কলকাতা, 2 মার্চ: বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিথ্যাচার করে রাজ্যের মানুষকে ভুল পথে চালিত করতে চাইছেন, এমনই অভিযোগ করলেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী শশী পাঁজা ৷ শনিবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সভা করেন ৷ সেই সভা থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন ৷ তারই পালটা হিসেবে এই কথাই বললেন শশী পাঁজা ।
লোকসভা নির্বাচন যখন দোরগোড়ায়, সেই পরিস্থিতি মার্চের প্রথম দু’দিন বাংলাতেই কাটালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ শুক্রবার সভা করলেন হুগলির আরামবাগে ৷ আর শনিবার তিনি সভা করেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে ৷ দু’টি সভা থেকেই সন্দেশখালি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী ৷
শনিবার মোদিকে জবাব দিতে গিয়ে শশী পাঁজা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আপনি কৃষ্ণনগরে অসত্য কথা বলছেন ৷ বাংলার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে গিয়ে আপনারা রাজ্যের 100 দিনের কাজ করা 59 লক্ষ মানুষকে বঞ্চিত করেছেন । তাঁদের টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন । এই বঞ্চিত মানুষদের টাকা দিচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনি ফেক জব কার্ডের কথা বলছেন ৷ ভুলে যাবেন না সব থেকে বেশি ভুয়ো জব কার্ডের সংখ্যা ছিল উত্তরপ্রদেশে । উত্তরপ্রদেশের টাকা কিন্তু আপনারা বন্ধ করেননি ৷ বরং প্রতিহিংসার রাজনীতির বশবর্তী হয়ে বাংলার টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন । তাই আপনাদের মুখে এসব বড় বড় কথা মানায় না ৷’’ শশী পাঁজার বক্তব্য, ‘‘গত দু’বছর রাজ্যের মানুষকে 100 দিনের প্রকল্পে একটি টাকাও দেয়নি আপনার সরকার ৷ রাজ্যের মানুষ সব দেখছেন । আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এর জবাব আপনাদের দেবে মানুষ ।’’
শুক্রবার একইভাবে নারী নির্যাতন থেকে শুরু করে দুর্নীতি প্রশ্নে তৃণমূলকে কড়া আক্রমণ করেছিলেন । তখনও তার পালটা জবাব দিয়েছিল তৃণমূল । আজও পালটা জবাব দিতে এতটুকু দেরি করল না রাজ্যের শাসক দল । সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুললেন শশী পাঁজা ।
একা শশী পাঁজা নন, এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন । তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় এসে দুর্নীতির কথা বলছেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী । এই মুহূর্তে দেশের সবথেকে বড় দুর্নীতি হল মোদী-আদানি স্ক্যাম । আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিমাণ হল 120 বিলিয়ন ডলার । নরেন্দ্র মোদির বন্ধু নীরব মোদি, ললিত মোদি, মেহুল চোকসিরা হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে দেশ ছেড়েছেন ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এখানেই শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রী আজ যাঁর সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করছেন, সেই লোডশেডিংয়ে জেতা বিরোধী দলনেতাকে (শুভেন্দু অধিকারী) গোটা পৃথিবীর মানুষ হাত পেতে টাকা নিতে দেখেছে । সিবিআইয়ের এফআইআর-এ তাঁর নাম আছে । তাঁর বিরুদ্ধে কুড়িটা অভিযোগ আছে। প্রধানমন্ত্রীর কি হিম্মত আছে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু বলার ?’’ হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নামও তুলেছেন শান্তনু ৷ অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কি প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নিতে পারবেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের এই সাংসদ ৷ তিনি বলেন, ‘‘আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে থাকা ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা নরেন্দ্র মোদির মুখে অন্তত দুর্নীতির কথা মানায় না ৷’’
আরও পড়ুন: