হায়দরাবাদ: মনে করুন আপনি কোন ভিড় বাসে উঠেছেন, আপনার পাশের দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির থেকে ঘামের বিচ্ছিরি দুর্গন্ধ ছাড়ছে ৷ আপনি কী করবেন ? নাক চাপা দেবেন ? একদম দেবেন না ৷ ধরুন, কোনও একটা ভিড়ঠাসা জায়গায় আপনি রয়েছেন ৷ আপনার মতোই পাশের জন ঘামছেন দরদর করে ! কপাল থেকে মাথা বেয়ে বেয়ে চলেছে ঘাম ৷ সেই ঘেমো গন্ধে আপনার মনে হচ্ছে, এই বুঝি দমটা বেরিয়ে গেল ! না, তা হলেও আপনি নাকে চাপা দেবেন না ৷ ভাবছেন এমন যে বলে বা করে তার আসলে মানসিক সমস্যা আছে ৷ যদি ভেবে থাকেন, তাহলে ভুল ভাবছেন ৷ কারণ যে কোনও মানুষের গায়ে ঘামের গন্ধ, মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে ৷ চাঞ্চল্যকর এমনই তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণায় ৷
ইউরোপিয়ান সাইক্রিয়াটিক অ্যাসোসিয়েশন (European Psychiatric Association)-এর গবেষকরা সম্প্রতি এমনই এক তথ্য সামনে এনেছেন ৷ তারা বলছেন, আন্ডারআর্মের ঘাম থেকে উদ্ভূত শরীরের গন্ধ অ্যানজাইটি বা উদ্বেগ কমিয়ে দেয় ৷ চিকিৎসকদের পরিভাষায় যাকে বলে 'কেমো-সিগন্যাল'৷ স্টকহোমের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের প্রধান গবেষক এলিসা ভিগনা (Researcher Elisa Vigna of the Karolinska Institute in Stockholm) জানান, "দেখা গিয়েছে, মানুষের উদ্বেগ কমাতে এই কেমো-সংকেত বা থেরাপি, মাইন্ডফুলনেস থেরাপির চেয়ে ভাল ফলাফল দেয় ৷"
আরও পড়ুন: এ সবই পাইলসের প্রাথমিক লক্ষণ, অবহেলা না-করে চিকিৎসা করান
তিনি বলেন, "সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গবেষণায় জড়িত স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে ঘামের নমুনা সংগ্রহ করে তা মানসিক রোগীদের কাছে কেমো-সংকেতের মাধ্যমে প্রকাশ করলে তাদের মধ্যে উদ্বেগভাব প্রকাশ অনেকটা কমে গিয়েছে ৷ 15 থেকে 35 বছরের মধ্যে প্রায় 48 জন স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে গ্রুপ আকারে এই গবেষণা চালানো হয়েছিল ৷"
সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, প্রতিটি গ্রুপ আলাদা আলাদা গন্ধের সংস্পর্শে এসেছিল৷ মাইন্ডফুলনেস থেরাপির থেকে যে গ্রুপের মহিলারা ঘামের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের মধ্যে ফলাফল বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷ এই ধরনের থেরাপি যিনি প্রথমবার নিয়েছেন তার ক্ষেত্রে অ্যানজাইটি স্কোরস ( anxiety scores) 39 শতাংশ কমে গিয়েছে ৷ অন্যদিকে যাঁরা মাইন্ডফুলনেস থেরাপি নিয়েছেন তাঁদের অ্যানজাইটি স্কোরস কমেছে মাত্র 17 শতাংশ ৷
