বস্তার, 30 জানুয়ারি: ছত্তীশগড়ে মাওবাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হলেন তিন সেনা জওয়ান ৷ মঙ্গলবার বিজাপুর ও সুকমা সীমান্তের তেকালগুড়েমে তীব্র গুলিবিনিময় হয় দু'পক্ষের মধ্যে ৷ এনকাউন্টারে 14 জন জওয়ান আহত হয়েছেন বলে খবর। তাঁদের এয়ারলিফট করে রায়পুরে পাঠানো হয়েছে । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সকলেই সংকটমুক্ত ৷
বস্তারের আইজি পি সুন্দররাজ এনকাউন্টারের খবরটি নিশ্চিত করেছেন । তিনি জানান, এনকাউন্টারে 10 জনেরও বেশি আহত হয়েছেন ৷ তাঁদের অবস্থা গুরুতর ৷ তাঁদের উন্নততর চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এনকাউন্টারে কতজন মাওবাদী নিহত বা আহত হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় ৷
কোথায় এনকাউন্টার: যে জায়গায় এনকাউন্টারটি হয়েছে, তা হল জোনাগুড়া এবং আলিগুড়ার মধ্যবর্তী এলাকা । প্রতিদিনের মতো তেকালগুড়েম ক্যাম্প থেকে তল্লাশি অভিযানে বেরিয়েছিলেন জওয়ানরা । জোনাগুড়া এবং আলিগুড়ার মাঝখানে মাওবাদীরা লুকিয়ে ছিল বলে খবর ৷ তল্লাশি চলাকালীন সেখানে জওয়ানরা পৌঁছলে তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে মাওবাদীরা ৷ পালটা গুলি চালান জওয়ানরাও ৷ বস্তারের আইজি পি সুন্দররাজ বলেন, যে এলাকায় এনকাউন্টার হয়েছে সেটি একটি ঘন জঙ্গল । 2021 সালে এই একই এলাকায় মাওবাদীদের অতর্কিত হামলায় শহিদ হয়েছিলেন 23 জন সেনা জওয়ান ৷
সেনা ক্যাম্পে ভয় বাড়ছিল মাওবাদীদের: মাওবাদীদের মনোবল ভাঙতে এবং তাদের আন্দোলন বন্ধ করতে তেকালগুড়েমে সৈন্যদের একটি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছিল । সৈন্যদের ক্যাম্প তৈরি হওয়ার পর থেকেই অবাধ বিচরণে সমস্যায় পড়ে মাওবাদীরা ৷ বস্তারের আইজির মতে, মাওবাদীদের মোকাবিলার জন্য একটি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছিল এবং সৈন্যরা তা থেকে উপকৃত হচ্ছিল । ক্যাম্প তৈরির পর থেকেই মাওবাদীরা ভয়ে ছিল । ক্যাম্প তৈরির পর, সৈন্যরা মাও অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত জোনাগুড়া এবং আলিগুড়া এলাকায় অভিযান শুরু করে ৷
মঙ্গলবারও এসটিএফ এবং ডিআরজি কর্মীরা নিয়মিত অনুসন্ধানে বেরিয়েছিলেন । তল্লাশি চালানোর সময় সেনা জওয়ানদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় মাওবাদীরা । যোগ্য জবাব দেয় বাহিনী । তবে অতর্কিতে হামলা চালানোয় শহিদ হন তিন জওয়ান ৷ 10 জনেরও বেশি জওয়ান আহত হয়েছেন । আহতদের সঙ্গে সঙ্গে হেলিকপ্টারে করে রায়পুরে নিয়ে যাওয়া হয় । সেনাদের গুলিতে কতজন নকশাল নিহত হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি ।
2021 সালেও তেকালগুড়েমে মাও হামলা: 2021 সালের এপ্রিল মাসেও তেকালগুড়েমে মাওবাদীদের অতর্কিত হামলায় 23 জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন । সেই সময়ে মাওবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে জোনাগুড়া ও আলিগুড়া এলাকায় তল্লাশি চালায় বাহিনী । পুলিশের মতে, এনকাউন্টারে 23 জন জওয়ান শহিদ হন এবং মাওবাদীরা বাহিনীর অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় । সেই সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং সম্ভাব্য সবরকম সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে সিআরপিএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল নিজেই তদন্তের জন্য ছত্তিশগড়ে পৌঁছন ।
আরও পড়ুন: