কৃতিদের সঙ্গে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে তাণ্ডব চালালেন ৷ কিভাবে গাড়ির বনেটের উপর তিনি দাঁড়িয়ে পড়লেন ৷ তার এক সহনেত্রী কিভাবে পুলিশকে মারধর করলেন এবং তিনি টেনে সুকান্ত মজুমদারকে শুইয়ে দিলেন । কেউ তাঁকে মারধর করেননি ৷ টাচ পর্যন্ত করেননি ।’’
এ দিন শান্তনু সেন প্রশ্ন তুলেছেন, প্রিভিলেজ কমিটি তখনই ডাকতে পারে যখন তিনি কোনও সংসদীয় কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন । ওই দিনের ঘটনার সঙ্গে কোনও সংসদীয় বিষয়ের যোগ নেই । অতএব এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছে স্বাধিকার রক্ষা কমিটি । পুরো প্রক্রিয়াটিকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে ।
এ দিন শান্তনু সেন বলেন, ‘‘এই ঘটনার নিন্দার ভাষা নেই । সবচেয়ে বড় কথা প্রিভিলেজ কমিটি যাঁদের ডেকে পাঠিয়েছেন, চিফ সেক্রেটারি ও ডিজি, তাঁরা কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না । তাহলে কিভাবে তাঁদের ডাকা যেতে পারে ?’’ একই সঙ্গে শান্তনু সেনের প্রশ্ন, ‘‘যখন দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লি পুলিশ হেনস্তা করেছিল, তখন কোথায় ছিল এই প্রিভিলেজ কমিটি । এই কারণেই সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপকে স্বাগত না জানিয়ে উপায় নেই ।’’
একই সঙ্গে এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ তথা নদিয়া জেলার সভানেত্রী মহুয়া মৈত্র । সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বলেছেন, ‘‘সংসদীয় কমিটিগুলিও এখন বিজেপি পার্টি অফিসের অঙ্গুলিহেলনে পরিচালিত হচ্ছে । এভাবে এই সংসদীয় কমিটিগুলির দুর্ব্যবহার এখনই বন্ধ হওয়া উচিত ।’’
আরও পড়ুন: